দেশজুড়ে

ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়ে ২০ গরুর মৃত্যু

রাজশাহীতে গরুর ক্ষুরা রোগের প্রাদুর্ভাব দেখা দিয়েছে। গত দু’ সপ্তাহে বিভিন্ন এলাকার অন্তত ২০টি গরু মারা গেছে বলে জানা গেছে। এছাড়া কয়েকশ গরু এ রোগে আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এতে ঈদ-উল-আযহাকে সামনে রেখে গরু খামারীরা দিশেহারা হয়ে পড়েছেন। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাজশাহীর পবা উপজেলায় সব চেয়ে বেশি গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হয়েছে। গত দু’ সপ্তাহে উপজেলার দাদপুর গ্রামের রেজাউল করিমের ২টি, আকছাদের ১টি, হাসেমের ১টি, মিনারুলের ১টি, মদন হাটিতে ৩ টি ও দারুষার দেবের পাড়ায় মৃত মোন্তাজের ছেলের ১টি, শ্রীপুরে ১টিসহ বিভিন্ন এলাকায় গরু মারা যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। এছাড়াও বিভিন্ন এলাকায় কয়েকশ গরু আক্রান্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তবে অনেক খামারী আক্রান্ত গরু জবাই করে ব্যবসায়ীদের কাছে বিক্রয় করে দিচ্ছে। তাছাড়া আক্রান্ত এলাকায় পশু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ইউনিয়ন পর্যায়ে স্বেচ্ছাসেবীর মাধ্যমে ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে। পবা উপজেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ডা. ইসমাইল হক জাগো নিউজকে জানান,  ক্ষুরা রোগ সাধারণত একটি ভাইরাসজনিত রোগ। চলতি ঈদ মৌসুমে ভারতীয় ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরু দেশে প্রবেশ করার কারণে এ রোগের প্রকোপ বেশি দেখা যাচ্ছে। এ রোগে আক্রান্ত হয়ে গরু মারা যায় না। তবে এ রোগে আক্রান্ত গরু দূর্বল হয়ে যায়। সে সময় যদি কোনো খামারী মোটাতাজাকরণের জন্যে ভারতীয় ট্যাবলেট স্টোরয়েড বা গ্রোথ হরমোন জাতীয় ট্যাবলেট খাওয়ায় তাহলে গরুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যওয়ায় চিকিৎসা সত্ত্বেও ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরুকে বাঁচানো যায় না। ফলে গরু মারা যেতে পারে। ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরুর মাংশ মানবদেহের কোনো ক্ষতি করে না। তবে মোটাতাজাকরণের ট্যাবলেট, ইনজেকশন দেয়া গরুর মাংশ দীর্ঘ মেয়াদী খেলে মানব শরীরে কিডনি, হার্টসহ ক্যান্সার রোগে আক্রান্ত হতে পারে। তবে বিভিন্ন এলাকায় ক্ষুরা রোগের খবর পেয়ে ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবীদের মাধ্যমে অসুস্থ গরু চিহ্নিত করে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে এবং সুস্থ গরুকে ক্ষুরা রোগের প্রতিষেধক ভ্যাকসিন দেয়া অব্যাহত রয়েছে।পবা পশু হাসপাতালের ভেটেনারি সার্জন ডা. সম্পা রানী দাস জাগো নিউজকে জানান, উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত গরু হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এছাড়াও বিভিন্ন গ্রামে ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত থেকে বাঁচাতে গরুকে ভ্যাকসিন দেয়া হচ্ছে। মূলত বিভিন্ন হাট থেকে কিনে আনা গরু এবং যে সকল গরুকে হাটে তোলা হয়েছে সে সকল গরু ক্ষুরা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে বেশি। এ সকল আক্রান্ত গরুর মাধ্যমে গ্রামের অন্যান্য গরুগুলো এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ব্যাপারে রাজশাহী জেলা প্রাণি সম্পদ কর্মকর্তা ড. মিজানুর রহমান জাগো নিউজকে জানান, তাদের জনবলের ব্যাপক স্বল্পতা রয়েছে। রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় গরুর ক্ষুরা রোগের খবর পেয়ে উপজেলা পশু হাসপাতাল ক্ষুরা রোগ প্রতিরোধে ভ্যাকসিন কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছে।শাহরিয়ার অনতু/এসএস/আরআইপি

Advertisement