ছাদের রডে মরিচা ধরেছে, ছাদ থেকে খসে পড়ছে পলেস্তারা। আবার কোথাও কোথাও দেয়ালে ধরেছে ফাটল। এমন ঝুঁকিপূর্ণ শ্রেণিকক্ষেই শিক্ষক-শিক্ষার্থীর কলরব। মৃত্যুঝুঁকি নিয়েই প্রতিদিন চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এমন ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ে নিজের সন্তানকে পাঠিয়ে আতঙ্কের মধ্যে থাকেন অভিভাবকরা। কিন্তু সেদিকে নজর নেই সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের। এমনই চিত্র পার্বত্য খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা উপজেলা সদর থেকে ২৩ কিলোমিটার দূরের কালাপানি ডিপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের।
Advertisement
নতুন বিদ্যালয় ভবন নির্মাণের জন্য বারবার আবেদন করেও মিলছে না বরাদ্দ। আর তাই ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে দুর্ঘটনার আশঙ্কার মধ্যেই পাঠদান চলছে বলে জানান কালাপানি ডিপি পাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. জয়নাল আবেদীন।
জানা গেছে, ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে বিদ্যালয় ভবনটি নির্মাণ করা হলেও দুই যুগের মাথায় ভবনটির অবস্থা খুবই নাজুক হয়ে গেছে। কাজের গুণগত মান নিশ্চিত না করার কারণেই এমনটা হয়েছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা। সামান্য বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পানি পড়ে। ভিমের পলেস্তারা খসে পড়েছে। ছাদের রডেও মরিচা ধরেছে। ফাটল ধরেছে দেয়ালেও।
বিদ্যালয়ে আসা একাধিক শিক্ষার্থীর সঙ্গে আলাপকালে তারা জানায়, প্রায়ই বিদ্যালয়ের ছাদ থেকে কংক্রিট খসে মাথায় পড়ে। শ্রেণিকক্ষে তখন খুব ভয় লাগে। বর্ষাকালে একটু বৃষ্টি হলেই ছাদ থেকে পানি পড়ে। এ সময় পড়াশোনা বিঘ্নিত হয়।
Advertisement
একই অবস্থা ওই উপজেলার করইল্যাছড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়েরও। বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. বেলাল আহমদ বলেন, বিদ্যালয়টির অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। পাঁচটি কক্ষের মধ্যে তিনিটিই জরাজীর্ণ। ধসে পড়ার আশঙ্কায় ওই তিনটি কক্ষ পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। অবশিষ্ট কক্ষে কোনো রকমে কার্যক্রম চলছে।
শুধুমাত্র এ দুটি বিদ্যালয়ই নয়। পার্বত্য খাগড়াছড়িতে ৮৩টি প্রাথমিক বিদ্যালয়কে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করেছে খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। ঝুঁকিপূর্ণ বিদ্যালয়ের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতরে পাঠানো হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্র নিশ্চিত করেছে। খাগড়াছড়ি জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার ফাতেমা মেহের ইয়াসমিন জানান, খাগড়াছড়ির ৮৩টি বিদ্যালয় ঝুঁকিপূর্ণ। ইতোমধ্যে কিছু কিছু বিদ্যালয় সংস্কারের জন্য বরাদ্দ পাওয়া গেছে। বরাদ্দ পেলে বাকি স্কুলগুলোর সংস্কার কাজ শুরু হবে।
মুজিবুর রহমান ভুইয়া/এফএ/এমএস
Advertisement