আইন-আদালত

আবরারের মৃত্যু : চার্জশিট গ্রহণের আদেশ ২৫ জুলাই

বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হওয়ার ঘটনায় করা হত্যা মামলায় চার্জশিট গ্রহণের বিষয়ে আদেশের জন্য ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেছেন আদালত।

Advertisement

বৃহস্পতিবার মামলার চার্জশিট গ্রহণের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু মামলার মূল নথি মহানগর আদালতে সিআরমিসে থাকায় ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী চার্জশিট গ্রহণের বিষয়ে আদেশের জন্য আগামী ২৫ জুলাই দিন ধার্য করেন।

আরও পড়ুন>> আবরারের মৃত্যু : নতুন কিছু খুঁজে পেল না পুলিশ

গুলশান থানার আদালতের সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক রকিবুল হাসান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এর আগে সোমবার (২৪ জুন) মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, শিক্ষার্থী আবরার নিহতের মামলায় আদালতের নির্দেশে অধিকতর তদন্তের অনুমতি পাওয়ার পর তদন্ত শুরু করি। অনুমতি পাওয়ার পর ঘটনার সঙ্গে জড়িত কোনো নতুন আসামি খুঁজে পাওয়া যায়নি। এমনকি নতুন কোনো সাক্ষ্য-প্রমাণও পাইনি। তাই আদালতে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিবেদন দাখিল করেছি।

Advertisement

প্রতিবেদনে তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, ৩০ এপ্রিল অধিকতর তদন্তের অনুমতি পাই। তবে নতুন কোনো আসামি ও সাক্ষী না পাওয়ার কারণে সম্পূরক অভিযোগপত্র দাখিল করা যায়নি বলে জানান তিনি। এ কারণে মামলার পরবর্তী কার্যক্রম গ্রহণের আবেদন করা হয়েছে।

আরও পড়ুন>> আবরারের রক্তে শান্তি ফিরুক সড়কে

৩০ এপ্রিল ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে অধিকতর তদন্তের জন্য আবেদন করেন শরিফুল ইসলাম। ঢাকা মহানগর হাকিম দেবদাস চন্দ্র অধিকারী ডিবি পুলিশের আবেদনটি মঞ্জুর করেন।

আবেদনে ডিবি পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হওয়া ও পথচারী সিমথিয়া সুলতানা মুক্তা আহত হওয়ার ঘটনায় সু-প্রভাত বাসের মালিক-চালকসহ চারজনের বিরুদ্ধে পৃথক দুইটি চার্জশিট (অভিযোগপত্র) জমা দিয়েছি।

Advertisement

‘মামলাটির অভিযোগপত্র দাখিলের পর আরও গুরুত্বপূর্ণ তথ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। ঘটনার সঙ্গে আরও আসামি জড়িত আছে। তাদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে। এ বিষয়ে আমার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানালে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মৌখিকভাবে নির্দেশ দেন। সে মতে ন্যায়বিচারের স্বার্থে অধিকতর তদন্ত করা প্রয়োজন।’

২৫ এপ্রিল ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে পৃথক দুটি চার্জশিট জমা দেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক কাজী শরিফুল ইসলাম। দুই চার্জশিটে সাক্ষী করা হয় ৩২ জনকে।

আরও পড়ুন>> আবরারের পরিবারকে ১০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে

আবরার নিহত হওয়ার ঘটনায় বাসের কন্ডাক্টর ইয়াছির আরাফাত ও মালিক ননী গোপাল সরকারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ২৭৯/৩০৪/১০৯ ধারায় চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা। অপরদিকে ঘটনায় জড়িত থাকার কোনো তথ্যপ্রমাণ না পাওয়ায় বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম ও তার সহকারী ইব্রাহিম হোসেনকে অব্যাহতির আবেদন করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা।

এ ছাড়া পথচারী সিমথিয়া সুলতানা মুক্তাকে আহত করায় বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম, তার সহকারী ইব্রাহিম হোসেন, কন্ডাক্টর ইয়াছির আরাফাত ও মালিক ননী গোপাল সরকারের বিরুদ্ধে পেনাল কোডের ২৭৯/৩৩৮-ক/১০৯ ধারায় আরেকটি চার্জশিট দেন তদন্ত কর্মকর্তা।

এ মামলায় বাসচালক সিরাজুল ইসলাম, সহকারী ইব্রাহিম হোসেন, কন্ডাক্টর ইয়াছির আরাফাত ও মালিক ননী গোপাল সরকার কারাগারে। তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

১৯ মার্চ সকাল ৭টার দিকে প্রগতি সরণি এলাকায় সু-প্রভাত (ঢাকা-মেট্রো-ব-১১-৪১৩৫) বাসের চাপায় বিইউপির শিক্ষার্থী আবরার আহাম্মেদ চৌধুরী নিহত হন।

সেদিন রাতেই আবরারের বাবা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আরিফ আহাম্মেদ চৌধুরী বাদী হয়ে গুলশান থানায় মামলা করেন। মামলায় আসামি করা হয় বাসের চালক সিরাজুল ইসলাম, হেলপার ইব্রাহিম হোসেন, কন্ডাক্টর ইয়াছির আরাফাত ও মালিক ননী গোপাল সরকারকে। মামলার ধারা পেনাল কোডের ২৭৯/ ৩৩৮ (ক)/৩০৪/ ও ১০৯। মামলা নং ৩০।

জেএ/জেডএ/পিআর