জাতীয়

মক্কায় এখনও বাড়ি ভাড়া করেনি তিন শতাধিক এজেন্সি

হজ মৌসুম শুরু হওয়ার আর মাত্র দুই সপ্তাহ বাকি। কিন্তু এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে ৫০ শতাংশেরও বেশি এজেন্সি বাড়ি বা হোটেল ভাড়া সম্পন্ন করতে পারেনি।

Advertisement

সৌদি সরকার অনুমোদিত বাড়ি বা হোটেল ভাড়ার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ হজ মিশনের কঠোর নিয়মনীতির কারণে বাড়ি ভাড়া করা সম্ভব হচ্ছে না বলে অভিযোগ বিভিন্ন হজ এজেন্সির। বাড়ি ভাড়া করতে না পারায় আসন্ন হজ মৌসুমে সামগ্রিক ব্যবস্থাপনায় বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে তারা মন্তব্য করেন।

আরও পড়ুন > স্বাস্থ্য পরীক্ষা করাতে গিয়ে চরম ভোগান্তি হজযাত্রীদের

আগামী ৪ জুলাই থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হচ্ছে। চলতি বছর সরকারি ব্যবস্থাপনায় সাত হাজার ১৯৮ জন এবং বেসরকারি ব্যবস্থাপনায় ৫৯৮ এজেন্সির মাধ্যমে এক লাখ ২০ হাজারসহ চলতি বছর মোট এক লাখ ২৭ হাজার ১৯৮ জনের পবিত্র হজ পালনের কথা রয়েছে।

Advertisement

ধর্ম মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অনুসারে, ১৫ জুনের মধ্যে সৌদি আরবের মক্কায় সব এজেন্সিকে বাড়ি ভাড়া সম্পন্নের নির্দেশনা প্রদান করা হয়। তবে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বেধে দেয়া সময় পেরিয়ে গেলেও এখন পর্যন্ত ৫০ শতাংশের বেশি এজেন্সি বাড়ি ভাড়া সম্পন্ন করতে পারেনি।

মক্কায় বাংলাদেশ হজ মিশন থেকে বলা হয়েছে, সৌদি সরকারের অনুমোদন রয়েছে এবং একসঙ্গে কমপক্ষে ৫০ জন হজযাত্রী একসঙ্গে রাখা যায়- এমন বাড়ি/হোটেলের চেয়ে ছোট বাড়ি/হোটেল ভাড়ার জন্য মিশন থেকে অনুমোদন দেয়া হবে না।

কিন্তু বিগত বছরের ধারাবাহিকতায় হজ এজেন্সিগুলো এবারও ছোট (যে বাড়িতে ২০/৩০জন রাখার ব্যবস্থা আছে) বাড়ি/হোটেল ভাড়া করতে চাইছে। কিন্তু এসব বাড়ি/হোটেল ভাড়া করার অনুমোদন দিচ্ছে না বাংলাদেশ হজ মিশন। হজ মিশনের এমন কড়াকড়ির কারণে আসন্ন হজ ব্যবস্থাপনায় বিরূপ প্রভাব পড়বে বলে আশঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

আরও পড়ুন > হজ চিকিৎসক দলে মনোরোগ বিশেষজ্ঞ নেই!

Advertisement

হজ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিমের কাছে এ সমস্যার সত্যতা সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, বাড়ি ভাড়া সম্পর্কিত সমস্যা সমাধানের জন্য তিনি আজ (১৭ জুন) মক্কা-জেদ্দা কাউন্সিলর (হজ) বরাবর লিখিত চিঠি পাঠাচ্ছেন।

হাব সভাপতির পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়, ৫০-এর নিচে সৌদি সরকার অনুমোদিত বাড়ি/হোটেল থাকলেও বাংলাদেশ হজ মিশন থেকে ওই সব বাড়ি/হোটেলের জন্য অনুমোদন পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি এজেন্সির প্রয়োজনে অনুমোদিত বাড়ি/হোটেলে ৫০-এর নিচে সিট ভাড়া নেয়ার বিষয়ে অনুমতি দিতে হজ মিশন দ্বিধান্বিত রয়েছে।

চিঠিতে আরও বলা হয়, হজ মৌসুমে অনুমোদিত প্রয়োজনীয় বাড়ি ভাড়া পাওয়া খুবই দূরহ। হজ ব্যবস্থাপনা শর্তে হজ এজেন্সি এবং হজযাত্রীদের কল্যাণে এ মহাযজ্ঞে এ ধরনের বিধিনিষেধ হজ ব্যবস্থাপনায় বিড়ম্বনার সৃষ্টি করবে।

আরও পড়ুন > সবচেয়ে বেশি ওমরা পালনের রেকর্ড করলেন দিলনাওয়াজ শাহ

‘প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ্য যে, রাজকীয় সৌদি সরকার ৫০-এর নিচে অনুমোদিত বাড়ি বা হোটেল ভাড়ার বিষয়ে এ ধরনের কোনো বিধিনিষেধ আরোপ করেনি। এমতাবস্থায় ৫০-এর নিচে অনুমোদিত বাড়ি বা হোটেল বিবেচনায় নেয়া এবং হজ এজেন্সির প্রয়োজনে অনুমোদিত বাড়ি বা হোটেলের যেকোনো সংখ্যক সিট ভাড়ার অনুমোদন প্রদান করে হজ ব্যবস্থাপনা আরও সুষ্ঠু ও সুচারুভাবে সম্পন্নের জন্য কাউন্সেলর হজকে বিনীত অনুরোধ জানানো হয়’- উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা এ প্রসঙ্গে বলেন, বিগত বছরগুলোতে দেখা গেছে, বিভিন্ন হজ এজেন্সি কম টাকায় মানহীন বাড়ি ভাড়া করে। একটি ছোট বাড়ি বা হোটেলে গাদাগাদি করে হজযাত্রীদের রাখা হয়। এবার হজযাত্রীদের কষ্ট লাঘবে কমপক্ষে ৫০জন হজযাত্রী একসঙ্গে থাকতে পারেন- এমন বাড়ি বা হোটেল ভাড়া নিশ্চিত করতে কঠোর হয়েছে হজ মিশন।

এমইউ/এমএআর/জেআইএম