জাতীয়

প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের সম্ভাবনা বিশ্বজুড়ে আলোচনায়

আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন, বাংলাদেশের (আইইবি) প্রেসিডেন্ট ইঞ্জিনিয়ার আবদুস সবুর বলেন, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের অপার সম্ভাবনা এখন বিশ্বজুড়ে আলোচনায় রয়েছে। মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে আমরা ট্যাক্সি ডাকছি, বাজার করছি, বিভিন্ন বিষয়ে আবেদনের ফরম পূরণ করছি।

Advertisement

মঙ্গলবার রাজধানীর রমনায় আইইবির কম্পিউটার কৌশল বিভাগের উদ্যোগে মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট এবং ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষা সংক্রান্ত সেমিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

আবদুস সবুর বলেন, ট্রেন, বাস এমনকি সিনেমার টিকিটও অ্যাপসের মাধ্যমে সংগ্রহ করতে আমরা দিন দিন অভ্যস্ত হয়ে উঠছি। আর ফেসবুক, ইউটিউব তথা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তো আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিলিয়ন ডলারের অ্যাপস বাজারে বাংলাদেশি অ্যাপ ডেভেলপারদের জন্য অপার সম্ভাবনা রয়েছে। এই সম্ভাবনাগুলোকে কাজে লাগানোর জন্য ইতোমধ্যে ৩১ হাজার ৯৩০ জন আইটি প্রশিক্ষিত দক্ষ জনবল তৈরি করেছে সরকার।

আইইবির প্রেসিডেন্ট বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ তৈরির মাধ্যমে মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়নে স্থানীয় বাজার সম্প্রসারণ ও আন্তর্জাতিক বাজারে প্রবেশের জন্য বাংলাদেশকে প্রস্তুত করার লক্ষ্যে, বাংলাদেশ সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের উদ্যোগে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন তৈরির ওপর দেশব্যাপী বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দিতে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া বাংলাদেশ সরকারের আইসিটি বিভাগ ইতোমধ্যে মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন শীর্ষক প্রকল্প চালু রয়েছে। তাই আমাদের উচিত, অ্যাপস ডেভলমেন্টের এই বিশাল মার্কেটকে কাজে লাগানো এবং দেশের নতুন নতুন ডেভেলপারদের জন্য উন্নততর প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা। ভবিষ্যতে আমাদের দেশের এই অ্যাপ ডেভলপাররা বিদেশের বাজারে জায়গা করে নেবে এবং বৈদেশিক মুদ্রা আয় করবে।

Advertisement

সেমিনারে বক্তারা বলেন, দিনের একটি উল্লেখযোগ্য সময় ব্যয় করছি কোনো না কোনো মোবাইল অ্যাপস ব্যবহার করে।বিশ্বে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ইন্ডাস্ট্রি ২০২০ সালে ২০০ বিলিয়ন ডলার মার্কেটে পরিণত হবে। শুধুমাত্র অ্যাপল আর গুগলের প্লে স্টোরেই ৬ মিলিয়নের বেশি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন রয়েছে। বিশ্বে মোবাইল ফোন সাবস্ক্রিপশনের সংখ্যা ৭ বিলিয়নেরও বেশি। আমাদের দেশে শুধুমাত্র স্মার্টফোন ব্যবহারকারী ৩ কোটিরও বেশি এবং ইন্টারনেট ব্যবহারে দক্ষিণ এশিয়ায় আমরা দ্বিতীয়। স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা প্রতিমাসে গড়ে ৩০টি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন ব্যবহার করে। বিশ্বের ১০% মানুষ প্রতি ৪ মিনিটে একবার স্মার্টফোনটি চেক করে, যার ৯০% সময় কাটে কোনো না কোনো মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে যেসব উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার ব্যাপক হারে বিস্তার লাভ করবে, বিশেষত আইওটির মতো প্রযুক্তিগুলো অনেকটাই নির্ভর করবে মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের ওপর।

সেমিনারে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী সাজ্জাদ হোসেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আইইবির সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী খন্দকার মনজুর মোর্শেদ।

ফিনল্যান্ডের হেনসিংকি বিশ্ববিদ্যালয়ের মোবাইল অ্যাপস ডেভেলপমেন্ট বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলী মেজবাহুল ইসলাম ও কমিউনিকেশন ল বিশেষজ্ঞ ড. শাকিলা-বু-পাশা সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। অনুষ্ঠানে আইইবির কম্পিউটার কৌশল বিভাগের সম্পাদক প্রকৌশলী মো. রনক আহসানের সঞ্চালনায় সভাপতিত্ব করেন বিভাগের চেয়ারম্যান ও কানাডিয়ান ইউনির্ভাসিটি অব বাংলাদেশের উপাচার্য অধ্যাপক ড. প্রকৌশলী মুহাম্মদ মাহফুজুল ইসলাম।

এছাড়া সেমিনারে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন আইইবির কম্পিউটার কৌশল বিভাগের ভাইস-চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মো. তমিজ উদ্দীন আহমেদ।

Advertisement

এইউএ/এমএসএইচ/পিআর