প্রবাস

১১ মাস অচেতন সেই মনোয়ার দেশে ফিরছেন আজ

সৌদি আরবের এক হাসপাতালে ১১ মাস ধরে অচেতন থাকা মনোয়ার হোসাইন দূতাবাসের সহযোগিতায় দেশে ফিরছেন আজ। কর্মস্থল থেকে বাসায় ফেরার পথে সৌদি নাগরিকের একটি গাড়ি ধাক্কা দেয় মনোয়ার হোসাইনের বাইককে। সঙ্গে সঙ্গে ছিন্ন-ভিন্ন হয়ে মাটিতে লুটে পড়েন মনোয়ার এবং তার সঙ্গে থাকা তাজুল ইসলাম নামে আরেক বাংলাদেশি।

Advertisement

জানা গেছে, ওই সময় তাদের দুইজনকে দেশটির কিং ফাহাদ হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করানো হয়। ভর্তির তিনদিন পর মারা যান মৌলভীবাজারের তাজুল ইসলাম। মাথা, মেরুদণ্ড ও পায়ে আঘাত পেয়ে ১১ মাস অচেতন ছিলেন প্রবাসী মনোয়ার হোসেন।

কিং ফাহাদ হাসপাতালে মনোয়ার হোসাইনের চিকিৎসা চললেও তার শারীরিক উন্নতি হচ্ছিল না। এদিকে দেশে পাঠানোর মতো তার কাছে ছিল না কোনো অর্থ ও পরিচিত লোকজন। দুর্ঘটনার পর তার দেখাশোনার দায়িত্বে ছিলেন এক সহকর্মী। আর্থিক অবস্থা ভালো না থাকায় রোগীকে খুব বেশি সহযোগিতা করতে পারেনি।

এভাবে কেটে যায় মাসের পর মাস। পরবর্তীতে অচেতন থাকা মনোয়ার হোসাইনের খবর নেন রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসে। যোগাযোগ করা হয় সহকর্মীর সঙ্গে। বিষয়টি আমলে নিয়ে রিয়াদ দূতাবাসের রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

Advertisement

দূতাবাস থেকে নির্দেশ দেয়া হয়, মনোয়ার হোসাইনকে দেশে পাঠানোর জন্য। পরে তাকে মেডিকেলে দেখতে যান রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মাদ বাসির।

দুর্ঘটনার যাবতীয় খরচ কোম্পানি থেকে ব্যবস্থা করে দেয় রিয়াদ বাংলাদেশ দূতাবাসের লেবার উইংয়ের আইন সহায়তাকারী মামুনুর রশিদ। কয়েক মাস ধরে সবকিছু ঠিকঠাক করে মনোয়ার দেশে ফিরছেন আজ।

এদিকে মনোয়ার হোসাইনের চিকিৎসাবাবদ রাষ্ট্রদূত গোলাম মসীহ নিজস্ব তহবিল থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা এবং তার সঙ্গে যাওয়ার জন্য অপর আরেক বাংলাদেশিকে একটি বিমানের টিকিটের ব্যবস্থা করে দেন। পাশাপাশি দূতাবাস থেকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড বরাবর মনোয়ার হোসাইনের দেশে সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়।

মনোয়ার হোসাইনের বিষয়ে দূতাবাসের ফার্স্ট সেক্রেটারি মোহাম্মাদ বাসিরের সঙ্গে আলাপকালে তিনি জাগো নিউজকে বলেন, প্রবাসীরা হচ্ছেন দেশের এক একটা প্রতিভা। আমরা এখানে নিয়োজিত আছি শুধুমাত্র প্রবাসীদের সেবা করার জন্য। আমরা চেষ্টা করি সবসময় সব প্রবাসীর সুখে দুঃখে তাদের পাশে থাকতে।

Advertisement

তিনি বলেন, সৌদি আরব অনেক বড় একটা দেশ। এদেশে সব থেকে বেশি বাংলাদেশি রয়েছেন। এ ধরনের ঘটনা যখনই আমাদের নজরে আসে আমরা চেষ্টা করি সার্বিক সহযোগিতা করার। কোনো প্রবাসী যেন দূতাবাসে এসে ভোগান্তিতে না পড়েন সেদিকেও আমাদের নজর থাকে।

এমআরএম/বিএ