দেশজুড়ে

প্রাথমিকের পরীক্ষা দিয়ে ফেরার পথে ট্রাক কেড়ে নিল কলেজছাত্রের হাত

রাজশাহী নগরীতে বেপরোয়া ট্রাকের ধাক্কায় ফিরোজ আহমেদ (২৪) নামে এক বাসযাত্রীর হাত বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে।

Advertisement

শুক্রবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে রাজশাহী-ঢাকা মহাসড়কের কাটাখালী পৌরসভার সামনে এ ঘটনা ঘটে।

আহত ফিরোজ রাজশাহী কলেজের সমাজকর্ম বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী। তিনি বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার নামোগ্রাম গ্রামের মাহফুজুর রহমানের ছেলে। প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা শেষে নিজ জেলা বগুড়া থেকে রাজশাহী ফিরছিলেন তিনি।

সন্ধ্যা ৭টার দিকে আহত ওই ছাত্রকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগে ভর্তির পর একদফা অস্ত্রোপচার করে রক্তক্ষরণ বন্ধ করা হলেও তার শারীরিক অবস্থা সংকটাপন্ন। বর্তমানে হাসপাতালের ৩১নং ওয়ার্ডে ফিরোজ আহমেদকে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে।

Advertisement

এদিকে ঘটনার আধাঘণ্টা পর ফিরোজ আহমেদের বিচ্ছিন্ন হওয়া হাত ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছে পুলিশ। নগরের কাটাখালী থানার ওসি নিবারচন্দ্র বর্মণ এই তথ্য জানিয়েছেন।

ওসি বলেন, বাসটিকে সিরোইল বাস টার্মিনাল থেকে আটক করা হলেও ট্রাকটি আটক করা যায়নি। ট্রাকটিকে শনাক্তে পুলিশ অভিযান শুরু করেছে। এ ব্যাপারে কাটাখালী থানায় আপাতত একটি সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে।

প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে ওসি জানান, মোহাম্মদ ট্রাভেলস নামে একটি বাসে বগুড়া থেকে রাজশাহী ফিরছিলেন ওই ছাত্র। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বাসটি নগরীর কাটাখালী পৌরসভার সামনে পৌঁছালে বানেশ্বরমুখী একটি দ্রুতগামী বালুবাহী ট্রাক বাসটির ডানদিকে সজোরে ধাক্কা দেয়।

এ সময় বাসযাত্রী ফিরোজের ডান হাত জানালার বাইরে ছিল। ট্রাকের ধাক্কায় মুহূর্তের মধ্যে ফিরোজ আহমেদের ডান হাত কনুই থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে মহাসড়কে ছিটকে পড়ে। বাস ও ট্রাক দ্রুত পালিয়ে গেলে বিচ্ছিন্ন হাতটি মহাসড়কে পড়ে থাকতে দেখেন এলাকাবাসী। খবর পেয়ে কাটাখালী থানা পুলিশ হাতটি উদ্ধার করে।

Advertisement

আক্রান্ত বাসটি দ্রুত নগরীর তালাইমারী পৌঁছালে অন্য যাত্রীরা প্রায় অচেতন ফিরোজ আহমেদকে উদ্ধার করে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যান। সেখানে ফিরোজ আহমেদের কাটা হাতের রক্তক্ষরণ বন্ধে জরুরি অস্ত্রোপচার করা হয়। পরে ৩১নং ওয়ার্ডে নিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। রাতেই তার জরুরি অপারেশন হয়েছে। তবে বিচ্ছিন্ন হাত জোড়া দেয়া যায়নি।

ফিরোজ আহমেদের শারীরিক পরিস্থিতি এখনও সংকটাপন্ন বলে জানিয়েছেন রাজশাহী কলেজের অধ্যক্ষ হাবিবুর রহমান। তিনি বলেন, ফিরোজের অপারেশন সম্পন্ন হয়েছে। রাতেই তাকে পোস্ট অপারেটিভ ওয়ার্ডে চিকিৎসকরা পর্যবেক্ষণে নেন। তবে প্রচুর রক্তক্ষরণের কারণে তাকে রক্ত দেয়া হচ্ছে। অন্তত সাত ব্যাগ রক্ত লাগবে বলে চিকিৎসক জানিয়েছেন।

ফেরদৌস সিদ্দিকী/এফএ/জেআইএম