আইন-আদালত

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের টিউশন ফির ওপর ভ্যাট কেন : হাইকোর্ট

বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর মূল্যসংযোজন কর (মূসক) আরোপ কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না- জানতে চেয়ে তিন দফা রুল দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট বেঞ্চ পর্যায়েক্রমে গত ৯ ও ২৪ আগস্ট রুল জারি করেন। বুধবার আবারো রুল জারি করেন আদালত।সর্বশেষ মঙ্গলবার এক রিট আবেদনের শুনানি করে হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও জে এন দেব চৌধুরীর সম্বন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এই আদেশ দেন। চার সপ্তাহের মধ্যে আইন, অর্থ, শিক্ষা সচিব, অভ্যন্তরীণ সম্পদক বিভাগ, এনবিআর ও ইউজিসির চেয়ারম্যানকে রুলের জবাব দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে।রুল জারি সংক্রান্ত তথ্য পরে জাগো নিউজকে এই তথ্য নিশ্চিত করেন রিটকারীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শফিকুর রহমান। শুনানিতে রিটকারীর পক্ষে ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী আইনজীবী একে এম সালাহউদ্দিন খান। তার সঙ্গে ছিলেন কোহিনূর হোসাইন খান, মোহাম্মদ শফিকুর রহমান ও আবদুস সামাদ কামাল। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ইশরাত জাহান।পরে আইনজীবী শফিকুর রহমান আরো বলেন, ‘ইস্ট ওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান খান, ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ইমরান আব্বাসী সরকারের কর আরোপের সিদ্ধান্তের প্রতি সংক্ষুব্ধ হয়ে গত ২ সেপ্টেম্বর রিট আবেদন করেন।’রিট আবেদনে বলা হয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর করারোপ করা হলেও পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর করারোপ করা হয়নি। এটা বৈষম্যমূলক। তিনি বলেন, ওই দুই শিক্ষার্থীর পক্ষে আইনজীবী মোহাম্মদ শফিকুর রহমান রিট করেন। রিটে মূল্য সংযোজন কর ১৯৯১ এবং অর্থ অধ্যাদেশ ২০০৭ এর চ্যালেঞ্জ করা হয়।এ আইনজীবী আরো বলেন, রিট আবেদনে বলা হয়, বেসিরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপর কর (ভ্যাট) আরোপ সংবিধানের ১৫, ১৭ ও ১৯ ধারার এর লঙ্ঘন। সরকার নিট মূল্য সংযোজন করের ৭ দশমিত ৫ শতাংশ শিক্ষার্থীদের ওপর চাপিয়ে দিয়েছে। যা সংবিধানের সাথে সাংঘর্ষিক।আদেশের পর সিনিয়র আইনজীবী এ কে এম সালাহউদ্দিন খান সাংবাদিকদের বলেন, সংবিধানে শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের নিশ্চিয়তা দেয়া হয়েছে। সরকারে তার দাযিত্ব নিয়েছে। সেই অনুযায়ী সরকার ছেলে-মেয়েদের পড়াশোনার ব্যবস্থা করতে পারছে না। সে জন্যই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। যাদের সামর্থ রয়েছে তারাই সেখানে পড়াশোনা করছেন। এর মধ্যে যদি টিউশন ফি এর উপর সাড়ে ৭ শতাংশ ভ্যাট দিতে হয় সেটি শিক্ষার্থীর জন্য মরার উপর খাড়ার ঘা।এমন কী অনেক শিক্ষার্থীর লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যেতে পারে।গত ৯ ও ২৪ আগস্ট হাইকোর্টের একই বেঞ্চ বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে শিক্ষার্থীদের টিউশন ফির ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট অবৈধ সংক্রান্ত আরো দুটি রুল জারি করেছিলেন।এর আগে সরকার চলতি অর্থবছরের বাজেটে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল এবং ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের শিক্ষার্থীদের টিউশন ফি’র ওপর সাড়ে ৭ শতাংশ হারে ভ্যাট আরোপ করে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড গত ৪ জুলাই এ মর্মে প্রজ্ঞাপন জারি করে।এরপর থেকেই এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা ওই ভ্যাট প্রত্যাহারের দাবিতে বিক্ষোভ-সমাবেশসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন।এফএইচ/এসএইচএস/বিএ

Advertisement