যুবরাজ সিংয়ের ক্যারিয়ারে উত্থান আর পতনের গল্পটা সমান। ক্যারিয়ারে যেমন উজ্জ্বল রঙিন সময় পার করেছেন, তেমনি দেখেছেন ঘুটঘুটে অন্ধকারচ্ছন্ন দিক আর ধূসর সময়ও।
Advertisement
একটা সময় মরণব্যাধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে জীবনটাই প্রায় হারাতে বসেছিলেন। জীবনযুদ্ধে কেবল জয়ীই হননি, আবার ফিরে এসেছেন ক্রিকেটের মাঠে, বুক চিতিয়ে লড়েছেন দেশের হয়ে, জিতিয়েছেনও।
দেশের হয়ে যুবরাজের অর্জন কম নয়। ২০০৭ সালের বিশ্ব টি-টোয়েন্টির চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। সেবার ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট হন যুবরাজ সিং। সেই জয়ের চার বছর পর ২৮ বছরের আক্ষেপ দূর করে ওয়ানডে বিশ্বকাপে চ্যাম্পিয়ন হয় ভারত। এবারও ম্যান অব দ্য টুর্নামেন্ট একজনই, যুবরাজ সিং।
এছাড়া তিনি ছিলেন ২০০২ সালে ভারতের প্রথমবারের আইসিসি চ্যাম্পিয়নস ট্রফি জয়ী দলেও। ভারতকে দুই ভিন্ন ফরম্যাটে বিশ্বচ্যাম্পিয়ন বানানোর পাশাপাশি তিনটি বড় শিরোপা জয়ী যুবরাজ সিং আজ বিদায় জানিয়েছেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে।
Advertisement
জীবন সংগ্রামের লড়াইটা করতে করতে বয়স ৩৭ বছর হয়েছে। ক্যারিয়ারের গোধূলি বেলা অনেকে দেখেছিলেন আরো অনেক আগেই, হয়তো তিনি নিজেও দেখেছিলেন। কিন্তু দেশের হয়ে ২০১৯ বিশ্বকাপে শেষবারের মতো প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চেয়েছিলেন। বয়সের ভারে পারফরম্যান্সের ধার কমে যাওয়ায় তা আর পারেননি। বিশ্বকাপ চলাকালীনই নিলেন অবসর।
তবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নিলেও আরো কয়েক দিন চালিয়ে যাবেন ঘরোয়া ক্রিকেট। ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০৪ ম্যাচে ৩৬.৫৫ গড়ে করেছেন ৮৭০১ রান। বল হাতেও কম যাননি। ওয়ানডেতে তার উইকেট সংখ্যা ১১১ টি। যার মধ্যে একবার নিয়েছেন ৫ উইকেটও।
১৯ বছরের ক্যারিয়ারে টেস্ট খেলেছেন ৪০টি। যেখানে ব্যাট হাতে ৩৩.৯৩ গড়ে ১৯০০ রানের পাশাপাশি নিয়েছেন, ৯ উইকেট। টি-টোয়েন্টিতে ৫৮ ম্যাচ খেলে ২৮.০২ গড়ে ৮৬৩ রানের পাশাপাশি আছে ২৮ উইকেটও।
এসব পরিসংখ্যানের চেয়েও যুবরাজকে মানুষ মনে রাখবে বিশ্বকাপের মঞ্চে ব্যাট হাতে ২৩ ম্যাচে এক সেঞ্চুরিসহ ৭৩৮ রান ও বল হাতে একবার ৫ উইকেটসহ ২০ উইকেটের অসাধারণ পারফরম্যান্সের জন্য।
Advertisement
যুবরাজকে ছাড়াও হয়তো ভারতীয় ক্রিকেট চলবে আপন গতিতেই। কিন্তু আকাশী নীল জার্সিতে কোনো তরুণ যদি অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে ভারতকে ম্যাচ জিতিয়ে দেন অথবা ব্যাট ও বল হাতে দেখান সমান পারদর্শিতা। তখন নিশ্চয়ই কোনো না কোনো সমর্থক সেই তরুণের মাঝে খুঁজে ফিরবেন জীবনযুদ্ধের জয়ী সৈনিক যুবরাজ সিংকে।
এমএইচবি/এসএএস/এমকেএইচ