ঘাঘট নদীর পানির তোড়ে গাইবান্ধা সদর উপজেলার খোলাহাটি ইউনিয়নের গোদারহাটে সোনালী বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে গেছে। মঙ্গলবার সকাল সাতটার দিকে এ ঘটনা ঘটে। বাঁধটি ভেঙে গেলে মুহূর্তের মধ্যে গোদার হাট, কোনার পাড়া, মদনের পাড়া, কঞ্চিপাড়াসহ অন্তত ২৫টি গ্রামে পানি ঢুকে পড়ে। তবে প্লাবিত গ্রামের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে। ওইসব গ্রামের মাছের খামার, আবাদি জমি পানিতে ভেসে গেছে। কেউ কেউ ঘুম থেকে উঠেই পানি দেখতে পেয়ে নিজের জীবন বাঁচাতে ধান, চাল বা প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র রেখেই বাঁধে এসে আশ্রয় নেন। স্থানীয় লোকজন জানান, টানা দুই সপ্তাহ ধরে চলা স্থায়ী বন্যায় বাঁধটি আগে থেকেই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। সকালে পানির চাপ ও প্রবল স্রোতে বাঁধটি ভেঙে যায়। বাঁধ ভাঙার পর এলাকার লোকজনের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে। নিজ নিজ বাড়ি ঘরের মালামাল সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন তারা।স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান কাজী ইব্রাহিম খলিল উলফাত জাগো নিউজকে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের খাম খেয়ালির কারণেই বাঁধটি ভেঙে গেছে। একাধিকবার তাদেরকে জানিয়েও কোনো লাভ হয়নি।তিনি জানান, বাঁধ ভেঙে এই ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের সবকটি গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। তলিয়ে গেছে বিপুল পরিমাণ ফসলি জমি। এছাড়া ভেসে গেছে মাছের ঘের ও পুকুর। পানি উন্নয়ন বোর্ডের সহায়তায় বাঁধটি রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণে দ্রুত উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। বাঁধটি এখনই আটকানো সম্ভব না হলে পাশের বোয়ালী ইউনিয়নসহ ফুলছড়ি ও সাঘাটা উপজেলায় পানি প্রবেশ করবে। তিনি বলেন, বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে তাকে বাঁশ দিয়ে পাইলিং করে বালির বস্তা ফেলে বাঁধটি রক্ষা করা সম্ভব। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল আউয়াল বলেন, সোনালী বাঁধ অন্যান্য বাঁধের তুলনায় অনেক শক্তিশালী। বাঁধটি দিয়ে সিপেজ হচ্ছিলো বিষয়টি তাকে কেউ জানাননি। এদিকে পানিবন্দি মানুষদের উদ্ধারে সরকারি বেসরকারি কোনো উদ্যোগ চোখে পড়েনি। তবে গাইবান্ধা সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আশরাফুল মমিন খান তাৎক্ষণিকভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন। তিনি বলেন, পানিবন্দি মানুষদের জন্য সরকারি সহায়তা হিসেবে আপাতত শুকনো খাবারের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মীরা জানান, বাঁধের অন্তত ৮০-৯০ ফিট অংশ ধসে গেছে। সেখান দিয়ে তীব্র গতিতে পানি আশপাশের গ্রামগুলোতে ঢুকছে। অমিত দাশ/এমজেড/এমএস
Advertisement