মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেছেন, তিনি ইরানের সাথে যুদ্ধ চান না। কিন্তু সংঘাত বেধে গেলে, ইরানকে নিশ্চিহ্ন করে দেয়া হবে। দেশটির সংবাদমাধ্যম এনবিসিকে ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্র আলোচনা করতে চায়, কিন্তু ইরানকে পরমাণু অস্ত্র তৈরি করতে দেয়া হবে না।
Advertisement
চলতি সপ্তাহে ইরান একটি মানববিহীন আমেরিকান ড্রোন গুলি করে ভূপাতিত করে এবং তার জবাবে ইরানে সামরিক হামলার প্রস্তুতি নিয়েও পরে তা স্থগিত করেন ট্রাম্প।
তার সেই সিদ্ধান্তের কারণ ব্যাখ্যা করে ট্রাম্প বলেন, ইরানে আঘাত হানার সব প্রস্তুতি যখন সম্পন্ন, তখন তিনি জেনারেলদের জিজ্ঞেস করেন যে, এ আক্রমণে কত লোক মারা যেতে পারে? জেনারেলরা তাকে জবাব দেন, ১৫০ জন ইরানি মারা যাবে।
আরও পড়ুন : তীব্র উত্তেজনা : ইরানের আকাশসীমা এড়িয়ে চলছে ভারতীয় বিমান
Advertisement
তখন ট্রাম্প শেষ মুহূর্তে আক্রমণের সিদ্ধান্ত বাতিল করেন। কারণ তার ভাষায়, এটা আমার ভালো লাগেনি, চালকবিহীন ড্রোন ভূপাতিত করার জন্য পাল্টা আক্রমণে ১৫০ জন ইরানি মারা যাবে; এটা আমার কাছে অসঙ্গত মনে হয়েছে।
আকাশসীমা লঙ্ঘন করার অভিযোগে ইরান গত বৃহস্পতিবার যুক্তরাষ্ট্রের ড্রোনটিকে গুলি করে নামিয়ে দিয়েছিল। তার পর থেকেই দেশ দুটির মধ্যে সামরিক উত্তেজনা তৈরি হতে থাকে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প ইরানি স্থাপনায় হামলার নির্দেশ দিয়ে তা প্রত্যাহারও করে নিলেও উত্তেজনা এখনও প্রশমিত হয়নি। বরং দুই দেশের পক্ষ থেকে আক্রমণাত্মক কথাবার্তা অব্যাহত রয়েছে।
ইরানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মার্কিন ড্রোনকে ধ্বংস করায় দেশটির সামরিক বাহিনীর প্রশংসা করেছে।মন্ত্রণালয়ের একজন মুখপাত্র আব্বাস মুসাভি বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্র যে কোন ধরনের আগ্রাসী সিদ্ধান্তই গ্রহণ করুক না কেন, ইরান সেটা প্রতিরোধ করবে।
আরও পড়ুন : শপিং মলের ড্রেসিং রুমে ধর্ষণ করেছেন ট্রাম্প!
Advertisement
অন্যদিকে, ওয়াশিংটনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বলেছেন, যুদ্ধ যদি লেগেই যায়, ইরানকে ধ্বংস করে দেয়া হবে।ইরানের নেতাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আপনাদের পারমাণবিক অস্ত্রের অধিকারী হতে দেয়া হবে না। যদি এ নিয়ে আলোচনায় বসতে চান, ভালো কথা। না হলে ভেঙে পড়া অর্থনীতির মধ্যেই বহুকাল কাটাতে হবে।
বিবিসির মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক বিশ্লেষক অ্যালান জনস্টন বলছেন, ট্রাম্প ভালো করেই জানেন যে ইরানের উপর সামরিক হামলার একটা বড় রকমের ঝুঁকি আছে। এই যুদ্ধ তখন ইরানের সীমান্ত ছাড়িয়ে খুব দ্রুতই গোটা মধ্যপ্রাচ্যে ছড়িয়ে পড়তে পারে।
আরও পড়ুন : যুক্তরাষ্ট্রকে জ্বালিয়ে দেয়ার হুমকি ইরানের
এ রকম উত্তেজনার মধ্যে বেশ কয়েকটি আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থা ইরানের আকাশসীমার ভেতর দিয়ে তাদের বিমান চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে। এতিহাদ এয়ারলাইন্স পরিহার করছে হরমুজ প্রণালী ও ওমান উপসাগরের উপর দিয়ে যাওয়া আসা। কিন্তু ইরানের বিমান চলাচল মন্ত্রণালয় বলছে, তাদের আকাশসীমা নিরাপদ।
উত্তেজনা প্রশমনের চেষ্টা হিসেবে ব্রিটিশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্কতা এন্ড্রু মারিসন রোববার তেহরান সফরে যাচ্ছেন। বিবিসি বাংলা।
এসআইএস/এমকেএইচ