দিনাজপুরের বীরগঞ্জে গোলাপগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলামের বেত্রাঘাতে আহত তিন শিক্ষার্থীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। আহতরা সকলেই ওই স্কুলের অষ্টম শ্রেণির `ক` শাখার শিক্ষার্থী।আহতরা হলেন, মরিচা ইউনিয়নের সাতখামার গ্রামের সাজেদুল ইসলামের মেয়ে মমতাজ পারভীন বর্ষা (১৪), একই এলাকার ছিড়াবাজু গ্রামের মো. রফিকুল ইসলামের মেয়ে শান্তা খাতুন ( ১৪), নিজপাড়া ইউনিয়নের দেবীপুর গ্রামের মো. জিয়ারুল ইসলামের মেয়ে তানজিনা আখতার।এদিকে, প্রধান শিক্ষকের শাস্তি দাবি জানিয়ে বিদ্যালয়ে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মনজুর এবং বীরগঞ্জ থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন ঘটনাস্থলে এসে বিক্ষুব্ধ জনতাকে শান্ত করার চেষ্টা চালান।শিক্ষার্থী প্রতিমা রায় জানান, সকাল সাড়ে ৯টায় প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম আমাদের বিজ্ঞান বিষয়ের ক্লাস নিতে আসেন। ক্লাসে এসে প্রথমে তিনি মমতাজ পারভীন বর্ষাকে রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিষয়ে লিখতে বলেন। সে না পারায় পরে শান্তা খাতুন এবং তানজিনা আখতার ডেকে তাদের লিখতে বলেন। কিন্তু কেউ না পারায় স্যার ক্ষিপ্ত হয়ে হাতে থাকা লাঠি দিয়ে বেধড়ক পেটাতে থাকে। পরে তাদের চিৎকারে অন্যান্য শিক্ষকরা ছুটে আসে। এরপর তাদের হাসপাতলে ভর্তি করা হয়।হাসপাতালে আহত শান্তা খাতুন জানান, স্যার রাসায়নিক বিক্রিয়ার বিষয়ে লিখতে বলে। আমি না পারায় আমাকে এলোপাতাড়িভাবে মারধর করে। এ সময় আমি পড়ে যায়। সহপাঠিরা আমাকে তুলে বেঞ্চে শুইয়ে দেয়। পড়ে আমাকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়। আমার পায়ে অনেক ব্যথা।অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক মো. শহীদুল ইসলাম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি তাদের সামান্য শাসন করেছি। দুই একটা মার দিয়েছি। একজন পিতা হিসেবে কন্যাকে যেভাবে শাসন করে আমি সেটি করেছি।বিদ্যালয়ের সভাপতি হিমাংসু চন্দ্র চন্দ জানান, আমরা পরিচালনা পর্ষদ তাৎক্ষণিকভাবে সিদ্ধান্ত নিয়ে তাকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছি। পরে তদন্ত কমিটি গঠন করে তদন্ত সাপেক্ষে সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাসেল মনজুর ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত বিদ্যালয়ের সভাপতি আমাকে অবহিত করেছে। আমি পাঁচ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠনের পরামর্শ প্রদান করেছি। তদন্ত রিপোর্ট পাওয়ার পর তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।এমদাদুল হক মিলন/এআরএ/আরআইপি
Advertisement