ঢাকা-১৭ থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের এমপি চিত্রনায়ক আকবর হোসেন পাঠান ফারুক বলেছেন, বঙ্গবন্ধু হত্যার পর এদেশে হত্যা, খুন কীভাবে বেড়েছিল তা কল্পনাও করা যায় না। হত্যা, গুম, খুন, ক্যু এর পর ক্যু। আর সেটা ছিল মেজর জিয়ার আমল।
Advertisement
তিনি বলেন, জিয়ার আমলে মাটিতে পা দিলে মনে হতো মাটিতে রক্ত আছে। ক্ষুধার্ত মানুষের হাহাকার চিৎকার বাঁচতে চাই, বাঁচতে দাও- ঠিক তখনই আমাদের সাহসী নেত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা সুখ শান্তি বিসর্জন দিয়ে রক্তাক্ত বাংলার মাটিতে পা রাখেন দেশের ক্ষুধার্ত মানুষের জন্য। অসহায় অত্যাচারিত মানুষকে বাঁচাবার জন্য।
শনিবার জাতীয় সংসদে ২০১৯-২০২০ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটের উপর সাধারণ আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তিনি।
এককালের জনপ্রিয় এই নায়ক বলেন, সত্তরের নির্বাচনে বঙ্গবন্ধু কালিগঞ্জ গিয়েছিলেন। কালিগঞ্জ আমার বাপ দাদার ভিটে। বঙ্গবন্ধু যেখানে দাঁড়িয়েছিলেন সে জায়গাটি আমার বাপ-দাদার ভিটে। বাবা ওই জায়গাটি বঙ্গবন্ধুকে উপহার দেন। বঙ্গবন্ধু মাইক হাতে নিয়ে নৌকায় ভোট চান। তিনি বলেন, মুরুব্বি আমাকে যে জায়গাটি দিলেন, আমার স্মৃতিচিহ্ন হিসেবে এই জায়গাটির নাম দিলাম বঙ্গবন্ধু বাজার। এই বাজার আমার জীবনের প্রথম উপহার। যদি কখনো কিছু হতে পারি বাজারটি আমি বাজারের মতো সাজিয়ে দেব।
Advertisement
'কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে হয়- ৭৫ এরপর কেউ এ বাজারের দিকে ঘুরেও দেখেনি। আমি অর্থমন্ত্রীকে বলতে চাই বঙ্গবন্ধুর এই স্মৃতি ধরে রাখার জন্যে নিজস্ব আয় থেকে বরাদ্দ দেওয়ার।' বলেন ফারুক।
তিনি বলন, বঙ্গবন্ধুর হাতে গড়া চলচ্চিত্র কোথায় যেন হারিয়ে যাচ্ছে। এটার দিকে একটু খেয়াল দেওয়া উচিত। সংস্কৃতির অবস্থা ভালো নয়। এটা কে দেখতে হবে। বাজেটে গার্মেন্টস এর ক্ষেত্রে পুরোপুরি সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এটা সাকসেস তখনই হবে যখন এক ইঞ্চি কাপড়ও বিদেশ থেকে আনা হবে না। এ দেশেই তৈরি হবে সব কাপড়। তার ব্যবস্থা আমাদের দেশে আছে। এর সাথে কম্পোজিট বিষয়টিও যুক্ত করতে হবে।
ঋণ খেলাপিদের পক্ষ নিয়ে তিনি বলেন, আমাদের সাবেক অর্থমন্ত্রী আবদুল মুহিত সাহেব বলেছিলেন একজন যখন ব্যাংকে যান, ব্যাংকাররা শুরুতেই ভাবেন কী করে তাকে ঋণখেলাপি বানানো যায়। অনেকে সারা জীবনের কষ্টার্জিত পয়সা দিয়ে ব্যাংকে যায় ব্যবসা করতে। ঋণ খেলাপি হওয়ার জন্য নয়।
তিনি বলেন, এই বাজেটের মধ্যে কোথায় যেন বঙ্গবন্ধুকে খুঁজে পাই। বঙ্গবন্ধু একজন অর্থনীতিবিদ ছিলেন। তিনি অর্থনীতি বুঝতেন। তিনি বুঝতেন না এমন কোনো সাবজেক্ট নেই।
Advertisement
তিনি আরও বলেন, আমাদের সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর স্নেহের হাতের ছোঁয়া আমার মাথায় পেয়েছি বলেই আজকে আমি এই সংসদে দাঁড়িয়ে কথা বলতে পারছি। সম্মানিত প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমি ঋণী। এই ঋণ কোনদিন শোধ করতে পারব না।
তিনি বলেন, আমি যে কথাটি বলব বিশ্বাসের সাথে তা অনুভব করি। আমার মনে হয় বঙ্গবন্ধু এই মহান সংসদে আসেন। আমাদের তিনি দেখেন। আমাদের কথা শোনেন। কখনো তিনি অবাক হয়ে যান। কখনো তিনি হাসেন। আমাদের মাথার উপর হাত রেখে তিনি বলেন- এটা তোর ভুল হচ্ছে, শুধরে নে। আমি শুনতে পাই বঙ্গবন্ধু বলছেন- ওরে, ওরা আমাকে হত্যা করেছে, মারতে পারেনি। আমি মরিনি। আমি বেঁচে আছি। আমি বেঁচে থাকবো তোদের হৃদয়ের মাঝে। তোরাই তো আমার সোনার ছেলে। তোরাই তো আমার সোনার মেয়ে। তোরাই তো এই দেশটাকে সোনার বাংলা বানাবি রে।
এইচএস/এসএইচএস/আরআইপি