রোহিঙ্গাদের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তারা (রোহিঙ্গা) উখিয়ার বন-জঙ্গল ধ্বংস করছে। কক্সবাজারসহ আশেপাশের পরিবেশও ধ্বংস করছে। তারা পরিবেশ ধ্বংস করছে এগুলো দেখেও শুধুমাত্র মানবিক কারণে আশ্রয় দেওয়া হয়েছে।
Advertisement
বৃহস্পতিবার (২০ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস ও পরিবেশ মেলা ২০১৯ এবং জাতীয় বৃক্ষরোপন অভিযান ও বৃক্ষমেলা ২০১৯ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এবারে বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয় ‘বায়ু দূষণ’।
অনুষ্ঠানের শুরুতে পরিবেশ ও বনের ওপর একটি প্রামাণ্য চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন পরিবেশ বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন মন্ত্রণালয়ের সচিব আবদুল্লাহ আল মোহসীন চৌধুরী। বক্তব্য শেষে পরিবেশ ও বৃক্ষ মেলার উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। এরপর বৃক্ষ মেলার বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ছোটবেলায় যখন বাবার সঙ্গে উখিয়ায় বেড়াতে যেতাম তখন এমন রাস্তা ছিল না। জঙ্গলের ভেতরে পাহাড়ি রাস্তা পার হতে হতো। আজকে সেখানে রাস্তার অবস্থা কী দেখুন?
Advertisement
তিনি বলেন, মানবতার কারণে স্থান দিতে হয়েছে মিয়ানমার থেকে আসা রোহিঙ্গাদের। ১১ লাখ রোহিঙ্গা আমাদের দেশে অবস্থান করছে। বন তো আগেই কিছু নষ্ট হয়েছিল আর এখন তো পুরাই শেষ। ঠিক এভাবে মানব সভ্যতার যখন বিকাশ হয় তখন বনায়নও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তাতে আমাদের উন্নয়ন তো বন্ধ হয়ে থাকবে না। বনও রক্ষা করতে হবে, উন্নয়নও করতে হবে।
পরিবেশ দূষণে সবাইকে সচেতন হওয়ার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা নিজেরা আর ক’দিন থাকবো। কিন্তু আমাদের বংশধররা যেন সুন্দরভাবে বাঁচতে পারে, টিকে থাকতে পারে, সে জন্য শতবর্ষব্যাপী ডেল্টা প্ল্যান নিয়ে কাজ করছি।
প্রধানমন্ত্রী সবাইকে গাছ লাগানোর আহ্বান জানিয়ে বলেন, প্রত্যেকেই নিজের কর্মস্থল ও বাসস্থানে গাছ লাগাবেন। বনজ, ফলজ, ভেষজ গাছ লাগাবেন। ছেলে-মেয়েদেরও বৃক্ষরোপণ শেখাতে হবে। শুধু গাছ লাগালেই হবে না, পরিচর্যাও করতে হবে। প্রত্যেকে নিজের এলাকায় যত ইচ্ছে গাছ লাগাবেন। এতে কয়েক বছর পর টাকাও পাওয়া যায়, বছর বছর ফল পেলেও খুশি লাগে।
এ সময় শেখ হাসিনা আজিমপুর গার্লস স্কুলে পড়ার সময় বান্ধবীদের সঙ্গে নিয়ে গাছ লাগানোর স্মৃতিচারণও করেন।
Advertisement
সুন্দরবন রক্ষণাবেক্ষণে সরকারের কর্মসূচির কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সুন্দরবন পৃথিবীর সবচেয়ে বৃহৎ ম্যানগ্রোভ বন। এ বন রক্ষণাবেক্ষণে ব্যাপক কর্মসূচি নিয়েছি। সুন্দরবনের পরিবেশ রক্ষায় রয়েল বেঙ্গল টাইগারের বড় ভূমিকা রয়েছে। কারণ, বনে বেশি বাঘ থাকলে অনেকে ভেতরে গিয়ে বনের ক্ষতিকর কিছু করার সাহস পায় না।
তিনি বলেন, সুন্দরবনকে রক্ষায় নদীর লবণাক্ততা দূর করতে হবে। লবণাক্ততা দূর হলে হোগলা বন বেড়ে যায়। আর হোগলা বনে বাঘের বিচরণ বেড়ে যায়।
অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা, সংসদ সদস্য, সরকারের বিভিন্ন পদস্থ কর্মকর্তা, দফতর এবং বিভাগের প্রধানরা, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিক-রাষ্ট্রদূত ও হাইকমিশনাররা, উন্নয়ন সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
এফএইচএস/আরএস/পিআর