রোজার ঈদের পর রাজধানীর বাজারগুলোতে পেঁয়াজের দাম কিছুটা বাড়লেও এখন আবার কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে খুচরা বাজারে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। পেঁয়াজের দাম কমলেও অপরিবর্তিত রয়েছে সবজি এবং মাছ ও মাংসের দাম।
Advertisement
শুক্রবার রাজধানীর কারওয়ানবাজার, শান্তিনগর, সেগুনবাগিচা, রামপুরা, মালিবাগ হাজীপাড়া, খিলগাঁও অঞ্চলের বিভিন্ন বাজার ঘুরে ব্যবসায়ী ও ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।
কারওয়ানবাজারে গিয়ে দেখা যায়, ব্যবসায়ীরা এক পাল্লা (৫ কেজি) পেঁয়াজ বিক্রি করছেন ১৩৫ থেকে ১৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ১৫০ থেকে ১৫৫ টাকা। অর্থাৎ সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম পাল্লায় কমেছে ১৫ টাকা। এ হিসেবে কেজিতে পেঁয়াজের দাম পাইকারিতে কমেছে ৩ টাকা।
পাইকারি বাজারের মতো খুচরা বাজারেও সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কমেছে। গত সপ্তাহে যেসব বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি ৩৫ টাকা বিক্রি হয়, ওই বাজারে দেশি পেঁয়াজের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩০ টাকা। অর্থাৎ খুচরা বাজারে কেজিতে পেঁয়াজের দাম কমেছে ৫ টাকা।
Advertisement
আরও পড়ুন>> এক হাত বদলেই সবজির দাম দ্বিগুণ
পেঁয়াজের দাম কমার বিষয়ে কারওয়ানবাজারের ব্যবসায়ী রুবেল মিয়া বলেন, এবার পেঁয়াজের ফলন খুব ভালো হয়েছে। যে কারণে অন্যবারের তুলনায় পেঁয়াজের দাম বাড়েনি। তাছাড়া কোথাও কোথাও মজুদ করা পেঁয়াজ নষ্ট হয়ে যাওয়ার উপক্রম হচ্ছে, যে কারণে এসব পেঁয়াজ বাজারে ছেড়ে দেয়া হচ্ছে। ফলে বাজারে পেঁয়াজের কোনো ঘাটতি দেখা যাচ্ছে না। তাই দামও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে রয়েছে।
এ বাজারের আরেক ব্যবসায়ী মিলন বলেন, রোজার ঈদের পর পেঁয়াজের দাম কিছুটা বেড়েছিল। এতে আমাদের ধারণা ছিল সামনে পেঁয়াজের দাম আরও বাড়বে। কিন্তু দাম না বেড়ে এখন উল্টো দাম কমেছে। ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ গত সপ্তাহে যে দামে বিক্রি করেছি, এখন তার থেকে ১৫ টাকা কমে পাল্লা বিক্রি করছি।
এদিকে রামপুরা অঞ্চলের বিভিন্ন বাজারে দেখা যায়, ভালো মানের দেশি পেঁয়াজ ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছেন ৩০ টাকা কেজি, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩৫ টাকা। আর দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ২৫ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০ টাকা।
Advertisement
রামপুরার ব্যবসায়ী জামাল হোসেন বলেন, অপ্রত্যাশিতভাবে পেঁয়াজের দাম কমেছে। সপ্তাহের ব্যবধানে দেশি পেঁয়াজের দাম কেজিতে কমেছে ৫ টাকা। এখন পেঁয়াজের দাম কমবে এটা আমাদের ধারণা তো ছিল না। কিন্তু হঠাৎ করেই পাইকারিতে পেঁয়াজের দাম কমে গেছে। আমরাও কম দামে বিক্রি করতে পারছি।
আরও পড়ুন>> সিগারেটের দাম বাড়ায় খুশি নারীরা
বিভিন্ন কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, সপ্তাহের ব্যবধানে অধিকাংশ সবজির দাম অপরিবর্তিত রয়েছে। ঢেঁড়সের কেজি আগের মতোই বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা দরে। একই দামে বিক্রি হচ্ছে ঝিঙ্গা, উসি ও ধুন্দুল। পটল বিক্রি হচ্ছে ২০ থেকে ৩০ টাকা কেজি।
গত সপ্তাহের মতো করলা বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি। কাকরোল বিক্রি হচ্ছে ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি, বেগুন ৩৫ থেকে ৪০ টাকা কেজি, পেঁপে ৩০ থেকে ৪০ টাকা কেজি, বরবটি ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি, গাজর ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি এবং কচুর লতি ৪০ থেকে ৫০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। এ সবজিগুলোর দামও অপরিবর্তিত রয়েছে।
সবজির দামের বিষয়ে খিলগাঁওয়ের ব্যবসায়ী আলম মিয়া বলেন, গত সপ্তাহে কিছু সবজির দাম বাড়লেও, আজ নতুন করে কোনো সবজির দাম বাড়েনি। বেশিরভাগ সবজি আগের সপ্তাহের দামে বিক্রি হচ্ছে। তবে শুক্রবার হওয়ায় অন্যদিনের তুলনায় আজ সবজির দাম কিছুটা বেশি।
সবজির দাম অপরিবর্তিত থাকলেও কিছুটা দাম বেড়েছে গোল আলু। সপ্তাহের ব্যবধানে গোল আলুর দাম কেজিতে বেড়েছে ২ টাকা। গত সপ্তাহের যেসব বাজারে গোল আলু ১৮ টাকা কেজি বিক্রি হয়, এখন সেখানে ২০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে। আর যে বাজারে ২০ কেজি ছিল, সেখানে দাম বেড়ে হয়েছে ২২ থেকে ২৫ টাকা।
তবে সবজির পাশাপাশি দাম অপরিবর্তিত রয়েছে কাঁচামরিচ ও মুরগির। আগের মতোই কাঁচামরিচের পোয়া (২৫০ গ্রাম) বিক্রি হচ্ছে ১৫ থেকে ২০ টাকা। বয়লার মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৪০ থেকে ১৫০ টাকা কেজি। আর গরুর মাংস বাজারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৫২৫ থেকে ৫৫০ টাকা এবং খাসির মাংস বিক্রি হচ্ছে ৭৫০ থেকে ৮৫০ টাকা কেজি।
কয়েক মাস ধরে চড়া দামে বিক্রি হওয়া মাছের দাম এখনও বেশ চড়া। তেলাপিয়া মাছ আগের মতো বিক্রি হচ্ছে ১৬০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। পাঙাশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ১৫০ থেকে ১৮০ টাকা কেজি। রুই মাছ ২৮০ থেকে ৬০০ টাকা, পাবদা ৬০০ থেকে ৭০০ টাকা, টেংরা ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, শিং মাছ ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা এবং চিতল মাছ বিক্রি হচ্ছে ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজি।
এমএএস/এমএসএইচ/এমএস