সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার আওয়ামী লীগের এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্বশুর ও জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিপাকে সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ। শোক প্রকাশ করে সাঁটানো ব্যানার নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র সমালোচনা।
Advertisement
তবে স্থানীয় ছাত্রলীগ নেতারা বলছেন, মুমিনুল হক যে জামায়াত নেতা তা তাদের জানা ছিল না। মূলত স্থানীয় এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভীর শ্বশুর ও মহিলা আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য রিজিয়া রেজা চৌধুরীর বাবার মৃত্যুতে শোক জানানো হয়েছে মাত্র।
স্থানীয় সূত্র জানায়, সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার বিভিন্ন এলাকায় মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে ব্যানার সাঁটানো হয়েছে।
ব্যানারে লেখা আছে, ‘সাতকানিয়া-লোহাগাড়ার এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী এমপি মহোদয়ের শ্বশুর ও রিজিয়া রেজা চৌধুরীর শ্রদ্ধেয় পিতা আলহাজ মাওলানা মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে আমরা গভীরভাবে শোকাহত। আমরা মরহুমের রুহের আত্মার মাগফিরাত কামনা ও শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। শোকার্তে আব্দুল মান্নান, সভাপতি, সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগ।’
Advertisement
এদিকে মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে সাঁটানো ব্যানারের ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার পরপরই বইছে সমালোচনার ঝড়। আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
ব্যানার সাঁটানো আব্দুল মান্নানের সঙ্গে মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।
তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রলীগ নেতা জাগো নিউজকে বলেন, ‘সাতকানিয়ায় বর্তমানে ছাত্রলীগের কোনো কমিটি নেই। কয়েক মাস আগে ছাত্রলীগের কমিটি বিলুপ্ত সভাপতি এই আব্দুল মান্নান। তবে যারাই এ কাজ করেছে, তারা এ কাজ জেনে বুঝে করেনি।’
শ্বশুরের জামায়াতি পরিচয় গোপন করেছেন নদভী : জামায়াতে ইসলামীর কর্মপরিষদ সদস্য মুমিনুল হক চৌধুরীর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করে বিপাকে শুধু সাতকানিয়া উপজেলা ছাত্রলীগই পড়েনি। গতকাল চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের মাঠে (প্যারেড গ্রাউন্ড) মুমিমুল হক চৌধুরীর জানাজা নিয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রশিবিরের মধ্যে যে মারামারি তার পেছনেও কাজ করেছে আওয়ামী লীগ দলীয় এমপি প্রফেসর ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজাম উদ্দিন নদভী কর্তৃক নিজের জামায়াতি শ্বশুরের পরিচয় গোপন।
Advertisement
চট্টগ্রাম সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ আবুল হাসান জানান, শনিবার দুপুর সোয়া ১২টার দিকে এমপি নদভী তাকে টেলিফোন করে প্যারেড মাঠে তার শ্বশুরের জানাজার জন্য সিএমপি কমিশনারের অনুমতি নেয়া হয়েছে বলে জানান। তিনি কলেজের মাঠে জানাজায় সহযোগিতা করতেও অনুরোধ করেন।
সে সময় কলেজের অডিটোরিয়ামে ঈদ পুনর্মিলনী চলছিল। সংসদ সদস্যের ফোন পেয়ে তিনি অনুষ্ঠানে সমবেত শিক্ষকদের প্যারেড মাঠের জানাজায় অংশ নিতে অনুরোধ করেন।
তার দাবি, কলেজ মাঠে জানাজার বিষয়টি জানানোর সময় এমপি নদভী শুধু মুমিনুল হক চৌধুরীকে তার শ্বশুর হিসেবে উল্লেখ করেন। মুমিনুল হক চৌধুরী যে জামায়াতের শীর্ষ নেতা, সে বিষয়ে কোনো তথ্য তিনি দেননি।
একইভাবে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের (সিএমপি) কমিশনার মাহাবুবর রহমানও বলেছেন, মুমিনুল হক চৌধুরী যে জামায়াতের রাজনীতিতে জড়িত সে বিষয়ে এমপি নদভী তাকে কোনো ধারণা দেননি। এমপির শ্বশুর হিসেবেই প্যারেড মাঠে তার জানাজার অনুমতি দেয়া হয়েছিল।
আবু আজাদ/এমআরএম/পিআর