দেশজুড়ে

এক নারী যখন ৭০০ নারীর আলোর দিশারী

কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় অসহায় ৭শ’ নারীকে কর্মসংস্থানের মাধ্যমে আলোর দিশা দেখিয়েছেন সংগঠক ফরিদা ইয়াসমিন। সমাজের অসহায় কোণঠাসা নারীদের কাজের সুযোগ দিয়ে সম্মানিত করছেন তিনি। সোনালি আঁশ পাটকে বিশ্ব দরবারে জনপ্রিয় করে তুলতে ফুটিয়ে তুলছেন চোখ ধাঁধানো কারুকার্যময় জিনিসপত্র। ইতোমধ্যে সেগুলো রফতানি হচ্ছে দেশ-বিদেশে।

Advertisement

এ বিষয়ে ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, ‘কর্মহীন নারীদের কাজের সুযোগ তৈরি করে দিতে ২০১৪ সালে নারী (নারী অ্যাসোসিয়েট ফর রিভাইভার ইনিসিয়েটিভ) নামে একটি সংগঠন খোলা হয় উলিপুর-চিলমারী সড়কের রামদাস ধণিরাম পাড়ায়। এসব নারীর সহযোগিতায় পাট শিল্পকে দৃষ্টিনন্দন ব্যবহার্য উপযোগী করে পণ্য উৎপাদন করা হয়। আমাদের উৎপাদিত পণ্যগুলো রুচিশীল মানুষের দৃষ্টি কাড়ে।’

‘অনেক কষ্ট করে তিনশটি তাঁত কিনে ছোট কারখানায় কাজ শুরু করি। তারপর শোরুম চালু করি। পাশাপাশি বিভিন্ন শিল্প মেলায় অংশগ্রহণ করে বায়ারদের মাধ্যমে বাজারজাত করি। ধীরে ধীরে আশপাশের বিধবা, তালাকপ্রাপ্ত, স্বামী পরিত্যক্তা ও হতদরিদ্র নারীদের সংগঠিত করে তাদের পরিবারে সচ্ছলতা আনার চেষ্টা করি।’ বলছিলেন নারী উদ্যোক্তা ফরিদা।

তিনি জানান, আমরা অনেক কষ্ট করে এগিয়ে যাচ্ছি। সরকারের বিভিন্ন ব্যাংক আমাদের সুযোগ-সুবিধা প্রদানে অনীহা প্রকাশ করে। ব্যাংকের দ্বারে দ্বারে ঘুরে লাভ হয়নি, শেষ পর্যন্ত জমি-জায়গা বিক্রি করে আমাদেরকে সামনে এগোতে হয়েছে।

Advertisement

শাহিনা, সেলিনা ও শেফালী জানান, পরিবারে আমরা কোণঠাসা হয়ে পড়ে ছিলাম। এখন এই কাজের মাধ্যমে সমাজে আমাদের সম্মান বেড়েছে। এখান থেকে মাসে আমরা ৬ থেকে ৮ হাজার টাকা বেতন পেয়ে পরিবারকে সহযোগিতা করছি।

আগে কাজ ছিল না। খুব কষ্টে দিন কাটাতে হতো। এখন কাজ পেয়ে সংসারে শান্তি এসেছে। ছেলে-মেয়েকে পড়াতে পারছি। নিজস্ব থাকার ঘর তৈরি করতে পেরেছি। অসুস্থ স্বামীর পাশে দাঁড়াতে পারছি বলে জানান তারা নারী।

বাংলাদেশ মহিলা পরিষদ কুড়িগ্রাম জেলা শাখার সভাপতি রওশন আরা চৌধুরী জানান, বাংলাদেশে নারীর উন্নয়ন ও ক্ষমতায়নে সরকার তৃণমূল পর্যায়ে নারী উদ্যোক্তা সৃষ্টি করছে এবং নতুন নতুন কর্মসংস্থান তৈরি করছে। আরও অধিক সংখ্যক নারী উদ্যোক্তা তৈরিতে সরকারের সহযোগিতা চান এই নারী নেত্রী।

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন জানান, নারীর ক্ষমতায়নে সরকার অনেক দূর এগিয়েছে। নারীরাও বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হয়ে পরিবারে সহযোগিতা করছে। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র শিল্পের মাধ্যমে তারা অগ্রসর হচ্ছে। সরকারও নানাভাবে তাদেরকে সহযোগিতা করছে।

Advertisement

এমআরএম/জেআইএম