অর্থনীতি

খেলাপিদের আইনি সহায়তা বন্ধের পরামর্শ

দেশের ব্যাংক খাতে ধস অব্যাহত রয়েছে। ধারাবাহিক বাড়তে থাকা খেলাপি ঋণ আর্থিক স্থিতিশীলতা এবং সার্বিক অর্থনীতিতে ঝুঁকি বাড়াচ্ছে বলে মত দিয়েছেন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ)।

Advertisement

বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকে ১০ দিনব্যাপী মিশন শেষে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলে বৈশ্বিক এ দাতা সংস্থা। এশিয়া ও প্যাসিফিক বিভাগের বিভাগীয় প্রধান দাইসাকু কিহারার নেতৃত্বে আইএমএফ’র আর্টিক্যাল-৪ এর ছয় সদস্যবিশিষ্ট প্রতিনিধিদল ১৬ থেকে ২৭ জুন পর্যন্ত ঢাকা সফর করেন।

আরও পড়ুন >> দেশে ঋণখেলাপি এক লাখ ৭০ হাজার ৩৯০ জনসফরকালে তারা কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর, অর্থ সচিব, জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের চেয়ারম্যান ও একাধিক সংসদ সদস্যের সঙ্গে বৈঠক করেন।

সংবাদ সম্মেলনে দাইসাকু কিহারা বলেন, বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে শক্তিশালী গতি রয়েছে। চলতি বছর শেষে জিডিপি প্রবৃদ্ধি ৮ শতাংশের কাছাকাছি পৌঁছবে। তবে খাদ্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে মূল্যস্ফীতি সামন্য বাড়ছে। পোশাক খাতের ওপর ভিত্তি করে রপ্তানি আয় বৃদ্ধি পাওয়ায় চলতি হিসাবের ভারসাম্য ঘাটতি কমছে। রেমিট্যান্স প্রবাহও বাড়ছে। যদিও এ সময়ে মূলধনী যন্ত্রপাতি ও কাঁচামাল আমদানি বাড়ছে।

Advertisement

আগামী অর্থবছরে জিডিপি প্রবৃদ্ধি সাড়ে ৭ শতাংশ এবং মূল্যস্ফীতি কেন্দ্রীয় ব্যাংকের লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে থাকবে। তবে বৈশ্বিক কারণে মূল্যস্ফীতি বাড়ার যে ঝুঁকি রয়েছে সে বিষয়ে মুদ্রানীতিতে সতর্ক দৃষ্টি রাখতে হবে।

আরও পড়ুন >> বিশেষ সুবিধা পাচ্ছেন ঋণখেলাপিরাতিনি বলেন, উচ্চ সুদের সঞ্চয়পত্র বাজেটে সুদ-ব্যয়ের চাপ সৃষ্টি করছে। বাজেটে অর্থায়নের জন্য কোনো উৎসের ওপর নির্ভর না করে রাজস্ব আয় বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে। ভবিষ্যতে রোহিঙ্গাদের জন্য বৈদেশিক সাহায্য কমে গেলে বাজেটে চাপ পড়বে। এজন্য দাতাদের সাহায্য অব্যাহত রাখতে হবে।

আইএমএফ প্রতিনিধিদলের প্রধান আরও বলেন, অর্থনীতি এগোলেও ব্যাংক খাতে ধস নামছে। এ খাতে খেলাপি ঋণ বেড়েই চলেছে। খেলাপি ঋণ কমাতে টাইম-বাউন্ড কর্মসূচি হাতে নিতে হবে। ব্যাংকিং সুপারভিশন বাড়াতে হবে, খেলাপিদের আইনি সহায়তা বন্ধ করতে হবে।

খেলাপিদের পুনঃতফসিল ও পুনর্গঠন নীতিমালা আরও কঠোর করা দরকার। সর্বক্ষেত্রে সুশাসন নিশ্চিত করতে হবে। সরকারি ব্যাংকসহ সব ব্যাংক সংস্কারের মাধ্যমে তাদের দক্ষতা বাড়াতে হবে।

Advertisement

আরও পড়ুন >> খেলাপি ঋণ এক টাকাও বাড়বে না : অর্থমন্ত্রীদাইসাকু কিহারা বলেন, নতুন ভ্যাট আইন কার্যকরের সিদ্ধান্ত রাজস্ব আয় বৃদ্ধির জন্য ইতিবাচক। কিন্তু মাল্টিপল রেট কার্যকর করা অনেক চ্যালেঞ্জের। এতে রাজস্ব আহরণে প্রভাব ফেলবে। রাজস্ব নীতিতে সংস্কার করতে হবে। এনবিআরের প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো আধুনিকায়ন করতে হবে। অন্যদিকে ব্যয়ের ক্ষেত্রেও সরকারকে সতর্ক থাকতে হবে।

সরকারি বিনিয়োগে অপচয় রোধে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে জাতীয় পরিকল্পনার আলোকে বিনিয়োগ বাড়ানোর পরামর্শ দেন সংস্থার প্রধান।

এসআই/এমএআর/বিএ