খেলাধুলা

এখনও বাংলাদেশের ভালো সুযোগ আছে

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচটির প্রথমেই বলবো আমি ফিল্ডিং নিয়ে। অনেকে বলছেন টস জিতে কেন প্রথমে ফিল্ডিং নেয়া হলো। আমি বলবো ঠিকই ছিল ফিল্ডিংয়ের সিদ্ধান্ত। সকালে বৃষ্টি ছিল। ওই কন্ডিশন কাজে লাগানোসহ সব কিছু চিন্তা করেই প্রথমে ফিল্ডিং নিয়েছিলেন।

Advertisement

আসলে আমাদের পেসারদের সেভাবে কার্যকর হিসেবে পাইনি। ইংলিশ বোলাররা যে বোলিং করেছেন, বাংলাদেশের বোলারদের কিন্তু আরো বেশি অ্যাডভান্টেজ পাওয়া উচিত ছিল। সেটা কিন্তু একেবারেই পায়নি। কারণ হলো, আমাদের বোলারদের পেস একটু কম এবং আমরা একটু আগোছালো বোলিং করেছি।

প্রথম দিক দিয়ে দেখেন জেসন রয় কিন্তু পেস বলে মিড উইকেটে শট খেলছিলেন। আমরা একজন ওপেনিং ব্যাটসম্যানকে প্রথম পাওয়ার প্লেতে ফিল্ডিং সেট করে একটা জায়গায় বল করতে না পারাতেই এমন হয়েছে। বল করা হয়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে। সব বোলারই ছড়িয়ে ছিটিয়ে বল করেছে। আমাদের ফিল্ডিংও খারাপ হয়েছে এ ম্যাচে। আমার মনে হয় ফিল্ডিংয়ে গোটা তিরিশেক রান বেশি দিয়েছি।

আবার আমাদের ইনিংসে দেখেন- ইংল্যান্ডের ফিল্ডাররা বল বাউন্ডারির কাছাকাছি যেতেই কোত্থেকে এসে থামিয়ে দিয়েছে। ওরা অনেকগুলো রান সেভ করেছে ফিল্ডিং করে। এই কারণে ম্যাচের ফলে এত বড় পার্থক্য হয়েছে। আবারও বলবো আমাদের বোলাররা নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারেননি। অথচ দেখেন, ওদের বোলাররা কিন্তু একটা জায়গা মেইনটেইন করে বল করেছেন। ওদের বোলারদের লাইন লেন্থ ভালো ছিল।

Advertisement

ব্যাটিংয়ে এত রান তাড়া করতে গেলে যে রকম শুরুর দরকার ছিল সেরকম হয়নি। প্রথম পাওয়ার প্লে কাজে লাগাতে পারিনি। প্রথম চার ওভারে উইকেট তো গেছেই। দুটি ওভার মেইডেনও গেছে। ৩৮৬ রান তাড়া করতে হলে প্রথম ওভার থেকেই সেভাবে শুরু করা উচিত। সে রকম শুরু হয়নি বলেই প্রথম ৫ ওভার পরই বোঝা গিয়েছিল ম্যাচটা বাংলাদেশের হবে না।

যদিও খুবই কষ্টকর একটা বিষয় ৩৮৬ রান তাড়া করা। কোনো দলের জন্যই কাজটা সহজ নয়। তারপরও আমরা শুরুটা সেভাবে পজিটিভ করতে পারিনি। কিন্তু সৌম্য ও তামিম দুজনই চেষ্টা করেছেন। কিন্তু পারেননি। কারণ, ওরা ভালো বোলিং করেছেন।

সাকিব যতক্ষণ ছিলেন তাকে সেভাবে অন্যরা সাপোর্ট দিতে পারেননি। মুশফিক কিছুক্ষণ ছিলেন। সে আউট হওয়ার পর মিঠুন এসেই চলে গেলেন। পর পর দুটি উইকেট হারালাম। যদিও ম্যাচ কখনোই আমাদের পক্ষে ছিল না। তারপরও বলবো ম্যাচটাকে আমরা আরেকটু ক্লোজ করতে পারতাম।

আমরা টস জিতে বোলিং নিলাম এবং আক্রমণটা সাকিব দিয়ে শুরু করানো হলো। আমার মনে হয় সাকিবকে দিয়ে বোলিং শুরু করানোটা ঠিকই ছিল। কিন্তু প্রথম ১৫ ওভারে মধ্যেই সাকিবের ৭ ওভার করানো হয়ে যায়। সাকিব মিডল ও স্লগ ওভার সব জায়গাই ভালো বল করেন। যদিও এ ম্যাচে পরে সে তেমন ভালো বল করতে পারেননি।

Advertisement

সাকিবের ওখানে ৫ ওভার করিয়ে মিরাজ ও সৈকতকে দিয়ে ট্রাই করতে পারতেন। পরের দিকে মিরাজ ভালো বল করেছেন। তারপরও মিরাজ ও সৈকতকে ওরা প্রচুর শট খেলেছে। মিরাজের পরপর ৩ বলে তো ছক্কাই মারলো। প্রথম দিকে ওদের ট্রাই করলে হয়তো এভাবে শট খেলতে পারতো না।

এ ম্যাচে পেসাররা প্রথম দিক দিয়ে কিন্তু অনেক মার খেয়েছে। আমি যদি সাইফউদ্দিনের কথা বলি। সে প্রথম স্পেলে যে বল করে তার চেয়ে বল একটু পুরনো হলে বেশি কার্যকর হয়। এটা আমার কাছে মনে হয়েছে। প্রথম দিকে মার খেয়ে শেষ দিকে মোটামুটি বল করেছেন। উইকেটও পেয়েছেন।

প্রথম দিকে আসলে কারা বল করবেন সেটা আরো বিচক্ষণতার সঙ্গে দেখা যেতো। আমি যেটা বলবো আরেকটু পরিকল্পিতভাবে সব কিছু হলে ওদের এতো রান হতো না। সবচেয়ে বড় কথা কাল কোনো কিছুই কাজে লাগেনি।

তিন ম্যাচের একটি জিতেছি। এখনো আমাদের অনেকগুলো ম্যাচ বাকি আছে। আমাদের সুযোগও আছে এখনো। এই যেমন ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচের শেষ দিকে এসে কিন্তু আমরা ভালোই খেলেছি। এমন ব্যাটিং যদি আগের ম্যাচে করতে পারতাম তাহলে তো জেতা যেতো।

সাকিব এখন পর্যন্ত ব্যক্তিগতভাবে সবচেয়ে বেশি রানের মালিক এই বিশ্বকাপে। দারুণ একটা সেঞ্চুরি করেছেন। সে ভালো ফর্মেও আছেন। তাই বলবো আমাদের এখনো সেমিফাইনালে যাওয়ার সুযোগ আছে। বাকি ম্যাচগুলো আমাদের প্লানিং করে খেলতে হবে।

আরআই/এসএএস/পিআর