ঋণখেলাপিদের বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি আবারও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। আদালত বলেছেন, ঋণখেলাপিদের সুবিধা দিতে বাংলাদেশ ব্যাংক পাগল হয়ে গেছে।
Advertisement
হাইকোর্ট বলেন, দেশের টাকা লুট করে বিদেশে নিয়ে যাচ্ছে ঋণখেলাপিরা। ঋণখেলাপিরা মানি লন্ডারিং করে বিদেশে সেকেন্ড হোম বানাচ্ছে। অথচ ব্যবসায়ী ও ব্যাংকগুলোকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না বাংলাদেশ ব্যাংক। জনগণের টাকা লুট করার ক্ষমতা কাউকে দেয়া হয়নি।
মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের (এইচআরপিবি) করা এক আবেদনের শুনানিতে বুধবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ এমন মন্তব্য করেন।
একইসঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের এক প্রজ্ঞাপনের বিষয়ে বৃহস্পতিবার আদেশের দিন ঠিক করেছেন হাইকোর্ট।
Advertisement
আদালতে আজ আবেদনকারীর পক্ষে আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ। বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে আইনজীবী ছিলেন মুনীরুজ্জামান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।
এইচআরপিবির করা এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপির তালিকা দাখিলের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের প্রতি নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে রুল জারি করেছিলেন।
রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তা জানতে চেয়েছিলেন এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দুই সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চার সপ্তাহের মধ্যে এই রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
Advertisement
এই আদেশের পরও ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক খেলাপি ঋণ পরিশোধে ঋণগ্রহীতাদের বিশেষ সুবিধা দিয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে। যা ৩০ জুন থেকে কার্যকর হওয়ার কথা রয়েছে।
এ বিষয়ে রিট আবেদনকারী অ্যাডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, কাউকে ঋণখেলাপি ঘোষণার আগে ঋণ পরিশোধের জন্য বিভিন্ন ধাপে সময় দেয়া হয়। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে না পারলে চূড়ান্তভাবে সময় দেয়া হয়। এরপরও পরিশোধ না করলে তার নাম ঋণখেলাপির তালিকায় ওঠে। এই প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে গত ২১ এপ্রিল বাংলাদেশ ব্যাংক একটি সার্কুলার জারি করে ঋণ পরিশোধের সময় আগের আইনের চেয়ে দ্বিগুণ করে দেন।
অর্থাৎ আগে যাদের তিন মাসের মধ্যে ঋণের টাকা জমা দিতে হতো তারা ছয় মাস সময় পেয়েছেন। আর যাদের ছয় মাসের মধ্যে টাকা দেয়ার কথা তাদেরটা বাড়িয়ে ১২ মাস করা হয়েছে। সেই প্রজ্ঞাপনের কার্যকারিতা স্থগিত চেয়ে আবেদন করেছি, আজ আবেদনটি উপস্থাপন করার পর এ বিষয়ে আদেশের জন্য বৃহস্পতিবার (২৭ জুন) দিন ঠিক করেছেন আদালত।
এফএইচ/বিএ