কথায় বলে, ‘যে রাঁধে, সে চুলও বাঁধে’- ভাবার্থটা আসলে এমন যিনি পারেন, তিনি এক সাথে অনেক কিছুই করতে পারেন। বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘সব্যসাচি’ ক্রিকেটার সাকিব আল হাসানও ঠিক তেমন। তিনি আসলে সবই পারেন। তার ব্যাট ও বল সমান কার্যকর- তা সবার জানা। ব্যাটসম্যান আর বোলার সাকিব দুই বিভাগেই সমান দক্ষ, পারদর্শী এবং সফলও।
Advertisement
কিন্তু দিনকে দিন দেখা মিলছে আরেক নতুন সাকিবের। ক্যারিয়ারের বড় সময় চার থেকে ছয় নম্বরে ব্যাট করা সাকিব অল্প কিছু দিন ধরে তিন নম্বরে খেলে এখন দারুণ সফল। অনেক দিন ধরেই তিন নম্বর পজিসনে একজন ভাল মানের পারফরমারের খোঁজে ছিল বাংলাদেশ।
হঠাৎ করে সাকিবকেই সে জায়গায় পাঠানো হয়। কাজটা সহজ ছিল না মোটেই। এমন নয় সাকিব টপ অর্ডার হিসেবে ক্যারিয়ার শুরু করেছিলেন, জাতীয় দলে খেলতে গিয়ে মিডল অর্ডার বনে গিয়েছিলেন। ইতিহাস জানাচ্ছে, সাকিব শুরু থেকেই মিডল অর্ডার।
ক্যারিয়ারের প্রায় ৮০ ভাগ ম্যাচ চার থেকে ছয় নম্বরে ব্যাট করেছেন। দীর্ঘদিন মিডল অর্ডারে খেলার মেজাজ, ধরণ ও অ্যাপ্রোচের সাথে নিজেকে মানিয়েও নিয়েছিলেন। সেই অভ্যস্ত জায়গা ছেড়ে হঠাৎ টপ অর্ডারে মানে তিন নম্বরে ব্যাটিং করতে নেমেও সাকিব দারুণ সফল। যতই সময় গড়াচ্ছে ততই তার ব্যাট তিন নম্বরে উজ্জ্বল থেকে উজ্জ্বলতর হচ্ছে। ওয়ান ডাউনে ১৮টি ম্যাচ খেলে সাকিবের গড় ৫১।
Advertisement
হঠাৎ কি এমন ঘটলো যে সাকিব তিন নম্বরে খেলতে শুরু করলেন এবং সেই পজিসনে বিশ্বকাপের মত জায়গায় পরপর তিন ম্যাচে তিন তিনটি বিগ ইনিংসও (৭৪, ৬৭ ও ১২১) খেলে ফেললেন। আজ (শনিবার) ইংল্যান্ডের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করে প্রেস মিটে এসে সেই মিডল অর্ডার থেকে তিন নম্বর ব্যাটম্যানে রুপান্তরের গল্প শোনালেন সাকিব।
খেলা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রশ্ন উঠল, আপনি এই তিন নম্বর পজিসনটা কতটা উপভোগ করছেন? আর এই তিন নম্বরে উঠে আসার পিছনের কাহিনীই বা কি? সাকিব জানালেন, সিদ্ধান্তটা তার নিজের। তবে এ সিদ্ধান্তটা মোটেই সহজ ছিলনা। এতে বড়সড় ঝুঁকি ছিল। কারণ একটু খারাপ করলেও হয়ত আবার তাকে পাঁচ বা ছয় নম্বরে ফিরে যেতে হতো।
হল ভর্তি দেশি বিদেশি সাংবাদিকের সামনে সাকিব বলে ওঠেন, ‘আসলে তিনে খেলতে গিয়ে আমার অনেককেই বুঝিয়ে সুঝিয়ে খেলতে হয়েছে। কারণ আমি জানতাম একটি বা দুটি ম্যাচ ব্যর্থ হলে, রান করতে না পারলে আবার আমাকে পঁচে পাঠিয়ে দেয়া হতো। আমি সেই চ্যালেঞ্জটি নিয়েছিলাম এবং এখন মোটামুটি এনজয় করছি।’
সাকিব যে কোন পজিসনেই নিজেকে মানিয়ে নিতে পারেন। ঐ জায়গাটা উপভোগ করেন। তার প্রমাণ বিশ্বকাপের মাঠে তিন তিনটি বড় দল ও কঠিন বোলিং শক্তি দক্ষিণ আফ্রিকা, নিউজিল্যান্ড আর ইংল্যান্ডের বিপক্ষে পর পর দুটি হাফ সেঞ্চুুরি এবং একটি সেঞ্চুরি।
Advertisement
এআরবি/এসএএস