কোনোরকমে জোড়াতালি দিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল উপজেলার তিতাস নদীর ওপর শাহবাজপুর সেতুটিতে যান চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়েছে। ঝুঁকিপূর্ণ এ সেতুর পাশে নতুন সেতুর নির্মাণ কাজ এখনও শেষ না হওয়ায় প্রতিদিন ঝুঁকি নিয়েই সেতু দিয়ে ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের হাজারো যানবাহন চলাচল করছে। ফলে অর্ধশত বছরের পুরনো জরাজীর্ণ এ সেতুটি যেকোনো মুহূর্তে ধসে পড়ে বড় ধরনের প্রাণহানীর শঙ্কা রয়েছে।
Advertisement
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ১৮ জুন ক্ষতিগ্রস্ত শাহবাজপুর সেতুর চতুর্থ স্প্যানের ফুটপাতসহ রেলিং ভেঙে পড়ে। এর ফলে সেতু দিয়ে ভারী ও মাঝারি আকারের সব যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগ। তবে সেতুর এক পাশ দিয়ে সীমিত আকারে হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রাখা হয়।
সড়ক ও জনপথ বিভাগের দেখিয়ে দেয়া বিকল্প সড়কগুলো তুলনামূলক সরু ও ভাঙাচোরা হওয়ায় দেখা দেয় নতুন বিপত্তি। বিকল্প সড়কে দু-একদিন চলাচলের পরই ঢাকা-সিলেট ও কুমিল্লা-সিলেট রুটে চলাচলকারী যাত্রীবাহী বাসগুলো চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়। এর ফলে সিলেট বিভাগের সঙ্গে সারাদেশের সড়ক পথের যোগাযোগ কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়া বিকল্প সড়ক ও ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর দুই পাশে দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আসা পণ্যবোঝাই ট্রাকগুলো আটকা পড়ে।
ওই সময় শাহবাজপুর থেকে সিলেটের দিকে প্রায় ১৩৭ কিলোমিটার অংশের বেশিরভাগ জায়গায় এবং শাহবাজপুর থেকে সরাইল-বিশ্বরোড পর্যন্ত ১০ কিলোমিটার অংশে মহাসড়কের ওপর অবস্থান নেয় শত শত পণ্যবোঝাই ট্রাক। দীর্ঘ সময় আটকা পড়ে থাকার কারণে ট্রাকভর্তি কাঁচামাল নষ্ট হয়ে যায়। সীমাহীন দুর্ভোগের শিকার হন ট্রাকচালকরা।
Advertisement
পরবর্তীতে মৌলভীবাজারে ট্রেন দুর্ঘটনার কারণে সিলেট বিভাগের সঙ্গে রেলপথ যোগাযোগ সাময়িক বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত সেতুর ওপর নতুন বেইলি সেতু স্থাপন কাজ শেষে তড়িঘড়ি করে ২৪ জুন সকালে সেতুটি খুলে দেয়া হয় যান চলাচলের জন্য। তবে এখনও আগের মতোই সেতু দিয়ে যানবাহন পারাপারের সময় সেতু কেঁপে ওঠে।
১৫ টনের বেশি ভারী যানবাহন চলাচলে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও সেতুতে ভারী যানবাহন চলাচল করছে অবলীলায়। এর ফলে যানবাহন চলাচাল স্বাভাবিক থাকলেও সেতুটি ধসে পড়ার শঙ্কা রয়েই গেছে।
বৃহস্পতিবার দুপুরে কয়েকজন ট্রাকচালকের সঙ্গে কথা হয় জাগো নিউজের এ প্রতিবেদকের। তারা জানান, সেতুটি যেকোনো সময় ধসে পড়তে পারে। এ সেতু দিয়ে অনিশ্চিত যাত্রা জেনেও বাধ্য হয়ে তারা সেতু পারাপার হচ্ছেন। তবে সড়ক ও জনপথ বিভাগ যদি আরও আগে নতুন সেতু নির্মাণ কাজ শুরু করত তাহলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যেত।
যদিও সড়ক ও জনপথ বিভাগ জানিয়েছে, সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে ওঠার পরপরই নতুন আরেকটি সেতু নির্মাণ কাজে হাত দেয়া হয়। নতুন সেতুটি জুলাই মাসের প্রথম দিকেই খুলে দেয়া হবে।
Advertisement
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শামীম আল মামুন বলেন, ৩ জুলাই থেকে সব যানবাহন যেন নতুন সেতু দিয়ে যেতে পারে সেজন্য আমরা কাজ করছি।
আজিজুল সঞ্চয়/এফএ/এমএস