অস্ট্রেলিয়ার ক্রিকেটার ফিলিপ হিউজেস এর কথা মনে আছে? ২০১৪ সালের নভেম্বরে শেফিল্ড শিল্ডের একটি ম্যাচে শন অ্যাবটের এক বাউন্সারে বল কানের নিচে লাগলে সঙ্গে সঙ্গেই মাটিতে শুয়ে পড়েন এই ক্রিকেটার। সেই যে অজ্ঞান হলেন এরপর আর উঠতেই পারেননি তিনি। হাসপাতালে দুই দিন কোমায় থাকার পর অকালেই মৃত্যুবরণ করেন অমিত সম্ভাবনাময়ী এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান।
Advertisement
বিশ্বকাপে গতকাল (মঙ্গলবার) ইংল্যান্ড-আফগানিস্তান ম্যাচে সেই স্মৃতিটাই যেন ফিরে এল কিছুক্ষণের জন্য। ইনিংসের ৩০তম ওভারে ইংলিশ পেসার মার্ক উডের দ্রুতগতির একটি বাউন্সার মাথা বরাবর গিয়ে লাগে আফগান ব্যাটসম্যান হাশমতউল্লাহ শহিদির হেলমেটে। বল লাগার পরপরই অস্বস্তি বোধ করেন এই ব্যাটসম্যান। তাই তৎক্ষণাৎ মাঠেই শুয়ে পড়েন তিনি।
মাঠে মেডিকেল টিম আসার পর পুরোপুরি সুস্থ্য না হয়েও খেলার জন্য উঠে যান শহিদি। তার এই সাহসিকতার কারণে গ্যালারিতে থাকা দর্শকরা তালি দিলেও অনেকেই চমকে যান। এতো শক্তিশালী একটা বাউন্সারের আঘাত খাওয়ার পর এত তাড়াতাড়ি কিভাবে উঠে গেলেন এই ব্যাটসম্যান?
ম্যাচ শেষে এই প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়েছেন শহিদি। তিনি বলেন, ‘মা এর কারণে আমি খুব তাড়াতাড়ি উঠে গিয়েছিলাম। গত বছর আমি আমার বাবাকে হারিয়েছি। তাই মাকে কোন দুশ্চিন্তা দিতে চাইনি। আমার পুরো পরিবার এই খেলাটি দেখেছে। এমনকি আমার বড় ভাই মাঠে বসেই এই খেলা দেখছিল। আমার জন্য তাদেরকে কোনো চিন্তায় ফেলতে চাই না।’
Advertisement
বাউন্সারের শিকার হওয়ার পর আইসিসি চিকিৎসক এবং ফিজিওরা শহিদিকে মাঠ ছাড়ার নির্দেশ দেন। কিন্তু এসব কিছুর তোয়াক্কা না করে দলের হয়ে শেষ পর্যন্ত খেলে যান এই বামহাতি ব্যাটসম্যান। কেননা যত কিছুই হোক না কেন দলকে মাঝ পথে ছেড়ে কোথাও যেতে চান না তিনি।
শহিদি বলেন, ‘আমার হেলমেট মাঝখান থেকে ভেঙে গিয়েছিল। আইসিসির চিকিৎসক এবং আমাদের ফিজিও আমার কাছে আসার পর বলল, চল উঠে যাই। আমি তাদেরকে বলেছি, এই মুহূর্তে আমি আমার দলকে ছেড়ে চলে যেতে পারি না। আমাকে প্রয়োজন আছে দলের। তাই আমি আমার ব্যাটিং চালিয়ে গেছি।’
এএইচএস/এসএএস
Advertisement