জামালপুরের মেলান্দহে নিজেই ধর্ষিত হয়ে প্রতিপক্ষকে ধর্ষণ মামলায় ফাঁসানোর ঘটনায় আইনজীবীর সহকারীসহ ২ জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুক্রবার সকালে পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার জনাকীর্ণ এক সংবাদ সম্মেলনে চাঞ্চল্যকর এ ঘটনার বর্ণনা দেন। সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার দেলোয়ার হোসেন বলেন, মেলান্দহ উপজেলার বংশী বেলতৈল গ্রামের গৃহবধূ গুলেনুর বেগমের সঙ্গে জমি নিয়ে চাচাতো ভাই নুরনবীর বিরোধ চলে আসছিল। তাদেরকে মামলা দিয়ে ফাঁসাতে ব্যর্থ হন তিনি। পরে জামালপুর জজ কোর্টের আইনজীবীর সহকারী (মহুরী) খোশনবী গৃহবধূকে মামলায় জিতিয়ে জমি পাইয়ে দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ মামলা দেয়ার পরমর্শ দেন। মহুরীর পরামর্শে, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ২৫ মে রাতে বেলতৈল দাখিল মাদরাসার পেছনে একটি ধান ক্ষেতে মহুরী খোশনবী নিজে উপস্থিত থেকে তারই লোক দিয়ে গৃহবধূকে ধর্ষণ করানো হয়। রাতেই ধর্ষিতাকে দুই কিলোমিটার দূরে কোলমালঞ্চ গ্রামে একটি বাড়িতে রেখে দেয় এবং পরদিন তাকে উদ্ধার দেখিয়ে জামালপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ধর্ষণের ঘটনাটি আলোচনায়রাখতে একজন নারী নেত্রীকে সঙ্গে নিয়ে পত্রিকায় সংবাদ প্রকাশ এবং মেলান্দহ থানায় চাচাতো ভাই নুরনবী ও ভগ্নিপতি ছাইরুল ইসলামকে আসামি করে গৃহবধূ গুলেনুর বেগম বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন। এসব করার জন্য মহুরী খোশনবী গৃহবধূর কাছ থেকে ২২ হাজার টাকা গ্রহণ করেন।
Advertisement
পুলিশি তদন্তে ধর্ষণের ঘটনাটি মিথ্যা বলে প্রতিয়মান হওয়ায় বাদী গুলেনুর বেগমকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে গৃহবধূ পুলিশ সুপারকে জানান, মহুরীর পরামর্শে তার লোকের সঙ্গে নিজ ইচ্ছায় ধর্ষিত হয়ে চাচাতো ভাইকে ফাঁসানোর জন্য এ মামলা দায়ের করেছেন। গৃহবধূ এ ঘটনা ফাঁস করেন এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ২২ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দেন। জবানবন্দি দেয়ার পর ঘটনার মূলনায়ক মহুরী খোশনবীকে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে শুক্রবার ভোরে নায়ারণগঞ্জ ফতুল্লা থানার জামতলী থেকে ধর্ষক ফজলকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চ্যলের সৃষ্টি হয়েছে।
আসমাউল আসিফ/এমএএস/এমকেএইচ
Advertisement