খেলাধুলা

ব্রিস্টলে টাইগারদের ম্যাচে মাঠে থাকবে ৮ হাজার প্রবাসি বাংলাদেশি

যুক্তরাজ্যের আবহাওয়ার স্থিতি নেই একদমই। এই রোদ তো এই বৃষ্টি। রোদেলা সকালের পর হঠাৎই ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়। আবার বৃষ্টির পর বিকেলে সোনালী রোদের দেখাও মেলে। এর সাথে কনকনে বাতাসও বয় একটা বড় সময় ধরে।

Advertisement

বৃষ্টির দেখা মিলেছে লন্ডনে। টাইগারদের বিশ্বকাপ যাত্রার শুরুর দিন, মানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ম্যাচের আগের দিন আর ম্যাচ ডে’টা ভাল কাটলেও এরপর থেকে শুরু হয়েছে বৃষ্টি। নিউজিল্যান্ডের সাথে দ্বিতীয় ম্যাচের আগের দিনও কনকনে বাতাস, ঝিরঝিরে বৃষ্টি চরমভাবে ভুগিয়েছে।

টাইগাররা দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচ খেলেছে খোলা আকাশের নিচে সেন্টার উইকেটে প্র্যাকটিস ছাড়াই। অর্থাৎ ইংল্যান্ডের রাজধানী লন্ডন আর যুক্তরাজ্যের অন্তর্গত অথচ ভিন্ন দেশ ওয়েলসের রাজধানী কার্ডিফেও খেলার আগের দিন ছিল আকাশ মেঘে ঢাকা, বৃষ্টি আর ঠান্ডা বাতাসে ভরা।

কার্ডিফ থেকে ব্রিস্টলে এসে আবহাওয়ার বৈরী আচরণ আরও প্রবল হলো। দুপুর গড়িয়ে বিকেল নামতেই বৃষ্টি ঘিরে ধরলো। আর থামার নাম নেই। দুপুর আড়াইটার কয়েক মিনিট পর শুরু হলো বৃষ্টি। চললো একদম বিকেল চারটা (বাংলাদেশ সময় রাত ৯টা) নাগাদ।

Advertisement

ব্রিস্টলের বৃষ্টির সাথে লন্ডন আর কার্ডিফের বৃষ্টির ফারাক বিস্তর। ঐ দুই শহরের বৃষ্টি যেন ইংলিশদের চারিত্রিক বৈশিষ্টের সাথে মিল রেখে। ধীরে সুস্থে, ইলশে গুঁড়ি কিংবা ঝিরঝিরে; কিন্তু ব্রিস্টলের বৃষ্টি তা নয়। একদম মুষলধারে। রীতিমত ভারী বর্ষণ যাকে বলে।

 

তার সাথে আবার শিলাবৃষ্টিও হলো এবং সেটা অবশ্য বাংলাদেশের শিলাবৃষ্টির মত অত বড় বড় শিলাখন্ড নয়। ছোট মটর দানা কিংবা ছোলার ডালের মত এক একটি শিলাখন্ড।

সবচেয়ে চিন্তা ও শঙ্কার কারণ হলো, এই শিলাবৃষ্টি চোখ রাঙ্গাচ্ছে। আবহাওয়ার পূর্বাভাসে পরিষ্কার বলা হচ্ছে, আগামী ১১ জুন (মঙ্গলবার) বৃষ্টির সম্ভাবনা ৮০ ভাগ। শুধু বৃষ্টি নয়, শিলাবৃষ্টির কথাও বলা আছে আবহাওয়ার আগামবার্তায়।

তাই বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা ম্যাচ নিয়ে সংশয়, সন্দেহ। প্রশ্ন উঠেছে, খেলা আদৌ হবে তো? আর হলেও নির্ধারিত সময় শুরু হয়ে ৫০ ওভারের পুরো ম্যাচ কি হবে?

Advertisement

এদিকে লন্ডন আর কার্ডিফের মত ব্রিস্টলের প্রবাসী বাঙ্গালীরাও প্রিয় জাতীয় দলের ম্যাচ দেখতে মুখিয়ে আছেন। ব্রিস্টলে পা দিয়েই পরিচয় হওয়া দুই তরুণ ও প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী আব্দূর কাইয়ুম আর আবুল হোসেন জুয়েল জানালেন, ‘ব্রিস্টলে থাকা প্রবাসি বাংলাদেশিরা মুখিয়ে আছে প্রিয় জাতীয় দলের খেলা মাঠে গিয়ে দেখতে। তাদের উৎসাহ জোগাতে, অনুপ্রাণিত করতে।’

প্রতিষ্ঠিত রেস্টুরেন্ট ব্যবসায়ী সিলেটের মৌলভিবাজারের কাইয়ুম আর নোয়াখালির জুয়েল জাতীয় দল ব্রিস্টলে পৌঁছার সাথে সাথে ছুটে গিয়েছিলেন মাশরাফি, সাকিব, তামিম, মুশফিক, মাহমুদউল্লাহদের স্বাগত জানাতে।

স্থানীয় বাংলাদেশী কমিউনিটির পক্ষ থেকে টিম বাংলাদেশকে একদিন নৈশভোজে আপ্যায়িত করার পরিকল্পনাও আছে বলে জানালেন তারা।

জুয়েল আর কাইয়ুমের কাছ থেকে জানা গেল, ব্রিস্টলে ১০ থেকে ১২ হাজারের মত বাংলাদেশি আছেন। তারা অনলাইন ও অন্যভাবে মিলে ৮ হাজার টিকিট কিনেছেন বাংলাদেশ আর শ্রীলঙ্কা ম্যাচ দেখার জন্য। তারা আশা করছেন, ব্রিস্টলের মাঠে বাংলাদেশিরাই হবে মেজরিটি।

অর্থাৎ লন্ডন আর কার্ডিফের মত ব্রিস্টলেও বাংলাদেশ খেলবে মাঠ ভর্তি সমর্থনপুষ্ট হয়ে। লন্ডনের ওভাল আর কার্ডিফে হাজার হাজার বাংলাদেশি এসেছিলেন প্রিয় জাতীয় দলকে সমর্থন জানাতে; কিন্তু কার্ডিফে সাকিব আল হাসানের ব্যাটিংয়ের সময়টুকু ছাড়া বাকি সময় টাইগার সমর্থকদের ভাল কাটেনি। তাদের মুখ বন্ধ করেই থাকতে হয়েছে।

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে আবার ‘বাংলাদেশ, বাংলাদেশ’ ধ্বনিতে ব্রিস্টলের আকাশ বাতাস কাঁপানোর পাশাপাশি মাশরাফি-সাকিব ধ্বনি তুলে মাঠ গরম করতে প্রস্তুত বৃষ্টলের বাংলাদেশের ক্রিকেট সমর্থকরা। এখন প্রকৃতি বাধা হয়ে না দাঁড়ালেই হয়।

এআরবি/এসএএস/আইএইচএস/পিআর