জাতীয়

বিএনপির কিছু মন্ত্রী প্রয়োজনের তুলনায় বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছে

বিএনপির সময় কোনো কোনো প্রভাবশালী মন্ত্রী তার নিজের এলাকায় প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছেন জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি বলেছেন, এসব এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মান যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

Advertisement

রোববার জাতীয় সংসদে নিজ মন্ত্রণালয়ের দাবির বিপরীতে ছাঁটাই প্রস্তাবের ওপর বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।

এর আগে বিরোধী দল জাতীয় পার্টি ও বিএনপির ১০ জন সংসদ সদস্য মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের বরাদ্দের বিরুদ্ধে ছাঁটাই প্রস্তাব দেন।

ডা. দীপু মনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু ও বঙ্গবন্ধুর কন্যার সরকার প্রাথমিক শিক্ষাকে জাতীয়করণ করেছে। আর কেউ এটা করেনি। বঙ্গবন্ধুর কন্যার সরকার এমপিওভুক্তি যেভাবে করেছেন সেইভাবে আর কোনোদিন হয়নি।’

Advertisement

ছাঁটাই প্রস্তাব দেয়া বিএনপি ও জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্যদের উদ্দেশে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘যারা ছাঁটাই প্রস্তাব উত্থাপন করেছেন তাদের দলগুলো দীর্ঘদিন এদেশে ক্ষমতায় ছিল। আমরা ক্ষমতায় থাকতে তাদের ক্ষতার অপব্যবহার দেখেছি। তখনকার শিক্ষাখাতে বরাদ্দ, শিক্ষার মান, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মান সম্পর্কেও আমরা অবগত আছি।’

বিএনপির সরকারের আমলের এমপিওভুক্তির প্রসঙ্গ টেনে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘নতুন এমপিওভুক্তির জন্য তালিকা যখন দেখছি, দেখতে পাচ্ছি কোথাও কোথাও বৈষম্য হচ্ছে। কয়েকটি এলাকায় দেখেছি যতগুলো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থাকার প্রাপ্যতা রয়েছে তার থেকে বেশি সংখ্যক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। পাশাপাশি সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং তার সবই এমপিওভুক্ত।’

তিনি বলেন, ‘সেই এলাকাগুলো দেখলে এবং কখন এমপিও হয়েছে তা দেখলে দেখা যাবে বিএনপি জামায়াতের সময়ে এগুলো এমপিওভুক্ত। কোনো কোনো প্রভাবশালী মন্ত্রী তার নিজের এলাকায় প্রয়োজনের চেয়ে অনেক বেশি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান করেছেন। মান যাচাই না করে এগুলো নিয়মবহির্ভূতভাবে এমপিওভুক্ত করা হয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘কোথাও কোথাও ছাত্র নেই, শিক্ষক নেই-কিছুই নেই। কাজেই আমরা এখন সারাদেশে অতীতে যত এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠান হয়েছে, এসব এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানের মান যাচাই করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।’

Advertisement

বিএনপির সাংসদ হারুনুর রশীদ প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতে সরকারি-বিরোধী দলের সংসদ সদস্যদের নিয়ে একটি শিক্ষা উন্নয়ন কমিটি গঠনের দাবি জানান।

জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য পীর ফজলুর রহমান লন্ডনভিত্তিক একটি সাপ্তাহিক ম্যাগাজিনের জরিপ তুলে ধরে বলেন, ‘এশিয়ার শ্রেষ্ঠ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর তালিকায় ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলংকা, ফিলিপাইনসহ কয়েকটি দেশ থাকলেও আমাদের দেশের কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম নেই।’

শিক্ষকদের নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন কাজী ফিরোজ রশীদ। তিনি বলেন, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ভবন হচ্ছে কিন্তু একটি সমস্যা আছে। সেটা হলো শিক্ষকদের নৈতিক শিক্ষার অভাব। এই নৈতিক শিক্ষার অভাবে ভিকারুননেসা স্কুলে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেল, নারায়ণগঞ্জে দুর্ঘটনা, নুসরাতের মাদরাসা দুর্ঘটনা, এই নৈতিক শিক্ষার জায়গা দুর্বল আছে। সরকার এত টাকা দিচ্ছে, শিক্ষকদের বেতন বাড়াচ্ছে, এমপিওভুক্তি চাইলে দেয়া হচ্ছে কিন্তু শিক্ষার মান বাড়েনি। শিক্ষকরা দলীয় রাজনীতিতে জড়িত হয়ে পড়ছেন।’

তিনি বলেন, ‘যখন (ক্ষমতায়) বিএনপি আসবে তখন তাদের একটি দল, আওয়ামী লীগ আসলে একটা দল দলীয় রাজনীতির মহা উৎসব চালায়। কোনো লেখাপড়ার ধার ধারে না, কোনোটাতে রিসার্চ নাই, বইপত্র লেখা নাই, পড়ানোর ধার ধারে না, কিন্তু ওখানে বসে থাকবেন। তাদের কিছু বলা যাবে না। শিক্ষক ও ডাক্তারদের রাজনীতির বাইরে রাখতে হবে। রাজনীতির বাইরে থাকলে কোনো সমস্যা থাকবে না। সারাদিন রাজনীতির চর্চা করে। রাজনীতি করা ভালো কিন্তু ক্লাসটা যদি নেন তাহলে এই অভিযোগ থাকে না।’

এইউএ/এসআর/জেআইএম