দলের অন্যতম সেরা তারকা নেইমার জুনিয়র ইনজুরিতে ছিটকে পড়ার কারণে কোপা আমেরিকায় গুরুদায়িত্ব পড়েছে আরেক তারকা খেলোয়াড় ফিলিপ্পে কৌতিনহোর ওপরে। টুর্নামেন্টের প্রথম ম্যাচেই সে দায়িত্ব পালনে মুনশিয়ানার পরিচয় দিয়েছেন এ অ্যাটাকিং মিডফিল্ডার।
Advertisement
ঘরের মাঠের টুর্নামেন্টের উদ্বোধনী ম্যাচে তুলনামূলক দুর্বল প্রতিপক্ষের বিপক্ষে সহজ জয়ের প্রত্যাশাই ছিলো ব্রাজিলের। কিন্তু প্রথমার্ধটি হয়নি তাদের মনমতো। তবে দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই জোড়া গোল করে ব্রাজিলিয়ানদের উল্লাসে ভাসান কৌতিনহো।
তার জোড়া গোলের সঙ্গে এভারটনের এক গোলে বলিভিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়ে কোপা আমেরিকায় শুভসূচনা করেছে ব্রাজিল। নিজেদের ঘরের মাঠে আয়োজিত এর আগে চার আসরেই (১৯১৯, ১৯২২, ১৯৪৯ এবং ১৯৮৯) চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল ব্রাজিল।
কোপা আমেরিকার ইতিহাসে এটি ব্রাজিলের ১০০তম জয়। এখনো পর্যন্ত ১৭৯ ম্যাচ খেলে ৩৫ ড্র ও ৪৪ পরাজয়ের বিপরীতে ঠিক ১০০ জয় পেয়েছে ব্রাজিল। আর বলিভিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে টানা ১২ ম্যাচ অপরাজিত রইলো তিতের শিষ্যরা।
Advertisement
অথচ ম্যাচের প্রথমার্ধে একের পর এক গোল মিসের হতাশায় ভুগেছে স্বাগতিকরা। ম্যাচের পঞ্চম মিনিটেই কৌতিনহোর ফ্রিকিক থেকে এগিয়ে যেতে পারতো ব্রাজিল। কিন্তু বলিভিয়ার ডি-বক্সের মধ্যে জটলা পাকিয়ে গোলের সে সুযোগ মিস করে সেলেসাওরা।
প্রথমার্ধে ব্রাজিলের সামনে সুযোগ ছিলো আরও অনেক। মিনিটছয়েক বাদে অল্পের জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয় থিয়াগো সিলভার হেড। একইভাবে হেড থেকে গোল করতে ব্যর্থ হন কৌতিনহোও। ফিলিপে লুইসের ক্রসে মাথা ছোঁয়ালেও, সেটি চলে যায় গোলবারের বাইরে গিয়ে।
তবে দ্বিতীয়ার্ধে ফিরে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ব্রাজিলিয়ানদের। ঘরের মাঠে বলিভিয়ার বিপক্ষে শেষ ১১ ম্যাচে যাদের ৪৬ গোল, সে ব্রাজিলের পক্ষে তিন মিনিটের ব্যবধানে জোড়া গোল করেন কৌতিনহো।
Advertisement
প্রথম গোলটা অবশ্য অনেকটাই ভাগ্যের সহায়তায় পাওয়া। রিসার্লিসনের শট ডি-বক্সের মধ্যে বলিভিয়ার ডিফেন্ডার জুসিনোর হাতে লাগলে ভিএআরের সহায়তা নেন রেফারি। সেখান থেকে বাজান পেনাল্টির বাঁশি। গোলরক্ষকের ডানদিক শট করে দলকে এগিয়ে দেন কৌতিনহো।
ব্যবধান বাড়াতে একদমই সময় নেননি ২৭ বছর বয়সী এ মিডফিল্ডার। এবার তিনি গোল করেন হেডে। এবারও গোলে অবদান রাখেন রিসার্লিসন। তার কাছ থেকে পাস পেয়ে ডানপ্রান্ত থেকে ডি-বক্সে কৌতিনহোর উদ্দেশ্যে বল বাড়িয়ে দেন ফিরমিনো। সরাসরি হেডে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন কৌতিনহো।
ব্রাজিলের জার্সি গায়ে এটি কৌতিনহোর দ্বিতীয় জোড়া গোল। এর আগে ২০১৬ সালের কোপা আমেরিকায় হাইতির বিপক্ষে হ্যাটট্রিক করেছিলেন তিনি।
দুই গোলে পিছিয়ে পড়ে ম্যাচে ফেরার আর কোনো প্রয়াসই করতে পারেনি বলিভিয়া। উল্টো ৮৫তম মিনিটে এভারটনের দুর্দান্ত গোলে পরাজয়ের ব্যবধান বড় হয় তাদের।
ম্যাচের ৮১তম মিনিটে ডেভিড নেরেসের বদলি খেলোয়াড় হিসেবে মাঠে নামানো হয় এভারটনকে। মিনিট চারেক বাদেই তিনি পেয়ে যান জালের দেখা। ফার্নান্দিনহোর কাছ থেকে বল পেয়ে পুরোপুরি একক নৈপুণ্যে প্রায় ২০ গজ দূর থেকে জাল কাঁপান এভারটন।
৩-০ গোলের এ জয়ে টুর্নামেন্টের শুভসূচনা করলো ব্রাজিল। ২০১৬ সালে সবশেষ কোপা আমেরিকায় প্রথম পর্ব থেকে বাদ পড়া দলটি, এবার খেলতে নেমেছে অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই। সে লক্ষ্যে তাদের পরবর্তী ম্যাচ ভেনেজুয়েলার বিপক্ষে, আগামী বুধবার।
এসএএস/জেআইএম