দেশজুড়ে

ট্রেন উঠলেই কাঁপে সেতু, ভেঙে পড়বে যেকোনো সময়

ঢাকা-মোহনগঞ্জ রেলপথের নেত্রকোনায় ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে দুটি রেলসেতু। জেলার ঠাকুরাকোনার কংশ নদীর ওপর রেলসেতুটি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় ক্ষতিগ্রস্ত হলে সেসময় মেরামত করা হয়েছিল।

Advertisement

গত ৪০ বছরে এটি আর মেরামত করা হয়নি। এ অবস্থায় ৪০ বছর ধরে নড়বড়ে ওই সেতুর ওপর দিয়ে চলছে ট্রেন। ফলে যেকোনো মুহূর্তে সেতু ভেঙে দুর্ঘটনার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। তবে স্থানীয় রেল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিষয়টি দেখভালের দায়িত্ব তাদের নয়।

১৯২৭ সালে ব্রিটিশ আমলে ঠাকুরাকোনায় দুটি রেলসেতু নির্মিত হলে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় বিধ্বস্ত হয়। ওই সময় সেতু দুটির আংশিক মেরামত করা হয়। এরপর থেকে জোড়াতালি দিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর ওপর দিয়ে চলছে ট্রেন।

ঠাকুরাকোনা ও মোহনগঞ্জ সেতুর পিলারে ফাটল দেখা দেয়ায় যেকোনো সময় ভেঙে পড়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। বর্তমানে রেল পারাপারের সময় সেতুগুলোতে কম্পনের সৃষ্টি হয়। বিষয়টি নিয়ে আতঙ্কে রয়েছেন আশপাশের লোকজন।

Advertisement

কদমদেওলী গ্রামের আবুল কালাম আজাদ বলেন, খুবই ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছে রেলসেতুটি। কিছুদিন আগে রেললাইন সংস্কার হলেও রেলসেতুটি সংস্কার করেনি কর্তৃপক্ষ। ফলে যেকোনো দিন এখানেও কুলাউড়ার মতো বড় ধরনের ট্রেন দুর্ঘটনা ঘটবে।

নেত্রকোনা শহরের সাতপাই এলাকার বাসিন্দা জহিরুল ইসলাম খান বলেন, সেতুটির কাঠের স্লিপারে বাঁশের ফালি দিয়ে জোড়াতালি দিয়ে রাখা হয়েছে। যেকোনো মুহূর্তে দুর্ঘটনা ঘটবে।

একই এলাকার বাসিন্দা ইমুন আহমেদ বলেন, এই রেলসেতু দিয়ে ট্রেন যাওয়ার সময় কাঁপতে থাকে, যা দেখে ভয়ঙ্কর অবস্থার সৃষ্টি হয়। ট্রেন উঠলেই সেতু কাঁপে। ভেঙে পড়বে যেকোনো সময়।

নেত্রকোনার বড় স্টেশনের মাস্টার মো. রফিক উদ্দিন বলেন, সেতু নির্মাণ ও সংস্কার করার বিষয়টি দেখার দায়িত্ব রেলের প্রকৌশল বিভাগের। আমরা শুধু পরিবহন সেক্টর দেখি। এ বিষয়ে আমাদের কিছুই করার নেই। ঝুঁকিপূর্ণ সেতুর বিষয়টি আমার জানা নেই।

Advertisement

প্রসঙ্গত, রোববার (২৩ জুন) রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর উপবন এক্সপ্রেস কুলাউড়া উপজেলার বরমচাল রেলস্টেশন ছেড়ে এসে মনছড়া রেলসেতুটি অতিক্রম করার সময় দুর্ঘটনায় পড়ে। এতে ছয়জন নিহত এবং অন্তত ২০০ যাত্রী আহত হন।

কামাল হোসাইন/এএম/এমএস