খেলাধুলা

আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে কী করবে বাংলাদেশ?

দুই রকম লক্ষ্য নিয়ে সোমবার ইংল্যান্ডের সাউদাম্পটনে মুখোমুখি হচ্ছে বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান। বাংলাদেশের লক্ষ্য ম্যাচ জিতে সেমিফাইনালের আশা বাঁচিয়ে রাখা এবং আফগানিস্তান চাইবে জয়ের ঘরটি থেকে শূণ্য সংখ্যাটি সরিয়ে দিতে।

Advertisement

ইংল্যান্ড বিশ্বকাপে আফগানিস্তানই একমাত্র দল যারা এখনো জয়ের দেখা পায়নি। আগের ম্যাচে ভারতের বিরুদ্ধে জয়ের সম্ভাবনা তৈরি করে হেরেছে ১১ রান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে নিশ্চয়ই মরণ কামড় দেবে এই বিশ্বকাপের সবচেয়ে দূর্বল দেশটি।

ধারে-ভারে আর দুই দেশের ক্রিকেটারদের তুলনা করলে এ ম্যাচে পরিস্কার ফেবারিট বাংলাদেশ। বিশ্বকাপের প্রথম ৬ ম্যাচ থেকে ২টি জয়, তিনটি হার এবং একটি ম্যাচ পরিত্যক্ত বাংলাদেশের। ৫ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলে ষষ্ঠ স্থানে। বাংলাদেশ বাকি তিন ম্যাচ জিতলে অনেক ‘যদি’র মিলন ঘটিয়ে সেমিফাইালের দরজা খুলতেও পারে।

দক্ষিণ আফ্রিকা ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে জিততে পারলে আফগানিস্তানকে না হারানোর কোনো কারণ নেই; কিন্তু ক্রিকেট যে অনিশ্চয়তার খেলা। যে কোনো দিন যে কোন দল জিততে পারে। শনিবার তেমন একটি দিনতো এনেই ফেলেছিল আফগানিস্তান। ভারতের বিরুদ্ধে তাদেও জয়ের সম্ভাবনাও তৈরি হয়েছিল।

Advertisement

একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে বেশি সাক্ষাত হয়নি বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানের। বছর পাঁচেক আগে দুই দেশ প্রথম মুখোমুখি হয়েছিল। ২০১৪ সালের এক মার্চ ফতুল্লা স্টেডিয়ামে দুই দেশের প্রথম সাক্ষাতটি লজ্জা দিয়েছিল বাংলাদেশকে। নবীন ক্রিকেট দেশ আফগানিস্তানের কাছে বাংলাদেশ হেরেছিল ৩২ রানে।

এরপর গত চার বছরে আরো ৬ বার দেখা হয়েছে বাংলাদেশ-আফগানিস্তানের। সেখানে জয়ের পাল্লা টাইগারদেরই বেশি। তবে এক চেটিয়ে নয়। মোট সাতবারের সাক্ষাতে বাংলাদেশের জয় চারটি, তিনটি আফগানিস্তানের।

গত বছর এশিয়া কাপে দুইবারের মুখোমুখিতে একটি করে জয় দুই দেশের। তবে আফগানিস্তানের আত্মতুষ্টি একটু বেশিই থাকতে পারে। কারণ, তারা জিতেছিল প্রথম ম্যাচে ১৩৬ রানের বিশাল ব্যাবধানে। আর দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের জয় মাত্র ৩ রানে। অতীতের ম্যাচগুলো দুই দলের লড়াইয়ে কাউকেই একক ফেবারিট বলছে না; কিন্তু বাংলাদেশের পারফরম্যান্স এই বিশ্বকাপে আফগানিস্তানের চেয়ে অনেক ভালো বলে ম্যাচের ভাগ্য লাল-সবুজ জার্সির দিকেই ঝুঁকবে বলে মনে করছেন ক্রিকেট বোদ্ধারা।

গত এশিয়া কাপে প্রথম ম্যাচে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আফগানিস্তানের বড় জয় এসেছিল রশিদ খানের দুর্দান্ত নৌপূণ্যে। ৩২ বলে হার না মানা ৫৭ রান করার পর বোলিংয়ে ৯ ওভারে ১৩ রান দিয়ে নিয়েছিলেন ২ উইকেট। ম্যাচটি আসলে রশিদ খানের কাছেই হেরে গিয়েছিল মাশরাফিরা। দ্বিতীয় ম্যাচে তিন রানের কোনো রকম জয়ে প্রতিশোধ নেয় বাংলাদেশ।

Advertisement

ভারতের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বীতা করার পর আফগানিস্তানকে নিয়ে অনেকের মনে ভয়; কিন্তু প্রতি ম্যাচেই তো আর অঘটনের সম্ভাবনা জাগবে না। সাকিব, মুশফিক আর মাশরাফিরা স্বাভাবিক খেলা খেলতে পারলে আফগানিস্তানের প্রকৃত শক্তিটাই দেখা যাবে। যে শক্তি দিয়ে বাংলাদেশকে হারানোর সাধ্যি নেই তাদের।

১০০ ওভারের খেলা। ক্ষণে ক্ষণে রং পাল্টাতে পারে ম্যাচের। যেমন ছিল ভারত-আফগানিস্তানের ম্যাচেও; কিন্তু ভারতের অভিজ্ঞতার কাছেই শেষ পর্যন্ত হার মানতে হয়েছে নবীন আফগানিস্তানকে। বাংলাদেশও এই জায়গায় অনেক এগিয়ে রশিদ খানদের চেয়ে। যোগ্যতায়ও। প্রতিপক্ষ হিসেবে আফগানদের অবশ্যই সমীহ করবে বাংলাদেশ। কিন্তু এগিয়ে থাকবে আত্মবিশ্বাসে। শক্তি, অভিজ্ঞতা ও আত্মবিশ্বাস মিলিয়েই এই বিশ্বকাপে তৃতীয় জয়টি ঝুলিতে ভরতে পারে টাইগাররা।

এক নজরে বাাংলাদেশ-আফগানিস্তানের আগের ৭ ম্যাচ

১ মার্চ ২০১৪ : আফগানিস্তান ৩২ রানে জয়ী (ফতুল্লা)১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ : বাংলাদেশ ১০৫ রানে জয়ী (ক্যানবেরা)২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : বাংলাদেশ ৭ রানে জয়ী (ঢাকা)২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : আফগানিস্তান ২ উইকেটে জয়ী (ঢাকা)১ অক্টোবর ২০১৬ : বাংলাদেশ ১৪১ রানে জয়ী (ঢাকা)২০ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : আফগানিস্তান ১৩৬ রানে জয়ী (আবুধাবি)২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬ : বাংলাদেশ ৩ রানে জয়ী (আবুধাবি)

আরআই/আইএইচএস/পিআর