লক্ষ্যটা ৩৮২ রানের। বিশ্বকাপের ইতিহাসে এত বড় লক্ষ্য তাড়া করেনি জেতেনি কোনো দল। পুরো ওয়ানডে ইতিহাসেই দ্বিতীয় ইনিংসে এর চেয়ে বেশি রান করে জেতার রেকর্ড আছে মাত্র একটি। তাই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে আজ (বৃহস্পতিবার) জিততে হলে রেকর্ডবুকে তোলপাড় করতে হবে বাংলাদেশ দলকে।
Advertisement
যা একপ্রকার অসাধ্য সাধনের মতোই বলা চলে। তবু বাংলাদেশ দলের সঙ্গে একটিই বিষয়- সেটি হলো আশা। লক্ষ্য যতো বড়ই হোক, বুকে সাহস নিয়ে আশার ভেলায় যাত্রা শুরু করেছিল টাইগাররা। কিন্তু যতোই সময় গড়াচ্ছে, ততোই যেন ক্ষীণ হয়ে আসছে সে আশাটুকুও।
শুরুতেই দূর্ভাগ্যজনক রানআউটের পর হাল ধরেছিলেন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। সাকিব ফিরে গেলেও মুশফিককে নিয়ে এগুচ্ছিলেন তামিম। তিনি ফিরে যাওয়ার পর থিতু হতে পারেননি আগের ম্যাচেই দুর্দান্ত ইনিংস খেলা লিটন কুমার দাসও।
ফলে দায়িত্ব এখন বর্তেছে উইকেটরক্ষক ব্যাটসম্যান মুশফিকুর রহীম ও তার ভায়রা মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের কাঁধে। দুজন মিলে এখনও পর্যন্ত বেশ ভালোভাবেই সামলাচ্ছেন সে দায়িত্ব, এরই মধ্যে গড়ে ফেলেছেন ৩৩ রানের জুটি।
Advertisement
এ প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত ৩৫ ওভার শেষে বাংলাদেশ দলের সংগ্রহ ৪ উইকেটে ২০৮ রান। ব্যক্তিগত ফিফটি তুলে নিয়ে ৫২ রানে অপরাজিত মুশফিক। অপরপ্রান্তের ব্যাটসম্যান মাহমুদউল্লাহ খেলছেন ১৫ রান নিয়ে। শেষের ১৫ ওভারে করতে হবে আরও ১৭৪ রান।
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ইনিংসের চতুর্থ ওভারেই বাংলাদেশ শিবিরে আসে বড় ধাক্কা। দুর্ভাগ্যজনক রানআউটের শিকার হন সৌম্য সরকার।
প্যাট কামিন্সের বলটি মিডঅনে ঠেলে দিয়ে দৌড় দিয়েছিলেন তামিম ইকবাল, মাঝে ভুল বোঝাবুঝিতে ফেরত আসেন স্ট্রাইকিং এন্ডে।
কিন্তু ননস্ট্রাইক এন্ডে সৌম্য ফিরতে পারেননি, অ্যারন ফিঞ্চের সরাসরি থ্রোতে ভেঙে যায় স্ট্যাম্প। ৮ বলে ২ বাউন্ডারিতে সৌম্য সাজঘরের পথ ধরেন ব্যক্তিগত ১০ রানেই।
Advertisement
দ্বিতীয় উইকেটে ৭৯ রানের জুটি গড়েন সাকিব আল হাসান ও তামিম ইকবাল। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সাকিব ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন বিশ্বকাপে টানা পঞ্চম ফিফটির। কিন্তু দলীয় ১০২ রানের মাথায় তিনি আউট হন ব্যক্তিগত ৪১ রানে।
এর আগে অবশ্য প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে বিশ্বকাপের এক আসরে ৪০০'র বেশি রান করার কৃতিত্ব দেখান বিশ্বসেরা এ অলরাউন্ডার। পাঁচ ইনিংসে ১০৬.২৫ গড়ে এখনও পর্যন্ত তার সংগ্রহ ৪২৫ রান।
সাকিবের বিদায়ের পর তামিম তুলে নেন চলতি বিশ্বকাপে নিজের প্রথম ফিফটি। মুশফিকের সঙ্গে তার জুটিতে দলীয় সংগ্রহটাও এগুচ্ছিলো বলের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই। কিন্তু সুখ যেনো বেশিক্ষণ সয়নি তামিমের।
মিচেল স্টার্কের করা ২৫তম ওভারের প্রথম বলটি ছিলো অফস্টাম্পের বেশ বাইরে। থার্ডম্যান দিয়ে গলাতে গিয়ে উল্টো স্ট্যাম্পে টেনে নেন তামিম। থেমে যায় তার ৭৪ বলে খেলা ৬২ রানের ইনিংসটি।
আগের ম্যাচের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে উইকেটে আসেন লিটন কুমার দাস। কিন্তু প্রথম বলেই তাকে মরণঘাতী এক বাউন্সার দেন স্টার্ক। যা আঘাত হানে সোজা হেলমেটে। বেশ কিছুক্ষণ বন্ধ থাকে খেলা। প্রাথমিক সেবা নিয়ে খেলা শুরু করেন লিটন।
তখন আর মনেই হয়নি প্রথম বলেই মাথায় আঘাত পেয়েছেন তিনি। দারুণ ৩টি চারের মারে ১৬ বলে করে ফেলেন ২০ রান। কিন্তু আউট হয়ে যান লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়ে। আম্পায়ারের সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে রিভিউ নেন লিটন।
রিপ্লেতে দেখা যায় আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত না দিলে বেঁচে যেতে পারতেন তিনি। কিন্তু 'আম্পায়ার্স কল' আউট থাকায় ত্রিশতম ওভারের দ্বিতীয় বলে দলীয় ১৭৫ রানের মাথায় সাজঘরেই ফিরে যেতে হয় লিটনকে। এরপরই জুটি বাঁধেন মুশফিক ও মাহমুদউল্লাহ।
এসএএস