‘বৃষ্টি ঝড়ে যায় দু চোখে সখী গো’ ও ‘‘দূরে কোথাও আছি বসে, হাত দুটি দাও বাড়িয়ে’খ্যাত গায়ক তৌসিফ আহমেদ। এই দুটি গান বদলে দিয়েছে তার ক্যারিয়ার। রাতারাতি তিনি পৌঁছে যান তরুণ শ্রোতাদের কাছে। এরপর বেশ কিছু রোমান্টিক-বিরহ মুডের গান দিয়ে তিনি প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন।
Advertisement
গান গাওয়ার পাশাপাশি লেখেনও তিনি, করেন সুর ও সংগীত। তবে দীর্ঘদিন ধরেই এই গায়ক রয়েছেন আলোচনার বাইরে। কেন? খোঁজ নিয়ে জানা গেল, গুরুতর অসুস্থ ছিলেন তিনি। শারীরিক অবস্থার কঠিনা ধাক্কাটা সামলে উঠলেও এখনো পুরোপুরি সুস্থ নন তৌসিফ।
জাগো নিউজকে এই গায়ক জানান, চলতি বছরের জানুয়ারি মাসের শেষ দিকে মেরুদণ্ডে টিউমার ধরা পরে। শরীরের এমন একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশে অনেক ভুগতে হচ্ছে তাকে। এছাড়াও রয়েছে ডায়াবেটিসের সমস্যা।
চিকিৎসকদের পরামর্শে টিউমারের অস্ত্রোপচার করিয়েছেন। এখন কিছুটা সুস্থ জীবন যাপন করছেন। তৌসিফের ভাষায়, ‘মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরে এলাম যেন। আল্লাহ তার অশেষ করুণায় আমাকে সুস্থ করে তুলছেন। সবার কাছে দোয়া চাই যেন আবারও পুরোদমে গানে ফিরতে পারি।’
Advertisement
তবে গেল ঈদের দিনটা ছিলো তৌসিফের জন্য ভয়ংকর একটি দিন। সেদিনের ঘটনার অভিজ্ঞতা জানিয়ে আজ শুক্রবার তিনি একটি স্ট্যাটাসও দিয়েছেন। তার স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো।
‘ঈদের দিন বিকেল বেলা, ১১ মিনিটের মত আমার হৃদস্পন্দন প্রক্রিয়া পুরোপুরি বন্ধ, আমার সহধর্মিণী মানে আমার বউ তখনও নাকি নাছোড়বান্দা আমার হৃদ স্পন্দন ফিরিয়ে আনতে। বার বার আমার বুকে দুহাতে জোরে জোরে মারছে আর চিৎকার করে বলছে আমাকে ফিরে আসতে। সবাই তাকে সান্তনা দিয়ে বলছিলো কিন্তু সে নাকি কারো কোনো কথাই শুনছিল না।’
তিনি আরও লিখেন, ‘ঠিক ১১ মিনিট পর আমার চোখ খুললো, দেখলাম শত শত মানুষ আমাকে ঘিরে আছে আর আমার মাথাটা আমার সহধর্মিণীর কোলে রাখা। সবাই কেমন জানি অবাক চোখে আমাদের দেখে আছে।
আমার হৃদ স্পন্দন বন্ধ হওয়ার ১১ মিনিট পর আমার জ্ঞান ফিরে আসলো। আমাকে জীবনে ফিরিয়ে আনতে সবার চেষ্টার কথাগুলো বলেছিলেন পাশেই দাঁড়িয়ে থাকা একজন ডাক্তার। তিনি খুব অবাক হয়ে বলছিলেন যে তার জীবনে এমন ঘটনা নাকি কখনোই দেখেননি।
Advertisement
সেদিন কি আমার মৃত্যু হয়েছিলো কিনা জানি না তবে সেই ১১ মিনিটের অভিজ্ঞতার কথা বলতে পারি। এই ১১ মিনিট ছিলো আমার এ পুরো জীবনে পাওয়া সবচেয়ে সুখের মুহূর্ত। এমন একটা শান্তির মুহূর্ত যা প্রকাশের কোনো সঠিক শব্দ আমার সত্যিই জানা নেই।
শুধু একটা কথাই বলতে পারি, মৃত্যু যদি আসলেই এমন হয় তাহলে আমি বলবো মৃত্যুকে ভয় পাবার আসলেই কিছু নেই। মৃত্যুর স্বাদ সত্যিই অনেক অনেক অনেক মধুর, যন্ত্রণাহীন ও শান্তির।’
প্রসঙ্গত, ছোটবেলা থেকে বাবার হাতেই তার সংগীতের হাতেখড়ি। তার প্রথম একক অ্যালবাম ছিল ‘অভিপ্রায়’ প্রকাশ হয় ২০০৭ সালে। এরপর প্রতিবছরই একটি করে অ্যালবাম প্রকাশ করতেন তিনি। কিন্তু ২০১৫ সালের পর আর কোনো অ্যালবাম প্রকাশ করেননি তিনি।
এলএ/আরআইপি