দেশজুড়ে

বাড়ি বাড়ি না গিয়েই কৃষি শুমারির জরিপ শেষ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলায় বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো (বিবিএস) পরিচালিত সরকারের কৃষি শুমারির কাজ শেষ হলেও তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়ি বাড়ি না গিয়ে অন্যর কাছে শুনে তথ্য সংগ্রহ করছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

রোববার বিকেলে সরেজমিনে পাটগ্রাম উপজেলার জোংড়া ইউনিয়নের ইসলামনগর, বাউরা ইউনিয়নের নবীনগন ও হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন এলাকা ঘুরে জানা গেছে, কোনো কোনো এলাকায় তথ্য সংগ্রহকারীরা বাড়িতে না গিয়ে তথ্য সংগ্রহ করেছেন। তারা গ্রামে এসে শুধু মোবাইল নিয়ে ব্যস্ত ছিলেন এবং কোনো প্রশ্ন করেননি বলেও অনেকে অভিযোগ করেছেন।

গত ৯ জুন কৃষি শুমারির কাজ শুরু হয়। গত ২০ জুন (বৃহস্পতিবার) কৃষি শুমারির কাজ শেষ হলেও পাটগ্রাম ও হাতীবান্ধা উপজেলার বিভিন্ন এলাকার বাড়ি থেকে তথ্য সংগ্রহ করেনি তথ্য সংগ্রহকারীরা। কোনো কোনো তথ্য সংগ্রহকারী নামে মাত্র তথ্য সংগ্রহ করেছেন। এলাকায় গিয়ে শুধু ব্যক্তির নাম এবং মোবাইল নম্বর নিয়ে গেছেন। আবার অন্য বাড়িতে বসে এক সঙ্গে দশটি বাড়ির তথ্য সংগ্রহ করার অভিযোগ উঠেছ।

হাতীবান্ধা উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের দালালপাড়া গ্রামের মোতাহার হোসেন বলেন, তথ্য সংগ্রহকারীরা আমার তথ্য আমার কাছ থেকে না নিয়ে অন্যের কাছ থেকে নিয়েছেন। অনেকের বাড়িতে তারা আসেননি।

Advertisement

এদিকে এসএসসি পাস না করেও মাঠ পর্যায়ে তথ্য সংগ্রহকারীর দায়িত্বে পেয়েছেন কেউ কেউ। নিজে ভালোভাবে লিখতে না পারায় অন্যজনকে দিয়ে তথ্য লিখে নিচ্ছেন।

পাটগ্রাম উপজেলার বাউরা ইউনিয়নের তথ্য সংগ্রহকারী সাগর বাবু (২৫) তথ্য সংগ্রহকারীর দায়িত্ব পেয়েছেন। তিনি এসএসসি পাস করেননি। তার কাজ করছেন ওই ইউনিয়নের আফজাল ইসলাম নামে এক যুবক।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে আফজাল ইসলাম বলেন, সাগর বাবু তথ্য সংগ্রহকারীর দায়িত্বে রয়েছেন। তিনি একদিনের ট্রেনিং করেছেন। তবে তিনি ঠিকমতো লিখতে না পারায় আমাকে এ কাজ দিয়েছেন। বিনিমিয়ে তথ্য সংগ্রহের কাজের কিছু টাকা সাগর বাবু আমাকে দেবেন।

বাউরা ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের বাসিন্দা অতুল বলেন, আজ পর্যন্ত কোনো লোক আমাদের বাড়িতে এসে তথ্য সংগ্রহ করেনি।

Advertisement

জোংড়া ইউনিয়নের ইসলাম নগরের বাসিন্দা স্বাপন (৩৩) জানান, তার কাছে তথ্য সংগ্রহকারী এসে শুধু নাম আর মোবাইল নম্বর নিয়ে গেছে । কিসের তথ্য সংগ্রহ করতে এসেছে সে বিষয়ে কিছু বলেনি।

হাতীবান্ধা উপজেলার পরিসংখ্যান কর্মকর্তা কৃষ্ণ চন্দ্র বর্মন বলেন, এমন অভিযোগ পেলে আবার নতুন করে তথ্য সংগ্রহ করা হবে। বিষয়টি আমরা দেখব।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলার জুনিয়র পরিসংখ্যান সহকারী নারায়ণ চন্দ্র কর্মকার বলেন, যেসব বাড়ি গণনায় বাদ পড়েছে সেগুলো খুঁজে বের করে আবার তথ্য নেয়া হচ্ছে।

লেখতে পারেন না এমন লোক কীভাবে কৃষি শুমারির কাজ পান- এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এসব নাম আমরা দেইনি, এসব নাম দলীয় নেতারাই দিয়েছেন।

লালমনিরহাট জেলা পরিসংখ্যান অফিসের উপ-পরিচালক ইমরান হোসেন প্রধান বলেন, এসএসসি পাস করেনি এমন ব্যক্তি কৃষি শুমারির তথ্য সংগ্রহকারীর দায়িত্ব পেয়েছেন এমন তথ্য আমার জানা নেই। যদি কেউ থাকে খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেয়া হবে। কৃষিশুমারিতে যাদের তথ্য নেয়া হয়নি কয়েকদিনের মধ্যে তাদের তথ্য নেয়া হবে।

রবিউল হাসান/আরএআর/এমএস