জাতীয়

বেসরকারি খাতেও বেতন বাড়ানোর চাপ!

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণা করেছে সরকার। নতুন বেতন কাঠামো পেয়ে খুশি সরকারি চাকরিজীবীরা। এদিকে অর্থনীতিবিদরা আশঙ্কা করছেন মূল্যস্ফীতির। এমন পরিস্থিতিতে আর্থিক টানাপোড়েন বাড়বে সীমিত আয়ের মানুষদের। বিশেষ করে বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরা পড়বেন মহাসংকটে।তাই গত দু`দিন বেসরকারি খাতের পেশাজীবীরাও আলোচনায় রাখছেন সরকারের বেতন কাঠামো। অনেককে আক্ষেপ প্রকাশ করতে দেখা গেছে। সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানো হলেও বেসরকারি কোম্পানিগুলো তাদের কর্মচারীদের বেতন বাড়ানোর কোনো ঘোষণা দেয়নি। কাজেই বেসরকারি চাকরিজীবীদের কষ্ট দেখার কেউ নেই।এদিকে, অফিস পাড়ায় নতুন বেতন কাঠামোর বিষয়টি নিয়ে চলছে মত-দ্বিমত। কেউ পক্ষে। কেউ আবার বিপক্ষে। তারা বলছেন, কয়েক দিন আগে সরকার গ্যাস ও বিদ্যুতের দাম বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে। এর মধ্যে বাড়িওয়ালারা ভাড়া বাড়িয়ে নোটিশ দিয়েছেন। ইতোমধ্যে নতুন বেতন কাঠামো ঘোষণার পর বাড়তে শুরু করেছে দ্রব্যমূল্য। এতে ক্রমেই বাড়ছে বেসরকারি খাতের পেশাজীবী আর সাধারণ মানুষের দুঃখ।সরকারি চাকরিজীবীদের বেতন বাড়ানোর ঘোষণায় দুশ্চিন্তা পড়েছেন শাহ আলম নামের এক বেসরকারি কর্মচারী। বুধবার বাসে রীতিমতো বিরক্ত প্রকাশ করছিলেন তিনি। বর্তমান বাস্তবতায় সংসার চালাতে এমনিতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে তাকে, উপরন্তু বাড়িভাড়ার বাড়তি চাপে হাবুডুবু খাচ্ছেন তিনি।সরকারি চাকরিজীবীদের পাশাপাশি বেতন বৃদ্ধির চাপ বাড়ছে বেসরকারি খাতেও। ঢাকার একটি বেসরকারি ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাগো নিউজকে বলেন, তার অফিসের একজন কর্মকর্তা মঙ্গলবার রুমে এসে বললেন, ‘স্যার, সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বেতন বাড়ছে। আমাদের জন্য কী করবেন? ওই কর্মকর্তা বর্তমানে সর্বসাকূল্যে বেতন পাচ্ছেন প্রায় ৪৫ হাজার টাকা। তার দাবি, বাজারের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে বেতন বাড়ানো হোক।অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, সরকারি খাতে বেতন বৃদ্ধি মূল্যস্ফীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। একটি পরিসংখ্যান বলছে, দেশে সরকারি চাকরিজীবী ১৫ শতাংশ। আর মোট কর্মজীবী জনসংখ্যার ৮৫ শতাংশ বেসরকারি খাতে কাজ করছেন। তবে অনেকেই বলছেন, এখন পর্যন্ত বেসরকারি খাতে বেতন কাঠামো সরকারের চেয়ে ভালো।সোমবার বেতন কাঠামো চূড়ান্ত করেছে সরকার। তবে বেতন পেতে আরো মাস দুয়েক অপেক্ষায় থাকতে হবে সরকারি চাকরিজীবীদের। ইতোমধ্যে বেতন-ভাতা বাড়ানোর দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। যদিও সরকার তাদের দাবি বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন।বেসরকারি বীমা কোম্পানিতে প্রত্যক্ষ-পরোক্ষভাবে প্রায় ২০ লাখ লোক জড়িত থাকলেও এ খাতের জন্য আলাদা কোনো বেতন কাঠামো নেই। তবে ২০০৫ সালে এ খাতের জন্য পাঁচ হাজার ২০০ টাকার ন্যূনতম একটি স্কেল বেঁধে দেয়া হয়েছিল। তাও ঠিকমতো অনুসরণ করা হচ্ছে না।সূত্র জানায়, রাষ্ট্রায়ত্ত ও বাংলাদেশ ব্যাংকের জন্য দীর্ঘদিন ধরে পৃথক বেতন কাঠামো নির্ধারণের দাবি উঠলেও এখন পর্যন্ত বেসরকারি ব্যাংকে চাকরিজীবীদের জন্য নির্দিষ্ট স্কেল নেই। প্রতিটি ব্যাংক তার নিজস্ব বোর্ডসভার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বেতন কাঠামো নির্ধারণ করে।এদিকে, সাংবাদিকদের বিভিন্ন সংগঠন ইতোমধ্যে নবম ওয়েজবোর্ডের দাবিতে বিবৃতি দিয়েছে।এসএ/এএইচ/বিএ

Advertisement