দেশজুড়ে

১০ লাখ টাকায় পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরির চুক্তি

টাঙ্গাইলে কনস্টেবল পদে চাকরি দেয়ার কথা বলে টাকা লেনদেনের সময় হাতেনাতে পুলিশের এক উপপরিদর্শকসহ (এসআই) দুজনকে আটক করেছে গোয়েন্দা পুলিশ। শুক্রবার রাত ৮টায় টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে থেকে তাদের আটক করা হয়।

Advertisement

আটকরা হলেন- জামালপুর কোর্ট পুলিশের এসআই মোহাম্মদ আলী ও জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার মো. খায়রুল বাশারের স্ত্রী শাহানাতুল আরেফিন সুমি (৩৫)। এসআই মোহাম্মদ আলী টাঙ্গাইল সদর উপজেলার চৌবাড়িয়া গ্রামের মৃত ইনছান আলীর ছেলে।

শনিবার দুপুরে নিজ কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে টাঙ্গাইলের পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।

পুলিশ সুপার জানান, শেরপুর সদর থানার তারাগড় নামাপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল বারিকের ছেলে মো. ওয়াজেদ আলী তার ভাতিজা কবির হোসেনকে ১০ লাখ টাকার বিনিময়ে পুলিশ কনস্টেবল পদে চাকরি দিতে এসআই মোহাম্মদ আলী ও সুমির স্বামী খায়রুল বাশারের সঙ্গে চুক্তি করেন। সেই ১০ লাখ টাকা নিয়ে ওয়াজেদ আলী মাইক্রোবাসযোগে এসআই মোহাম্মদ আলী, খায়রুল বাশার ও তার স্ত্রী সুমির সঙ্গে শুক্রবার জামালপুর থেকে টাঙ্গাইলের উদ্দেশ্যে রওনা হন। গাড়িতে বসেই তারা টাকা লেনদেন করেন।

Advertisement

তিনি আরও জানান, পরবর্তীতে টাঙ্গাইল পুলিশ সুপারের কার্যালয়ের সামনে গাড়িতে ওয়াজেদ আলীকে রেখে ১০ লাখ টাকা ভ্যানিটি ব্যাগে করে সুমি পুলিশ সুপারের কার্যালয়ে যান। কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরি করে সুমি নিচে গিয়ে ভ্যানিটি ব্যাগ থেকে টাকা তার স্বামী কথিত সাংবাদিক খায়রুল বাশারের কাছে দেন। টাকাগুলো নিয়ে খায়রুল বাশার চলে যান। বিষয়টি ওয়াজেদ আলী দেখে ফেলায় তার মনে সন্দেহের সৃষ্টি হয়। ওয়াজেদ আলী পুলিশ সুপারের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে চাইলে সুমি তাকে জানায়, এসপির গেস্ট এসেছে, তিনি এখন দেখা করতে পারবেন না। এরপর সুমি ও এসআই মোহাম্মদ আলীর সঙ্গে ওয়াজেদ আলীর বাগবিতণ্ডা ও হট্টগোলের সৃষ্টি হয়।

এ সময় ঘটনাস্থলের পাশ দিয়ে ডিবি পুলিশের এসআই ফরিদ উদ্দিনসহ কয়েকজন যাওয়ার সময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করলে ওয়াজেদ আলী বিস্তারিত খুলে বলেন। তখন তাদের আটক করে সুমির ব্যাগ থেকে ১ লাখ ৯৫ হাজার টাকা, সুমির স্বামীর নামে সাংবাদিক আইডি কার্ড ও তাদের ব্যবহৃত একটি মাইক্রোবাস জব্দ করা হয়। সুমিকে জিজ্ঞাসা করলে তিনি বাকি ৮ লাখ ৫ হাজার টাকা তার স্বামী খায়রুল বাশারের কাছে রয়েছে বলে জানান।

পুলিশ সুপার সঞ্জিত কুমার রায় বলেন, শনিবার এসআই মোহাম্মদ আলী, খায়রুল বাশার ও তার স্ত্রী শাহানাতুল আরেফিন সুমির নামে প্রচলিত আইনে মামলা করা হয়েছে। পরে এ মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে দুজনকে আদালতে পাঠানো হয়েছে।

তিনি বলেন, আগামী ১ জুলাই টাঙ্গাইল পুলিশ লাইন্স থেকে পুলিশ কনস্টেবল পদে লোক নেয়া হবে। সেখানে সরকার নির্ধারিত ফি ১০০ টাকা ও ফরম ৩ টাকার বিনিময়ে চাকরি দেয়া হবে। এ বিষয়ে কোনো অবৈধ টাকা লেনদেন করলে তার বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

Advertisement

আরিফ উর রহমান টগর/আরএআর/এমকেএইচ