দেশজুড়ে

চুয়াডাঙায় ২ অডিটরের বিরুদ্ধে ঘুষ দাবির অভিযোগ

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের দুজন সহকারী অডিটর মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. হেমায়েত উদ্দীনের বিরুদ্ধে ২০ লাখ টাকা ঘুষ দাবির অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় শিক্ষকদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। জানা গেছে, চুয়াডাঙার জীবননগর উপজেলার ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অডিট করতে এসে শিক্ষকদের কাছে ২০ লাখ টাকা তারা ঘুষ দাবি করেছেন। তাদের দাবিকৃত টাকা দেয়া না হলে ওই ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে বিরূপ রিপোর্ট দাখিল করা হবে বলে শিক্ষকদের হুমকিও দেয়া হয়েছে। আরো জানা গেছে, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষা অধিদফতরের দুই সহকারী অডিটর মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও মো. হেমায়েত উদ্দীন জীবননগর উপজেলার ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে গত ১৮ আগস্ট অডিট করতে আসেন। তারা ১৯ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত ১০টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অডিট করেন। এদিকে, ওই দুই অডিটর অডিট করার সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে তেমন কোন অসঙ্গতি না পেলেও তারা তাদের ইচ্ছামাফিক তৈরি করা বিভিন্ন ত্রুটি, বিচ্যুতি দেখিয়ে প্রতিটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক মাসের এমপিওর (শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের এক মাসের শিক্ষক ও কর্মচারীদের সরকারি বেতন) টাকা ঘুষ দাবি করেন এবং ঘুষের টাকা না দিলে কারো চাকুরি থাকবে না বলে হুমকিও দেন। এতে কোনো কোনো শিক্ষক তাদের চাকরি বাঁচানোর জন্য রাজিও হন। সে মোতাবেক চলতি মাসের ৫ তারিখে অডিটরদের দাবিকৃত ঘুষের টাকা নিয়ে শিক্ষকদের ঢাকা গাবতলীতে যাবার কথা ছিলো। কিন্তু শিক্ষকরা টাকা জোগাড় করতে না পারায় ওই দিন যেতে পারেনি। পরবর্তীতে অডিটর মো. মোস্তাফিজুর রহমান শিক্ষকদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করে দাবিকৃত টাকা নিয়ে ৮ সেপ্টেম্বর গাবতলীতে আবার যাবার জন্য নির্দেশ দেন। কিন্তু টাকা জোগাড় করতে না পারায় এবারও শিক্ষকরা যেতে পারেনি।    এ ব্যাপারে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, আমার দুই সন্তান ও স্ত্রীসহ ৪ সদস্যের পরিবার। অন্য কোন আয় নেই। শিক্ষকতা করেই সংসার চালায়। সামনে কোরবানিসহ ঈদের কেনাকাটা রয়েছে। যদি এক মাসের বেতনের পুরো টাকাই অডিটরদের দিয়ে দিতে হয় তাহলে আমাদের দু’ বেলা না খেয়ে থাকতে হবে।       নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক জাগো নিউজকে বলেন, অডিটরদের দাবিকৃত ঘুষের টাকা জোগাড় করতে গিয়ে হিমশিম খেতে হচ্ছে।     এ ব্যাপারে অডিটর মো. মোস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, অডিট করার সময় আমি কারো কাছে ঘুষ দাবি করিনি। ২৫ আগস্টের পরে আপনি কয়েকজন প্রধান শিক্ষকের কাছে একাধিকবার কল করেছেন কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ভুল করে কল চলে গেছে।     এ ব্যাপারে পরিদর্শন ও নিরীক্ষা অধিদফতরের পরিচালক প্রফেসর মো. মফিজ উদ্দিন আহমদ ভূঁইয়ার সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, বিষয়টি আমার জানা নেই। কোনো শিক্ষক আমার কাছে লিখিত আকারে অভিযোগ করলে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। সালাউদ্দীন কাজল/এসএস/এমএস

Advertisement