খেলাধুলা

সাইফউদ্দীন প্রসঙ্গে মিডিয়ার ওপর ঝাল ঝাড়লেন কোচ রোডস

রাত পোহালেই আফগানিস্তানের সাথে ম্যাচ। শক্তি-সামর্থ্য, নাম-ডাক, তারকা খ্যাতি আর ক্রিকেট মানচিত্রে অবস্থানগত দিক- সব কিছুতেই আফগানিস্তান বাংলাদেশের চেয়ে পিছিয়ে। যদিও ভারতের দেরাদুনে ঠিক এক বছর আগে ২০১৮ সালে নিরপক্ষে ভেন্যুতে আফগানদের কাছে ৩-০ ব্যবধানে টি-টোয়েন্টি সিরিজ হেরেছে বাংলাদেশ।

Advertisement

তারপরও বর্তমানে ওয়ানডে রেটিং, র‌্যাংকিং সব কিছুতেই বাংলাদেশ আফগানিস্তানের ওপরে। তাই কালকের ম্যাচে ফেবারিটের তকমা গায়ে মেখেই মাঠে নামবে মাশরাফির দল।

এবারের বিশ্বকাপে এরই মধ্যে দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড, ইংল্যান্ড, ওয়েস্ট ইন্ডিজ আর অস্ট্রেলিয়ার মত শক্তিশালী ও বিশ্বমানের দলের সাথে খেলার পর সোমবার তুলনামূলক কম শক্তির আফগানদের মুখোমুখি হবে টাইগাররা।

তারপরও এ ম্যাচের গুরুত্ব অপরিসীম। সেমিফাইনালের সম্ভাবনা জিইয়ে রাখতে এই ম্যাচ জয়ের কোনই বিকল্প নেই। হারলে সব সম্ভাবনা শেষ হয়ে যাবে।

Advertisement

এমন এক গুরত্বপূর্ণ ম্যাচের আগে কোথায় কোচ থাকবেন ধীরস্থির; কিন্তু না, আজ সংবাদ সম্মেলনে তার কথা শুনে মনে হলো, তিনি বাংলাদেশের মিডিয়ার একটা অংশের ওপর রীতিমত তেলেবেগুনে চটেছেন। আর তেলে-বেগুনে জ্বলে আছেন বলেই আজ সংবাদ সন্মেলনে বাংলাদেশের প্রচার মাধ্যমের সাইফউদ্দীনকে নিয়ে করা একটি সংবাদের তীব্র বিরোধিতা করলেন তিনি।

প্রসঙ্গতঃ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচের পরদিনই মিডিয়ায় এসেছে, ছোট-খাট ইনজুরিকে বড় করে দেখে বিগ ম্যাচ বা কোনো বিশেষ বিশেষ দলের সাথে খেলা থেকে কৌশলে দুরে থাকেন সাইফউদ্দীন। অবশ্য গতকালই এ খবরের বিরোধিতা করেছেন ম্যানেজার খালেদ মাহমুদ সুজন।

জাগো নিউজের সাথে একান্ত আলাপে বাংলাদেশ দলের ম্যানেজার বলেছিলেন, সাইফউদ্দীন কেন, কোনো ক্রিকেটার সুস্থ থেকে বা খেলার মত অবস্থায় থেকে নিজের ইচ্ছেয় ম্যাচ থেকে সরে দাঁড়াতে পারে না। তার কোন সুযোগ ও সম্ভাবনা নেই। ফিজিও যদি বলেন, হ্যাঁ, অমুকে আনফিট। তাহলেই কেবল ওই ক্রিকেটারে পক্ষে ম্যাচ থেকে দুরে থাকা সম্ভব। অন্যথায় নয়।

আজ সেই সাইফউদ্দীন ইস্যুতে কোচ স্টিভ রোডসকে জিজেস করা হয়েছিল, সাইফউদ্দীনের ইনজুরির আপডেট কি? এই পেস বোলিং অলরাউন্ডারের পক্ষে মাঠে ফেরা সম্ভব কিনা? আর ফিরলেও কবে ফিরবেন? তার সর্বশেষ অবস্থা কি?

Advertisement

এমন প্রশ্নের জবাবে রীতিমত মিডিয়ায় প্রচারিত এক সংবাদকে মিথ্যে, গুজব ও বানোয়াট বলে মন্তব্য করে বসেন স্টিভ রোডস। বেশ ঝাঁঝের সাথে তিনি বলে ওঠেন, ‘সাইফউদ্দীনকে জড়িয়ে খবরটি প্রকাশিত হয়েছে, তা সত্য নয়। হ্যাঁ, এটা সত্য, আমি অধিনায়ক মাশরাফি আর প্রধান নির্বাচক নান্নুর সাথে বসে সম্ভাব্য বিকল্পের কথা আলাপ করতে চেয়েছিলাম; কিন্তু তা হয়নি।’

মিডিয়ার দিকে আঙ্গুল তুলে বাংলাদেশ কোচ বলেন, ‘আমি আপনাদের বলে দিতে চাই, কোন ক্রিকেটারের আত্মনিবেদন ও নৈতিকতা নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে অবশ্যই তথ্যটা শতভাগ সত্য কি না তা যাচাই করা উচিৎ।’

স্টিভ রোডস আবেগতাড়িত হয়ে আরও বলেন, ‘আমি নিশ্চিত, বাংলাদেশের হয়ে যে সব সাংবাদিক বিশ্বকাপ কাভার করতে এদেশে এসেছেন তারা সবাই এবং আমরা যারা টিম বাংলাদেশের ম্যানেজমেন্টে আছি- তারা সবাই চাই বাংলাদেশ দলের সাফল্য এবং বাংলাদেশ সফল হোক। তবে এমন কোন মিথ্যে তথ্য প্রচার হওয়া উচিৎ নয়, যাতে কোন খেলোয়াড় খারাপ অবস্থায় পড়ে যায়। সেটা যেমন ওই ক্রিকেটারের জন্য ভাল নয়। বাংলাদেশ দলের জন্যও মঙ্গলজনক নয়।’

স্টিভ রোডস একই সঙ্গে যোগ করেন, ‘আমি কায়োমনে ও দৃঢ়তার সাথে চাই বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জিতুক। জানি, সেটা পাহাড়ের চুড়োয় ওঠার মতই বড় চ্যালেঞ্জ।’

তার শেষ কথা, ‘যে যাই বলুক না কেন, কোনো কিছু লিখার আগে তার সত্যতা যাচাই করা উচিৎ।’ এটুকুই শেষ নয়। কোচের দাবি, ‘সাইফউদ্দীন ভাল আছেন। তার বিশ্রাম দরকার। পিঠের ব্যাথা তাকে ভোগাচ্ছিল এবং সেই ব্যাথার কারণেই অস্ট্রেলিয়ার সাথে শেষ ম্যাচ খেলা সম্ভব হয়নি তার। যেহেতু তার পিঠে ব্যাথা হচ্ছিল, তাই সাইফউদ্দীন বল করতে পারতো না। আর যে বোলার ব্যাথার কারণে বল করতে পারবে না, তাকে খেলানোরও কোন যৌক্তিকতা নেই। তাই আমরা তাকে খেলাইনি।’

এআরবি/আইএইচএস/পিআর