ভরা বর্ষা মৌসুমে বিশ্বকাপের আয়েজন করে সত্যিই বিপাকে পড়েছে আইসিসি। ইতিমধ্যেই তিনটি ম্যাচ বাতিল করা হয়েছে বৃষ্টির কারণে। ব্রিস্টলে তুমুল বৃষ্টির কারণে মঙ্গলবার বাতিল করতে হয়েছে বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কা ম্যাচটি। যে ম্যাচটিতে বাংলাদেশ নিশ্চিত জয়ই ধরে রেখেছিল। ম্যাচ মাঠে না গড়ানোয় স্বাভাবিকভাবেই ক্ষতি হয়ে গেলো বাংলাদেশেরই বেশি।
Advertisement
ইতিমধ্যে চলতি বিশ্বকাপে মোট তিনটি ম্যাচ পরিত্যাক্ত হলো বৃষ্টির কারণে। যা বিশ্বকাপের ইতিহাসে রেকর্ড। কিন্তু চারদিকে কথা উঠে গেছে, যখন বৃষ্টির মৌসুমে বিশ্বকাপের আয়োজন করা হলো, তখন কেন বিষয়টা মাথায় রাখেনি আইসিসি। কেন তারা রিজার্ভ রাখেনি ম্যাচগুলোর জন্য?
বাংলাদেশ দলের ইংলিশ কোচ স্টিভ রোডসও প্রশ্ন তুলেছেন, কেন রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি। তারও কথা, যখন জানিই যে তুমুল বৃষ্টি হতে পারে এবং বৃষ্টির কারণে দু’একটা ম্যাচও ভেসে যেতে পারে, তখন কেন রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি? ম্যাচ বাতিল হওয়ার কারণে কিন্তু পয়েন্ট টেবিলের হিসাব-নিকাশ বদলে যাচ্ছে অনেকটাই। যা ম্যাচ অনুষ্ঠিত হলে হয়তো ভিন্নরকমই হতো।
রিজার্ভ ডে নিয়ে যখন চারদিকে তুমুল আলোচনা, আইসিসিকে নিয়ে সমালোচনা- তখনই আইসিসির পক্ষ থেকে এর ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। জানানো হয়েছে, কেন গ্রুপ পর্বের ম্যাচগুলোয় কোনো রিজার্ভ ডে রাখা হয়নি।
Advertisement
আইসিসি প্রধান নির্বাহী ডেভ রিচার্ডসন এ সম্পর্কে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আইসিসি বিশ্বকাপে যদি প্রতি ম্যাচেই রিজার্ভ ডে রাখা হতো, তাহলে টুর্নামেন্টের দৈর্ঘ্য বেড়ে যেতো আরও অনেক বেশি। এবং বাস্তবিকভাবেই টুর্নামেন্ট শেষ করতে গিয়ে খুবই জটিল আকার ধারণ করতো।’
আরও কিছু কারণ তুলে ধরেন ডেভ রিচার্ডসন। তিনি বলেন, ‘রিজার্ভ ডে রাখা হলে, উইকেট তৈরিতে এর প্রভাব পড়তো, দলের রিকভারি কিংবা ট্রাভেলের দিনের ওপরও দারুণ প্রভাব পড়তো। একই সঙ্গে ভেন্যু প্রাপ্তি, টুর্নামেন্টের স্টাফ, ভলান্টিয়ার, ম্যাচ অফিসিয়াল বাড়াতে হতো অনেক বেশি, তাদের থাকার জন্য জায়গা সঙ্কুলান হয়ে পড়তো খুবই কঠিন। এছাড়া ম্যাচ সম্প্রচারকারীদের লজিস্টিক সাপোর্ট নিয়ে পড়তে হতো দারুণ সমস্যায়।’
আইসিসি প্রধান নির্বাহীর চোখে রিজার্ভ ডে রাখলে এসবের চেয়েও বড় সমস্যা দেখা দিতো- ‘দর্শকদের নিয়ে। রিজার্ভ ডে থাকলে দর্শকরা কি করতো? তারা হয়তো আজ ম্যাচ দেখার জন্য এক ভেন্যুর টিকিট কাটলো, কাল ম্যাচ দেখার জন্য টিকিট কাটলো আরেক ভেন্যুর। কিংবা তারা এক ভেন্যুতে খেলা দেখার জন্য হোটেল-থাকাসহ যে সব আয়োজন তারা করেছে- সেগুলোতে মারাত্মক প্রভাব পড়তো। কারণ, রিজার্ভ ডেতেও যে বৃষ্টি হবে না তার তো কোনো গ্যারান্টি নেই।’
ডেভ রিচার্ডসন জানান, ‘প্রতিটি ম্যাচ আয়োজনের জন্য কমপক্ষে ১২০০ মানুষের প্রয়োজন হয়। ম্যাচ সম্প্রচার থেকে শুরু করে তারা নানান কাজে জড়িত থাকে। আবার এদের বড় একটা অংশ প্রতিদিনই সফর করে বেড়াচ্ছে পুরো দেশে (যুক্তরাজ্যে)। যদি গ্রুপ পর্বে রিজার্ভ ডে রাখা হতো, তাহলে এই জনশক্তির পরিমাণ বাড়াতে হবে। নকআউট স্টেজে আমরা রিজার্ভ ডে রেখেছি। তবে ৪৫টি গ্রুপ পর্বের ম্যাচে আমাদের এই নিয়ম মেনেই খেলতে হবে।’
Advertisement
আইএইচএস/এমকেএইচ