আইন-আদালত

হাইকোর্টে ঋণখেলাপির তথ্য দিল বাংলাদেশ ব্যাংক

দেশে বর্তমানে ব্যাংক থেকে নেয়া ঋণের পরিমাণ দুই লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা। এর মধ্যে এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকা খেলাপি। বাকি এক লাখ ১০ হাজার কোটি টাকার মধ্যে ৮০ হাজার কোটি টাকা নিয়ে মামলা রয়েছে। যা আদালতের নিষেধাজ্ঞায় আটকে আছে।

Advertisement

অবলোপনকৃত ঋণের পরিমাণ ৩০ হাজার কোটি টাকা। এছাড়া খেলাপি ঋণের ১০ হাজার ৪৭৬টি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট রয়েছে বলেও বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষ থেকে জানানো হয়।

সোমবার হাইকোর্টের বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে এই তথ্য উপস্থাপন করেন অ্যাটর্নি জেনারেল ও বাংলাদেশ ব্যাংকের আইনজীবী অ্যাডভোকেট মাহবুবে আলম।

আদালতে আজ বাংলাদেশ ব্যাংকের পক্ষে শুনানিতে ছিলেন আইনজীবী মুনীরুজ্জামান। রিট আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ।

Advertisement

অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম খেলাপি ঋণের পরিমাণ ও তালিকাসংক্রান্ত তথ্য দুইটি ভলিউমে সিলগালা করা তালিকা আদালতে উপস্থাপন করেন। তবে কোন কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান ঋণখেলাপি বা অর্থের পরিমাণ কত তা আদালতে প্রকাশ্যে জানানো হয়নি।

এদিকে এ বিষয়ে জারি করা রুলের শুনানির জন্য উভয় পক্ষকে প্রস্তুত হতে বলেন আদালত। আগামী দুই সপ্তাহ পর রুলের ওপর চূড়ান্ত শুনানি অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে ২০ বছর ধরে এক কোটি টাকার ওপরে ঋণখেলাপিদের তালিকা, ঋণের পরিমাণ এবং সুদ মওকুফের তালিকা চেয়েছিলেন হাইকোর্ট।

গত ১৩ ফেব্রুয়ারি এক আদেশে ঋণখেলাপিদের তালিকা দাখিলের নির্দেশ দেন আদালত। একই সঙ্গে রুল জারি করেন। রুলে আর্থিক খাতে অনিয়ম, দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. মোহাম্মদ ফরাস উদ্দিন, ড. সালেহ উদ্দিন আহমেদ, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা এবি মির্জ্জা আজিজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদ, সিটি ব্যাংকের সাবেক সিইও মামুন রশিদ, বাংলাদেশ ব্যাংকের একজন প্রতিনিধি ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের একজন প্রতিনিধির সমন্বয়ে কমিশন গঠনের কেন নির্দেশ দেয়া হবে না এবং এই কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না- তাও জানতে চাওয়া হয়।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব, প্রধানমন্ত্রী সচিবালয়ের সচিব, অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের দুই সচিব, আইন সচিব, বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর, সরকারি-বেসরকারি ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের চার সপ্তাহের মধ্যে জবাব দিতে বলা হয়।

Advertisement

এরপর গত ২১ মে হাইকোর্ট ঋণখেলাপিদের তথ্যসংক্রান্ত তথ্যাদি ২৪ জুন দাখিল করার জন্য নির্দেশনা দিয়েছিলেন আদালত। সেইসঙ্গে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নীতিমালার ওপর স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে নির্দেশ দিয়েছিলেন এক মাসের জন্য। এরই ধারাবাহিকতায় আজ ঋণখেলাপি সংক্রান্ত তথ্যাদি আদালতে দাখিল করা হয়।

এফএইচ/বিএ/জেআইএম