ঐতিহাসিক গোর-এ শহিদ ঈদগাহ। নান্দনিক নির্মাণ শৈলী ও মোঘল স্থাপত্যের আদলে গড়ে তোলা হচ্ছে এটি। ঈদগাহ মাঠের কাজ শেষ না হলেও ২০১৭ সাল থেকেই ঈদ-উল-ফিতর ও ঈদ-উল-আজহার নামাজের জামাআত অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। এ বছর ঐতিহাসিক গোর-এ শহিদ ঈদগাহ ময়দানে একসঙ্গে নামাজ আদায় করেছে ৬ লাখ মুসল্লি।
Advertisement
বর্তমানে মিনার ও দেয়াল কেন্দ্রিক ঈদগাহের আয়তন প্রায় ২২ একর। মাঠের মধ্যে রয়েছে বেশি কিছু স্থাপনা। তা অপসারণ হলে এ মাঠের আয়তন প্রায় ৬৫ একরে দাড়াবে। যা হবে দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ মাঠ।
দিনাজপুর সদর আসনের এমপি জাতীয় সংসদের হুইপ ইকবালুর রহিমের উদ্যোগে সদর পৌরসভা ও জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০১৫ সালে গোর-এ শহিদ মাঠের অর্ধেকাংশ জুড়ে প্রথমে কাজ শুরু হয়। দেড় বছরের অক্লান্ত পরিশ্রমে তা নামাজের জন্য প্রস্তুত করা হয়। পরবর্তীতে ধীরে ধীরে কাজের গতি ও মাঠের পরিধি বাড়তে থাকে।
এ মাঠে নামাজ আদায়ের সুবিধার্থে শত বছরের পুরনো স্টেশন (অফিসার্স) ক্লাব অন্য প্রান্তে সরিয়ে নিতে প্রাথমিক পর্যায়ে ১ কোটি ৯০ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে সরকার।
Advertisement
মাঠের পরিধি বাড়ানোর পাশাপাশি ইরাক, ইরান, সৌদি আরব, কুয়েত, ইন্দোনেশিয়া ও ভারতসহ বিশ্বের বড় বড় ধর্মীয় স্থাপনার আদলে নান্দনিক সৌন্দর্যে সাজানো হবে এ ঈদগাহ।
ঈদগাহ ময়দানের পশ্চিমে যে দেয়াল তৈরি করা হয়েছে তা লম্বায় ৫১৬ ফুট। ছোট ছোট ৩২টি খাচ দেয়ালের সৌন্দর্যকে বাড়িয়ে দিয়েছে।
দেয়ালটির দুই প্রান্তে সিরামিক দিয়ে তির ৬০ ফুট উচ্চতার দু’টি মিনার রয়েছে। মিনারের গম্বুজ দু’টি অন্যান্য গম্বুজের চেয়ে আয়তনে বড়।
দৃষ্টিনন্দন এ ঈদগাহের মিনার, দেয়াল ও মেহরাবের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে মোট ৫২টি গম্বুজ। প্রধান মেহরাবের দুই ধারে মেহরাবের আদলে বড় দুটি খাচ তৈরি করা হয়েছে। এর উচ্চতা ৫০ ফুট। এর উপর রয়েছে ১২টি গম্বুজ।
Advertisement
প্রধান মেহরাবের ছাউনির উচ্চতা ৫৫ ফুট। যার ওপর রয়েছে ১০টি গম্বুজ। ইমাম যেখানে দাঁড়িয়ে খুতবা দেবেন, তার উচ্চতা ৪৭ ফুট।
৫১৬ ফুট লম্বা দেয়ালের ওপর গম্বুজগুলো ২০ ফুট উচ্চতায় স্থাপন করা হয়েছে। সৌন্দর্য বাড়াতে এবং দৃষ্টিনন্দন করতে প্রত্যেকটি গম্বুজে দেয়া হয়েছে বৈদ্যুতিক আলোর সংযোগ।
ঈদগাহ মাঠের প্রবেশ গেট দুটির উচ্চতা ৩০ ফুট। ঈদগাহ মাঠের বালু ভরাটেই ব্যয় হয়েছে ৩২ লাখ টাকা। ঐতিহাসিক এ ঈদগাহ মিনার তৈরিতে খরচ হয়েছে ৩ কোটি ৮০ লাখ টাকা।
উল্লেখ্য যে, এ ঈদগাহ মাঠে ২০১৭ সালে প্রথম বছরই ২ লাখ মুসল্লি নামাজ আদায় করেন। ২০১৮ সালে মুসল্লির সংখ্যা বেড়ে দাঁড়ায় ৫ লাখ। আর এ বছর ঈদ-উল-ফিতরে ১০ লাখ মুসল্লির নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হলেও জামাআতে অংশগ্রহণ করেন ৬ লাখ মুসল্লি।
সবচেয়ে বড় এ ঈদগাহ ময়দানে খতিবের দায়িত্ব পালন করে আসছেন দিনাজপুর জেনারেল হাসপাতালের খতিব মাওলানা শামসুল ইসলাম কাসেমি।
গোর-এ শহিদ ঈদগাহ ময়দানের কাজ পরিপূর্ণভাবে শেষ হলে তা হবে এক অনিন্দ্য সুন্দর দৃষ্টিনন্দন দেশের সবচেয়ে বড় ঈদগাহ।
এমএমএস/এমএস