দেশজুড়ে

বিরোধ জমি নিয়ে, মামলা ধর্ষণ চেষ্টার!

পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ায় জমি নিয়ে বিরোধের জেরে এক স্কুল শিক্ষিকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগ এনে সাজানো মামলা দিয়ে প্রতিপক্ষ পরিবারকে হয়রানির অভিযোগ উঠেছে।

Advertisement

বুধবার (১২ জুন) হয়রানির শিকার স্থানীয় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নৈশপ্রহরী দুলাল ফরাজির স্ত্রী মহিমা আক্তার মঠবাড়িয়া প্রেস ক্লাবে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে মহিমা আক্তার অভিযোগ করেন, তার স্বামী দুলাল ফরাজি স্থানীয় উপজেলার ৬৭ নম্বর পূর্ব সেনের টিকিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পিয়ন কাম নৈশপ্রহরী পদে চাকরি করেন। টিকিকাটা গ্রামের মৃত হাকিম মুন্সির ছেলে স্বপন মুন্সি ও তার ফুফাতো বোন স্থানীয় ৬৮ নম্বর পশ্চিম সেনের টিকিকাটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা দিলারা আক্তার এমিলির সঙ্গে ১০ কাঠা জমি নিয়ে বিরোধ চলে আসছিল। পৈতৃক সম্পত্তি বলে স্বপন মুন্সি ওই জমির ভোগ দখল করে আসছিলেন। দুলাল ফরাজি জমিটি দেখাশোনা করতেন।

টিকিকাটা মৌজার ১৬৩৩ খতিয়ানভুক্ত ১৭৬৯ দাগের ১০ কাঠা জমি প্রতিপক্ষ স্কুল শিক্ষিকা দিলারা আক্তার তার ফরাজ সম্পত্তি বলে দাবি করলে, দুই পক্ষে বিরোধ সৃষ্টি হয়। গত ২১ মে রাতে শিক্ষিকা দিলারা আক্তার তার লোকবল নিয়ে ওই জমিতে ঘর তুলে দখলের চেষ্টা চালায়। পুলিশ খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে এসে দিলারার বড় ভাই রুহল আমীন মোল্লাকে আটক করে আদালতে সোপর্দ করে। পুলিশ ওই ঘটনায় একটি জিডি করে (নম্বর-৯৩২/১৯)। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে নৈশপ্রহরী দুলাল ফরাজিকে প্রধান আসামি করে ৫ জনের বিরুদ্ধে স্কুল শিক্ষিকা বাদি হয়ে একটি লুট মামলা করেন।

Advertisement

নৈশপ্রহরী দুলালের স্ত্রী মহিমা আক্তার আরও অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষরা তার স্বামীকে আটকে বেদম মারধর করে গুরুতর আহত করে। পরে তাকে বরিশালে চিকিৎসা করা হয়। ওই হামলার ঘটনায় স্বামী দুলালের বড় ভাই জামাল ফরাজি বাদি হয়ে ৯ জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় মামলা করেন। ওই মামলায় স্কুল শিক্ষিকাকে ৩ নম্বর আসামি করা হয়।

পরে গত ১ জুন দিলারা আক্তার বাদি হয়ে নৈশপ্রহরী দুলাল ফরাজিকে প্রধান আসামি করে তিন জনের বিরুদ্ধে মঠবাড়িয়া থানায় একটি ধর্ষণ চেষ্টার মামলা করেন। ওই মামলায় দুলালকে গ্রেফতার করে আদালতে সোপর্দ করে পুলিশ। তিনি বর্তমানে জেলহাজতে আছেন।

মহিমা আক্তার বলেন, বিরোধ জমি নিয়ে, অথচ মামলা দেয়া হয়েছে ধর্ষণ চেষ্টার। প্রতিপক্ষরা প্রভাবশালী। তারা এখন নানা রকম ভয়ভীতি দেখাচ্ছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযুক্ত স্কুল শিক্ষিকা দিলারা আক্তার এমিলি বলেন, দুলাল ফরাজি ওই জমির কোনো কেয়ারটেকার কিংবা পক্ষ না। কিন্তু সে আমার প্রতিপক্ষের সঙ্গে আমার ওপর নির্যাতন চালানোর চেষ্টা চালিয়েছে। ওই জমি আমার স্বামী ও নানার সম্পত্তি বলে আমি ফরাজ হিসেবে ন্যায্য দাবিদার।

Advertisement

মঠবাড়িয়া থানার ওসি (তদন্ত) মাজহারুল আমিন (বিপিএম) জানান, স্কুল শিক্ষকাকে ধর্ষণ চেষ্টার অভিযোগে মামলা করার পর নৈশপ্রহরী দুলালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তদন্তপূর্বক সত্য-মিথ্যা যাচাই করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করা হবে।

মাহামুদুর রহমান মাসুদ/এমএসএইচ/জেআইএম