আইন-আদালত

নিঃশর্ত ক্ষমা চাইলেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান

হাইকোর্টের তলবে হাজির হয়ে আদালতের কাছে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেছেন নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মাহফুজুল হক।

Advertisement

বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ডস অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউশনের (বিএসটিআই) পরীক্ষায় অকৃতকার্য হওয়া নামি-দামি কোম্পানি ও প্রতিষ্ঠানের নিম্নমানের (সাব-স্ট্যান্ডার্ড) ৫২ পণ্য বাজার থেকে অবিলম্বে না সরানোয় গত ২৩ মে তাকে তলব করেছিলেন হাইকোর্ট।

রোববার হাইকোর্টের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চে হাজির হয়ে এ ক্ষমা প্রার্থনা করেন তিনি। এরপর তাকে ব্যক্তিগত হাজিরা থেকে অব্যাহতি দেন আদালত।বাংলাদেশ নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী ফরিদুল ইসলাম ও বিএসটিআইয়ের পক্ষে ব্যারিস্টার এম আর হাসান মামুন। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।

মামলার শুনানিকালে আদালত বলেন,শুধু বিশেষ কোন মাস বা উপলক্ষকে কেন্দ্র করে নয়, আর ৪০৬টি পণ্য নিয়ে নয়, দেশের সব পণ্য নিয়ে সারা বছরই মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান চালাতে হবে বলে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

Advertisement

পরে শর্ত হিসেবে মোহাম্মদ মাহফুজুল হক আদালতকে বলেন, ‘বিশেষ কোনো মাস বা উপলক্ষকে কেন্দ্র করে নয়। সারাবছরই ভেজাল ও মানহীন পণ্যের বিরুদ্ধে অভিযান অব্যাহত রাখা হবে, ভবিষ্যতে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নে সতর্ক থাকা হবে এবং জনবল কম থাকলে তা বৃদ্ধি করা হবে।’

এসব শর্তের ভিত্তিতে মোহাম্মদ মাহফুজুল হককে আদালত অবমাননার অভিযোগ থেকে ক্ষমা করে অব্যাহতি দেন হাইকোর্ট।

এর আগে, ২৩ মে মোহাম্মদ মাহফুজুল হকের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুলও জারি করেছিলেন হাইকোর্ট।

সম্প্রতি ৪০৬টি খাদ্যপণ্যের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে বিএসটিআই। এর মধ্যে ৩১৩টি পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ৩১৩টির মধ্যে ৫২ পণ্য মানহীন বলে প্রতিবেদন দেয় মান নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থাটি। বাকি ৯৩ পণ্যের পরীক্ষার ফলাফল প্রতিবেদন ১৬ জুনের মধ্যে দিতে বিএসটিআইকে নির্দেশ দেন আদালত। সে অনুযায়ী বিএসটিআই ৯৩ পণ্যের মান পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশ করে। এর মধ্যে ২২টি পণ্য নিম্নমানের বলে জানায় তারা।

Advertisement

এর আগে ১২ মে এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট বাজার থেকে আইনানুসারে এসব পণ্য সরিয়ে নিতে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ওই আদেশ বাস্তবায়ন করে ২৩ মে আদালতে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়।

২৩ মে আদেশ বাস্তবায়নের প্রতিবেদন দেয় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ ও ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর। প্রতিবেদনে ৫২ পণ্যের একটির প্যাকেটও জব্দ করার বিষয়টি না থাকায় নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার রুল জারি করে তাকে তলব করা হয়।

তবে সারাদেশে ৫২ পণ্যের বিষয়ে প্রতিবেদন দেয়ায় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতরকে সন্তুষ্ট প্রকাশ করেন আদালত।

এফএইচ/জেএইচ/আরআইপি