জাতীয়

মাশরাফিকে নিয়ে স্ট্যাটাস দেয়া সেই চিকিৎসককে বদলি

জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক ও এমপি মাশরাফি বিন মর্তুজার বিরুদ্ধে ফেসবুকে অসম্মানজনক স্ট্যাটাস দেয়া চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিমকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে বদলি করা হয়েছে।

Advertisement

বুধবার (২৬ জুন) স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের আদেশে তাকে রাঙামাটি মেডিকেল কলেজে সংযুক্ত করে বদলির আদেশ দেয়া হয়। মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য-শিক্ষা ও পরিবার কল্যাণ বিভাগের পার-১ অধিশাখার উপ-সচিব মোহাম্মদ মোহসীন উদ্দিনের স্বাক্ষরিত আদেশটি অবিলম্বে কার্যকর হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের হেমাটো অনকোলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিম মাশরাফির হাসপাতাল তদারকির দিকে ইঙ্গিত দিয়ে তার টাইমলাইনে লেখেন, ‘বাংলাদেশের ডাক্তারদের বোল্ট (বোল্ড) করতেই বড়ই আনন্দ। ম্যাশ চিকিৎসার জন্য অনেকবার ডাক্তারদের ছুরি কাঁচির নিচে গেছেন। তাদের অনেক তোয়াজ করতে হইছে। সেই ডাক্তারের বংশবদ পাইছি এবার।’

যদিও নিজের দেয়া স্ট্যাটাস নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে ডা. একেএম রেজাউল করিম তার নিজের ফেসবুক অ্যাকাউন্ট ‘ডিঅ্যাক্টিভ’ করে দেন।

Advertisement

উল্লেখ্য, একই দিন ২৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম বিএমএ শাখার সাধারণ সম্পাদক ডা. ফয়সাল ইকবাল মাশরাফির হাসপাতাল তদারকি চ্যালেঞ্জ করে চিকিৎসকদের কর্মবিরতির হুমকি দিয়ে স্ট্যাটাস দেন ফেসবুকে। পরে ব্যাপক সমালোচনার মুখে তিনিও সেটা মুছে দিতে বাধ্য হন। যদিও ততক্ষণে অনেকে ওই স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট পোস্ট করে ফয়সাল ইকবালের কড়া সমালোচনায় মেতে ওঠেন।

এ ঘটনায় ৬ মে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ থেকে অধ্যাপক ডা. একেএম রেজাউল করিমের বিরুদ্ধে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ব্যবস্থা নিতে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। অভিযুক্ত চিকিৎসককে নোটিশ প্রাপ্তির তিন কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশ দেয়া হয়।

স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব শামীমা নাসরীন স্বাক্ষরিত ওই প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়, ফেসবুক টাইমলাইনে সংসদ সদস্য মাশরাফি বিন মর্তুজা সম্পর্কে অশালীন এবং অযাচিত ভাষা ব্যবহার করে পাবলিক পোস্ট দেয়া হয়েছে। একজন সরকারি কর্মকর্তা হিসেবে এ আচরণ অনুচিত ও অনভিপ্রেত উল্লেখ করে প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, ‘এসব আচরণ সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার পরিপন্থী যা সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) মোতাবেক ‘অসদাচরণ হিসেবে গণ্য।’

‘তাই সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮ এর ৩ (খ) মোতাবেক অসদাচরণের দায়ে অভিযুক্ত করে কেন বিধিমালার অধীনে যথোপযুক্ত দণ্ড প্রদান করা হবে না তা এ নোটিশ প্রাপ্তির ৩ (তিন) কর্মদিবসের মধ্যে কারণ দর্শানোর জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।’

Advertisement

এবার শোকজের পর পরবর্তী ব্যবস্থা হিসেবে ডা. একেএম রেজাউল করিমকে বদলি করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের ওয়ানডে অধিনায়ক ও নড়াইল-২ আসনের এমপি গত ২৫ এপ্রিল বিকেলে আকস্মিক নড়াইল সদর হাসপাতাল পরিদর্শনে যান। এ সময় হাজিরা খাতায় তিন চিকিৎসকের স্বাক্ষর না দেখে হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. আব্দুস শাকুর এবং পরে অনুপস্থিত সার্জারি বিশেষজ্ঞ ডা. আকরাম হোসেনের সঙ্গে মোবাইলে কথা বলেন।

কথা বলার একপর্যায়ে সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আকরাম হোসেনকে উদ্দেশ্য করে মাশরাফি মোবাইলে তাকে বলেন, ‘ফাইজালামি পাইছেন? এখন বলেন আমি আপনারে কী করবো?

এমআরএম/এমএস