বিশ্বে বাড়ছে যুদ্ধ, ধর্মীয় বিদ্বেষ, দেশের অভ্যন্তরীণ কোন্দল। আর এসব কারণে প্রতিনিয়তই ঘরবাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হচ্ছেন অসংখ্য মানুষ। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক সংস্থা ইউএনএইচসিআর সম্প্রতি তাদের এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, বিশ্বের ৭ কোটি মানুষ এখন বাস্তুচ্যুত।
Advertisement
ইউএনএইচসিআর এর ‘অ্যানুয়াল গ্লোবাল ট্রেন্ডস রিপোর্ট’ বলছে, গত বছর বিশ্বের ৭০.৮ মিলিয়ন মানুষ বাড়ি ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয়েছেন। যা আগের বছরের তুলনায় যা ২.৩ মিলিয়ন বেশি। এছাড়া গত ২০ বছর আগে এটি ছিল বর্তমানের অর্ধেক। প্রতিদিন গড়ে ৩৭ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হচ্ছেন।
জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক হাই কমিশনার ফিলিপ্পো গ্রান্ডি বলেছেন, ‘আমরা এই সংখ্যার মাধ্যমে কী দেখতে পাচ্ছি? এই সংখ্যা মানুষের মধ্যে দীর্ঘদিনের ক্রমবর্ধমান এই প্রবণতা বৃদ্ধির ইঙ্গিত। যুদ্ধ, ধর্মীয় বিদ্বেষ, দেশের অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে মানুষকে নিরাপত্তা দেয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে।’
বিশ্বের মোট জনসংখ্যার মধ্যে বাস্তচ্যুত হওয়ার সংখ্যাটা দিন দিন বেড়েই চলেছে। প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর সংস্থাটি যত বার এ নিয়ে জরিপ করেছে তার মধ্যে এবার এই সংখ্যাটা সর্বোচ্চ। ১৯৫১ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত যেখানে মোট জনসংখ্যার মধ্যে বাস্তুচ্যুত হওয়ার হারটা ছিল হাজারে ৩.৭ শতাংশ। কিন্তু ২০১৮ সালে এসে তা দাঁড়িয়েছে ৯.৩শতাংশে।
Advertisement
প্রতিবেদনে মূলত তিনটি দলের কথা বলা হয়েছে। প্রথম দলটি হলো শরণার্থী, যারা অভ্যন্তরীণ কোন্দল, যুদ্ধ ও ধর্মীয় বিদ্বেষের কারেণে বাড়িঘর ছেড়ে যেতে বাধ্য হয়েছেন। ২০১৮ সালে গোটা বিশ্বে শরণার্থীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৫.৯ মিলিয়ন। যা ২০১৭ সালের তুলনায় ৫ লাখ বেশি। যাদের মধ্যে ফিলিস্তিনের সাড়ে ৫ লাখ শরণার্থীও রয়েছে।
দ্বিতীয় দলটি হলো আশ্রয়প্রার্থী। যাদের সংখ্যা ৩৫ লাখ। এরা দেশের বাইরে জন্মগ্রহণ করেছে। যদিও এখন তারা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংস্থার তদারকির মধ্যে আছে কিন্তু তাদেরকে শরণার্থীর স্বীকৃতিও দেয়া হচ্ছে না। তাদেরকেও তালিকায় রাখা হয়েছে।
তৃতীয় দলটি হলো দেশের ভেতরেই বাস্তচ্যুত ব্যক্তি। অর্থাৎ দেশেই আছে কিন্তু নিজের বসতভিটায় নেই। এদেরকে বলা হচ্ছে আইডিপি। অর্থাৎ ইন্টারনালি ডিসপ্লেসড পারসনস। যাদের সংখ্যাও নেতাহ কম নয়। গোটা বিশ্বে এরকম মানুষ আছেন এখন প্রায় ৪ কোটি।
গোটা বিশ্বে যত শরণার্থী আছে তাদের দুই-তৃতীয়াংশ হলো সিরিয়া, আফগানিস্তান, দক্ষিণ সুদান, মিয়ানমার এবং সোমালিয়ার। আর এই তালিকায় সিরিয়া আছে সবার উপরে। দেশটি থেকে মোট শরণার্থীর সংখ্যা প্রায় ৭০ লাখ। সিরিয়ার পর ২৭ লাখ শরণার্থী নিয়ে আফগানিস্তান তালিকার দুই নম্বরে রয়েছে।
Advertisement
এসএ/এমএস