স্বপ্ন আর পরিশ্রম একজন মানুষকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে তারই বাস্তব উদাহরণ হয়েছেন জনপ্রিয় এই অভিনেতা। মাত্র ১৪ বছর বয়সে বাবা-মা দু’জনকেই হারিয়ে ছিলেন। অর্থের অভাবে দশম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ার পর আর এগিয়ে যেতে পারেননি।
Advertisement
১৭ বছর বয়সে চূড়ান্ত অর্থাভাবে দরজায় দরজায় গিয়ে কসমেটিক্স প্রোডাক্ট বিক্রি করেছেন যেই মানুষটি তিনি হলেন বলিউডের আরশাদ ওয়ারসি। ‘মুন্নাভাই’ সিনেমার ‘সার্কিট’ চরিত্রটি তাকে ভীষণ জনপ্রিয় করেছিল।
১৯৬৮ সালের ১৯ এপ্রিল মুম্বইতে আরশাদের জন্ম। স্কুলে পড়ার সময় থেকেই জাতীয় স্তরের জিমন্যাস্ট ছিলেন আরশাদ। আবার স্কুলের ‘বাইকার্স গ্যাং’-এও তার নাম ছিল প্রথম সারিতে। ছোটবেলাতে বাবা মাকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলেন আরশাদ। কসমেটিক্স প্রোডাক্ট বিক্রি করেছেন, ফটো ল্যাবে কাজ করেছেন।
কেমন করে যেন নাচের প্রতি টান তৈরি হয় তার। কাজের পাশাপাশি আকবর শামির নাচের দলে যোগ দেন। নাচ রপ্ত করে বেশ কিছু পুরস্কারও পান। পরে ‘অসম’ নামে নিজের ডান্স স্টুডিও খোলেন। তবে শুধু নাচ তাকে ধরে রাখতে পারেনি। অভিনয়ের পোকা ঢোকে মাথায়। কোরিওগ্রাফার হিসেবে কাজ শুরু করে অভিনয়ের দিকে ঝুঁকে পড়েন।
Advertisement
এই গল্পটাও বেশ মজার । ১৯৯৩ সালে ‘রূপ কি রানি চোরো কা রাজা’ ছবির টাইটেল ট্র্যাক কোরিওগ্রাফি করার দায়িত্ব পান আরশাদ। এরপর কপাল খুলে যায়। সে সময়ই ১৯৯৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘তেরে মেরে স্বপ্নে’ ছবির অন্যতম প্রধান চরিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে অফার দেন জয়া বচ্চন।
এরপর একে একে ‘বেতাবি’, ‘মেরে দো আনমোল রতন’, ‘হিরো হিন্দুস্তানি’, ‘হোগি প্যায়ার কি জিত’, ‘মুঝে মেরি বিবি সে বাঁচাও’-এর মতো একের পর এক জনপ্রিয় ছবি উপহার দিয়েছেন তিনি। ২০০৩-এ ‘মুন্নাভাই এমবিবিএস’-এর ‘সার্কিট’ চরিত্রটি আরশাদকে ভীষণ জনপ্রিয় করে তোলে। নিজেকে বলিউডের প্রথম সারির কমেডি অভিনেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেন আরশাদ।
শুধু কমেডি নয় ‘চকোলেট’, ‘কাবুল এক্সপ্রেস’ এর মতো ভিন্ন ধারার গল্পের ছবিতে অভিনয় করেও সবার মন জয় করেছেন। ‘জলি এল এল বি’তে আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করেও মন কেড়েছেন দর্শকের।
১৯৯১-এ একটি কলেজের অনুষ্ঠানে গিয়ে মারিয়া গোরেতির সঙ্গে আলাপ হয় আরশাদের। আট বছরের সম্পর্কের পর ১৯৯৯-এ বিয়ে করেন তারা। দম্পতির এক পুত্র এবং এক কন্যা সন্তান রয়েছে। সংসার জীবন ও অভিনয় জীবন সব নিয়ে বেশ ভালো সময় কাটিয়ে চলেছেন তিনি। ছোট থেকে কীভাবে বড় হতে হয় ? আরশাদের মতো মানুষদের কাছ থেকেই শিখে নিতে হয় প্রতিদিন।
Advertisement
এমএবি/পিআর