ক্যাম্পাস

লিফট ছিঁড়ে আহত শিক্ষার্থী, কর্তৃপক্ষ বলছে অন্যকথা

লিফট ছিঁড়ে আহত শিক্ষার্থী, কর্তৃপক্ষ বলছে অন্যকথা

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ে লিফট ছিঁড়ে তিন শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন। তবে তাদের অবস্থা গুরুতর নয়। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে তিনতলা থেকে ওই লিফটি ছিঁড়ে পড়ে। লিফটি ১৯ তলা পর্যন্ত ওঠানামা করে। তৃতীয় তলা থেকে পড়ে যাওয়ায় তেমন বড় ধরনের ঘটনা ঘটেনি। রাজধানীর মহাখালী ক্যাম্পাসে দ্বিতীয় ভবনে ওই ঘটনা ঘটে।

Advertisement

প্রত্যক্ষদর্শী শিক্ষার্থীরা জানান, গতকাল বিকেলে দুই শিক্ষার্থী পঞ্চমতলা থেকে লিফটে নিচে নামার সময় তৃতীয় তলায় কল দিয়ে আরেক শিক্ষার্থী উঠলে হঠাৎ লিফটি ছিঁড়ে পড়ে যায়। এতে তিন শিক্ষার্থী আঘাতপ্রাপ্ত হন। তবে আঘাত গুরুতর না হওয়ায় ক্যাম্পাসে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে বাড়ি পাঠানো হয়। লিফটি অনেক পুরনো হওয়ায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে দাবি করেন তারা।

শিক্ষার্থীরা জানান, এর আগেও এই লিফটে উঠে নানা রকম সমস্যায় পড়তে হয়েছে, বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে বার বার বলার পরও তারা গুরুত্ব দেয়নি। কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে এমন ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ করেন তারা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আহত এক শিক্ষার্থী জানান, ভবনের তিনতালা থেকে লিফটটি ছিঁড়ে নিচে পড়ে যায়। পড়ার সময় ওপরের ফলস সিলিং, লাইট ভেঙে পড়ে আমাদের মাথার ওপর। ভারি সিলিংয়ের আঘাতে ও টিউব লাইটের কাঁচের গুড়োতে আহত হন একাধিক শিক্ষার্থী।

Advertisement

এদিকে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির লিফট ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনায় নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তোলপাড় শুরু হয়। ফেসবুকে এক শিক্ষার্থী লিখেছেন, ‘নাম্বার ওয়ান প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি (গত বছর এক নাম্বার ছিল তারা); এই বুলি শোনাতে শোনাতে কান পঁচায় ফেলেছিল অথরিটি। আসুন দেখি আমরা কতটা নিরাপদ? বাংলাদেশের মধ্যে সব থেকে বেশি টিউশন ফি দিয়ে পড়ালেখা করছি আমরা। ক্যাম্পাস তো নাই, ক্লাস ছাড়া বসার জায়গা পাওয়াটাও দুষ্কর।’

‘হ্যাঁ, নিয়মের ব্যাপারে তারা সোচ্চার। তিনটা ক্লাস মিস করলেই চিন্তা শুরু হয় মার্কস কাটার, সাথে আছে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে না দেয়ার ভয়। দশ মিনিট দেরি হলে ক্লাসে ঢুকতে দেবে না, নয়তো উপস্থিতি দেবে না। ক্লাস কোথায় হয় জানেন? ১৫ তলায়/ ৮ তলায়/ ১০ তলায়। এই সব টাওয়ারে সিঁড়ি ভাঙিয়ে ওঠা যে কতটা কষ্টসাধ্য; তা লিফট ছাড়া উঠতে হলে বোঝা যায়।’

‘এত টাকা নিচ্ছে, অথচ আজকে লিফট ছিঁড়ে পড়ে স্টুডেন্ট আহত হয়। এক লিফট দিয়ে আর কয় যুগই বা চলে! ছাত্র-ছাত্রী মারা গেলে অথরিটির কি! তাদেরতো অভাব নাই ছাত্রের। এই লিফট ১৯ তলা পর্যন্ত ওঠে, আল্লাহ না করুক, যদি ৩য় তলা থেকে ছিঁড়ে না পড়ে ১৯ তলা থেকে পড়তো, তাহলে লিফটে থাকা স্টুডেন্ট আর সিকিউরিটি গার্ডদের লাশ বের হোত আজকে। নিরাপত্তা কই আমাদের? বঞ্চিত হচ্ছি অনেক কিছু থেকেই, এবার কি জীবনটাও দিয়ে দিতে হবে?’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজার এস কে সরকার জাগো নিউজকে বলেন, লিফট ছিঁড়ে যাওয়ার বিষয়টি সত্য নয়, লিফটের ভেতরে থাকা সিলিং ও টিউবলাইট ভেঙে পড়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে এক ধরনের আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। এ সময় ভেতরে থাকা তিনজন শিক্ষার্থীর শরীরে সেসব ভাঙা টুকরো পড়ে সামান্য আঘাতপ্রাপ্ত হয়। তাৎক্ষণিকভাবে তাদের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়।

Advertisement

তিনি বলেন, এ ঘটনার পর লিফটি বন্ধ রাখা হয়েছে। দ্রুত পুরনো লিফটি পরিবর্তন করে নতুন লিফট স্থাপন করা হবে। তবে এটি নিউজ করার বিষয় নয় বলে মন্তব্য করেন এ কর্মকর্তা।

এমএইচএম/জেএইচ/এমএস