১০ দিন ঘুরিয়ে রাজশাহীর চারঘাট মডেল থানা পুলিশের ওসি এক প্রতিবন্ধীর মামলা নেননি। শরিফুল ইসলাম নামের ওই প্রতিবন্ধীর বাগান থেকে জোর করে আম পেড়ে নেয়ার ঘটনায় মামলা করতে থানায় গিয়েছিলেন।
Advertisement
চারঘাট মডেল থানা পুলিশের ওসি নজরুল ইসলাম মামলা না নেয়ায় আদালতে যান প্রতিবন্ধী শরিফুল। ১৩ জুন রাজশাহীর আদালতে মামলা করেছেন তিনি। তার মামলাটি আমলে নিয়ে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ভুক্তভোগী শরিফুল ইসলাম চারঘাট উপজেলার ডাকরা গ্রামের শামসুল ইসলামের ছেলে। অস্বাভাবিক ছোট দুই পা নিয়ে জন্ম নেন তিনি। তার ১০ বছরের ছেলেও একই ধরনের প্রতিবন্ধী।
বাবা-ছেলের এ অবস্থা দেখে পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী ও স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহরিয়ার আলম এক লাখ ২০ হাজার টাকা সহায়তা দেন। সেই টাকা ব্যবসায় বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্ত হলেন এই প্রতিবন্ধী।
Advertisement
প্রতিবন্ধী শরিফুল ইসলাম জানান, গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রতিবেশী চয়েন উদ্দিনের দুটি আম বাগান ইজারা নেন তিনি। এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় চার বছরের জন্য বাগান দুটি তার কাছে ইজারা দেন চয়েন। কিন্তু চয়েনের সঙ্গে দ্বন্দ্বের জের ধরে গত ২ জুন চয়েনের আত্মীয় আবদুল কাদের, মো. সেন্টু, সুমন ইসলাম কালু, বুলবুল আহমেদ, শরীফ উদ্দিন, আবদুস সোবহান ও নুরুল ইসলাম বাদশা তার দুটি বাগানের ২০টি গাছ থেকে প্রায় ১৪০ মণ আম পেড়ে নিয়ে যান।
শরিফুল বলেন, আম পেড়ে নিয়ে যাওয়ায় আমার প্রায় এক লাখ ৬০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে। এ নিয়ে ওই দিনই থানায় মামলা করতে যাই। প্রতিদিন বিকেল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত বসিয়ে রেখে ফিরিয়ে দিয়েছেন ওসি। এভাবে ১০ দিন ঘুরিয়েও মামলা নেননি ওসি। অবশেষে ১৩ মে রাজশাহীর আদালতে সাতজনের বিরুদ্ধে মামলা করি আমি।
মামলা না নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে ওসি নজরুল ইসলাম বলেন, শরিফুল ইসলাম বাগান ইজারা নেননি। বাগান মালিক চয়েন শরিফুলকে দিয়ে মামলা করাতে চেয়েছেন। সেজন্য মামলা নেয়া হয়নি।
তবে শরিফুল ইসলাম এই প্রতিবেদককে ১০০ টাকার দুটি স্ট্যাম্পে লেখা চুক্তিপত্রের অনুলিপি দিয়েছেন। তাতে দেখা যাচ্ছে, গত বছরের ৬ ফেব্রুয়ারি চার বছরের জন্য চয়েন তার দুটি বাগান শরিফুলকে ইজারা দিয়েছেন।
Advertisement
১০০ টাকার দুটি স্ট্যাম্পে লেখা চুক্তিপত্রের অনুলিপির বিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথা বলতে রাজি হননি ওসি নজরুল ইসলাম।
ফেরদৌস সিদ্দিকী/এএম/জেআইএম