খেলাধুলা

মাশরাফি গ্রেটেস্ট ক্রিকেটার ও ক্যাপ্টেন, যত দিন চায় খেলবে : আকরাম

৫ জুলাই লর্ডসেই কি ক্রিকেটকে বিদায় জানাবেন? ক্রিকেট তীর্থেই ক্যারিয়ারের শেষ ম্যাচটি খেলবেন মাশরাফি বিন মর্তুজা? কেউ কেউ হয়ত এমনটাই ভাবছিলেন। লর্ডসের ব্যালকনিতে দাড়িয়েই কি গুড বাই বলবেন বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘বড় লাট’?

Advertisement

একসময় এমন খবরই চাওর হয়ে গিয়েছিল। তবে মাশরাফিই পরে আকার ইঙ্গিতে জানিয়েছেন, দেখা যাক। সময় আসলে জানানো হবে। বিশ্বকাপ খেলতে আসার আগে অনেক আড্ডায় না লিখার শর্তে তার অবসরের ঘোষণা নিয়ে কথা বলতে গিয়ে আকার ইঙ্গিতে বিশ্বকাপের সময় অবসর না নেবার আভাসই দিয়েছিলেন।

আর যুক্তরাজ্য আসার পরও বিভিন্ন প্র্যাকটিসের আগে পরে স্বদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে অনানুষ্ঠানিক আলাপে আকার ইঙ্গিতে বিশ্বকাপের পর আরও কিছু দিন খেলা চালিয়ে যাবার আভাস দিয়েছেন।

তার সহযোগী ক্রিকেটার, কোচিং স্টাফ, ম্যানেজার, প্রধান নির্বাচক এবং ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়াম্যান আকরাম খানসহ সবাই ধরেই নিয়েছেন, মাশরাফি বিশ্বকাপ শেষে দেশে ফিরে আরও কিছু দিন খেলে তারপর হয়ত অবসরের ঘোষণা দেবেন।

Advertisement

কাজেই ধরে নেয়া যায় যে, আর ঠিক এক সপ্তাহ পর ইংল্যান্ডের মাটিতে বাংলাদেশ অধিনায়কের বিদায়ের ঘোষণা আসছে না। তবে সন্দেহ নেই এটাই তার শেষ বিশ্বকাপ। কারণ এখন বয়স প্রায় ৩৬ (৩৫ বছর ২৬৬ দিন)। আর চার বছর পর বয়স দাড়াবে ৪০'এ। একজন পেস বোলারের জন্য ৪০ অনেক বয়স।

আর তার ওপর রয়েছে সাত সাতটি অপারেশনের ধাক্কা। এখনো প্রতি ম্যাচে হাটুর লিগামেন্টকে অটুট ও নিরাপদ রাখতে প্রচুর ব্যান্ডেজ পরে তারপর মাঠে নামেন। কাজেই বিশ্বকাপ এটাই শেষ। সামনে আর কতদিন জাতীয় দলের হয়ে ক্রিকেট খেলবেন? তা মাশরাফিই সবচেয়ে ভাল বলতে পারেন। কারণ টিম ম্যানেজমেন্ট, বোর্ড, নির্বাচক সবাই বিষয়টি মাশরাফির ওপর ছেড়ে দিয়েছেন।

জাতীয় দল পরিচালনা, পরিচর্যা ও তত্বাবধানের দায়িত্ব যাদের হাতে, সেই ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটি প্রধান আকরাম খান, প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদিন নান্নু আর ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন- তিনজনই জাগো নিউজকে নিশ্চিত করে জানিয়েছেন, অবসরের সিদ্ধান্তটা একান্তই মাশরাফির ওপর ছেড়ে দেয়া আছে। আর এ বিষয়ে মাশরাফি তাদের সাথে এখনো কোন কথা বলেনি। তারাও কেউ যেচে তাকে অবসরের কথা জিজ্ঞেস করতে নারাজ।

নান্নু আর সুজন বলেন, আমরা কি করে জিজ্ঞেস করি কবে কখন কোথায় অবসরের ঘোষণা দেবে? তবে নান্নু আর সুজন দুজনই স্বীকার করেন, বিশ্বকাপ শেষে সরে দাড়ানোর বিষয়ে এখনো তারা কিছুই জানেন না। মাশরাফি তাদের কিছু বলেননি। আভাস ইঙ্গিতও দেননি। সে নিজের সিদ্ধান্ত নিজেই নেবে। যখন মনে করবে এখন সরে দাঁড়াবো, তখনই সরে যাবে। বোর্ড, টিম ম্যানেজমেন্ট আর নির্বাচক কারোই তাতে কোন অবজেকশন নেই।

Advertisement

আজ বার্মিংহাম সময় দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই মাশরাফির অবসর ইস্যু নিয়ে জাগোনিউজের সঙ্গে মুঠোফোন আলাপে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির চেয়ারম্যান আকরাম খান পরিষ্কার জানিয়ে দিয়েছেন, ‘মাশরাফির বিষয়ে বোর্ডের অবস্থান ও বক্তব্য একদম পরিষ্কার। জাতীয় দল থেকে সরে দাড়ানোর বিষয়টি একান্তই তার নিজের। সে যখন মনে করবে, অবসর নেবে। বোর্ড এ ব্যাপারে মাশরাফির প্রতি সর্বোচ্চ শ্রদ্ধা দেখাবে।’

মাশরাফিকে বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অনেক বড় ক্রিকেটার আখ্যা দিয়ে আকরাম বলেন, ‘মাশরাফি বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসের গ্রেটেষ্ট ক্রিকেটার। আর আমাদের গ্রেটেষ্ট ক্যাপ্টেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটে তার অবদান অনেক। বিসিবি তথা আমরা তার অসামান্য অবদানের কথা সব সময় মনে রাখি। তার প্রতি বোর্ড শ্রদ্ধাশীল। কাজেই অবসর বা জাতীয় দল থেকে সরে দাড়ানোর বিষয়টি পুরোপুরি মাশরাফির ওপর ছেড়ে দেয়া আছে। মাশরাফি যখন যেদিন মনে করবে, সেদিনই অবসর নিতে পারবে। মাশরাফি যা মনে করে, সেটাই হবে। বোর্ডের কাজ হলো, তাকে সর্বোচ্চ সম্মান জানানো। আমরা তা করছি শেষমুহূর্ত পর্যন্ত করে যাব।’

আকরামের কথা শুনে মনে হচ্ছে দেশের মাটিতে কোন সিরিজে হয়ত ঘটা করে দেশবাসীর সামনেই অবসরের ঘোষণা দেবেন মাশরাফি। তবে সেটা কবে, কখন আর কার বিপক্ষে- তা বলা কঠিন।

এআরবি/এসএএস/এমকেএইচ