জাতীয়

নতুন পে-স্কেলে ক্ষুব্ধ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা

বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বাদ দিয়ে মন্ত্রিসভায় নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদিত হওয়ায় ক্ষোভে ফুসছেন দেশের ৩৭টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীরা। যদিও বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের দাবি পর্যালোচনায় ‘বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।শিক্ষকরা বলছেন, তাদের সঙ্গে সরকারের কেউই কোনো ধরনের আলোচনা না করে মন্ত্রিসভায় বেতন কাঠামোর অনুমোদ করা অত্যন্ত দুঃখজনক। যার কারণে পূর্বঘোষিত নিজেদের কর্মসূচিও নিয়মিত করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তারা।সোমবার মন্ত্রিপরিষদের বৈঠকে নতুন বেতন কাঠামো অনুমোদন দেয়ার পর শিক্ষকদের মধ্যে এমন প্রতিক্রিয়া দেখা যায়।এদিকে বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশারফ হোসেন ভূইঞা সাংবাদিকদের বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের বিষয়ে মন্ত্রিসভা গুরুত্বের সঙ্গে আলোচনা করেছে। তাদের অবস্থান নিয়ে সরকার সচেতন। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষকরা এখন প্রচলিত কাঠামোতেই বেতন পাবেন। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি।তিনি বলেন, এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি রয়েছে। তারা শিক্ষকদের বিষয়গুলো পর্যালোচনা করে প্রতিবেদন জমা দেবেন। প্রতিবেদন পরে কেবিনেটে এলে সে অনুযায়ী সিদ্ধান্ত হবে।ক্ষুব্ধ শিক্ষকরা বলছেন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে দায়িত্ব দিয়ে কি হবে? কোথায় অসঙ্গতি রয়েছে তা কি তাদের আগে চোখে পড়েনি? পুনরায় তদন্তে কেন যেতে হবে?বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. ফরিদ উদ্দিন আহমেদ জাগো নিউজকে বলেন, আমরা যে অন্ধকারে ছিলাম, সেখানেই আছি। কেউ আমাদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করেনি। কি হচ্ছে তা আমরা এখনো জানতে পারছিনা।তিনি বলেন, আমরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বারবার দেখা করতে চেয়েছি। কিন্তু আমাদের সুযোগ দেয়া হয়নি। তাই আমাদের আন্দোলন অব্যাহত থাকবে। আমরা আমাদের আন্দোলন থেকে নড়ছিনা।তদন্ত কমিটিতে বিষয়টি আটকে যাবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে ফরিদ উদ্দিন আহমেদ বলেন, তদন্ত কমিটিতে বিষয়টি ঝুলে যাবে কিনা, তা নিয়ে এখন কিছু বলতে চাইনা।কয়েকজন শিক্ষকের সঙ্গে কথা বললে তারা বলেন, আমরা দেখেছি সেনাবাহিনীকে প্রথম গ্রেডে রেখে তাদের বেতন নিধারর্ণ করা হয়েছে। যা তাদের সতন্ত্র বেতন স্কেল হিসেবেই বিবেচিত হবে। অথচ আমাদের সতন্ত্র বেতন স্কেল বাস্তবায়নের কোনো খোঁজ নেই। তবে আমরা এখনো আশান্বিত যে, প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের বিষয়টি দেখবেন। আমাদের জন্য সতন্ত্র বেতন কাঠামো গঠন করবেন এবং আমাদের সিনিয়র শিক্ষকদের সিনিয়র সচিবের ন্যায় সমবেতন ও সম মর্যাদায় রাখবেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সদস্য অধ্যাপক ড. এ জেড এম শফিউল আলম ভূঁইয়া জাগো নিউজকে বলেন, বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটিকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে বিষয়টি পর্যলোচনা করে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে। আমি আশাবাদী সরকার আমাদের সঙ্গে আলাপ আলোচনা করেই আমাদের জন্য সতন্ত্র বেতন স্কেল তৈরি করবেন। তবে আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আমরা মঙ্গলবার আমাদের ক্লাস বর্জনের কর্মসূচি পালন করবো।বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল জাগো নিউজকে বলেন, এখন আমরা দুই ধরনের বক্তব্য পাচ্ছি। যার একটি হচ্ছে আমাদের সপ্তম বেতন কাঠামো অনুযায়ী বেতন দেয়া হবে। সপ্তম বেতন কাঠামোতে ২০ গ্রেড পর্যন্ত রাখা হয়েছিল। কিন্তু অষ্টম বেতন কাঠামোতে শূন্য গ্রেড নামে আরেকটি গ্রেড করা হয়েছে।তিনি বলেন, অষ্টম বেতন কাঠামোতে সিনিয়র সচিবদের যে একটি গ্রেড করা হয়েছিল, আমরা চেয়েছি বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষকদেরও সে সম্মানের জায়গায় নতুন গ্রেডের আওতাভূক্ত করা হোক এবং ওয়ারেন্ট অব প্রেসিডেন্ট নিয়ে আমাদের যে দাবি ছিল তাও মানা হয়নি। মূলত আমরা যেসব দাবি করেছি তার কোনটিই আমরা পাইনি।কর্মসূচি অব্যাহত রাখার কথা বলে তিনি বলেন, আমাদের কর্মসূচি অব্যাহত থাকবে। আর মন্ত্রিপরিষদের বেতন বৈষম্য দূরীকরণ সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি শিক্ষকদের দাবির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রতিবেদন জমা দেবে বলেও তিনি আশা প্রকাশ করেন।তদন্ত কমিটিতে বিষয়টি আটকে যাবে কিনা এমন এক প্রশ্নের জবাবে মাকসুদ কামাল বলেন, আমাদের বিশ্বাস আমরা এর মাধ্যমে একটি ফলাফল পাবো। যদি তদন্ত কমিটিতে ঝুলে যায় তাহলে আমরা নতুন করে কর্মসূচিতে যেতে বাধ্য হবো।এমএইচ/এমএএস/বিএ

Advertisement