জাতীয়

যানজটবিহীন রাজধানীতে ফিরছে মানুষ

ঈদুল ফিতরের ছুটি শেষ হয়ে গেলেও যানজটের শহর ঢাকা এখনও অনেকটাই ফাঁকা রয়েছে। রাজধানীর হোটেল, রেস্টুরেন্ট, শপিংমলসহ বিভিন্ন দোকানপাট এখনও বন্ধ। গণপরিবহনের সংখ্যাও তুলনামূলক কম। মানুষের চলাচল এখানেও সীমিত। জনবহুল রাজধানীর এখন অনেকটা জনশূন্য।

Advertisement

এদিকে ঈদে নাড়ির টানে ঘরে ফেরা মানুষগুলো আবার ঢাকায় আসতে শুরু করেছেন। ঈদের ছুটি শেষে শনিবার থেকেই অনেক বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চালু হয়েছে। সরকারি-আধা সরকারি অফিস খুলবে আগামীকাল (৯ জুন)। কম-বেশি কর্মচারীর উপস্থিতি থাকবে আগামীকাল (রোববার) সকালে। তবে, রাজধানী পুরনো চেহারায় ফিরে আসতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে বলে মনে করছেন অনেকে।

ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানজটে আটকে থাকা রাজধানী ঢাকা এখনও অনেকটাই ফাঁকা। কোথাও যানজট নেই, নেই আটকে থাকার বিড়ম্বনা। অল্প সময়ের মধ্যেই রাজধানীর যে কোনো গন্তব্যে পৌঁছানো যাচ্ছে। ফুটপাতগুলোতে নেই দোকান পাট। রাস্তার মোড়ে মোড়ে নেইরিক্সার জটলা। এমন কী অনেকন দোকানপাটও বন্ধ। চিরচেনা রাজধানী এখন অনেকটাই অচেনা।

অবশ্য এ চিত্র বেশি দিন থাকবে না। ইতোমধ্যে রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছে মানুষ। নাড়ির টানে ঢাকা ছেড়ে যাওয়া, আবার রুজি-রোজগারের টানে ঢাকায় ফিরে আসা। নগরীর বাস, লঞ্চ টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে তাই ঢাকা ফেরত মানুষের ভিড়। যদিও ট্রেনে তুলনামূলক ভিড় কম।

Advertisement

বিমানবন্দর রেলওয়ে স্টেশনের নিরাপত্তারক্ষী আবুল হোসেন জাগো নিউজকে বলেন, মানুষ ঢাকা আসতে শুরু করেছে। স্টেশনে ভিড় বেড়েছে। তাই নিরাপত্তা জোরদার করেছি। আগামী এক সপ্তাহ ভিড় থাকবে বলে তিনি মনে করেন।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনে সিরাজগঞ্জ থেকে ঢাকায় ফেরা আজাহার আলী জাগো নিউজকে বলেন, ঢাকায় কাজের জন্য দ্রুত চলে এলাম।

নরসিংদী থেকে আসা বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরেছি। কাল থেকে অফিস করব। ঢাকা আসতে ট্রেন কিছুটা সময় নিয়েছে। স্টেশনের কুলি ওমর বলেন, ‘আজ ভিড় বেড়েছে। গত দুইদিন স্টেশন প্রায় ফাঁকা ছিল।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের সরকারি ছুটি শেষ হলেও পরের দুইদিন শুক্র ও শনিবার সাপ্তাহিক ছুটি। তাই ঢাকায় ফেরা মানুষের চাপ বাড়বে ৯-১০ তারিখের (জুন) দিকে।

Advertisement

শনিবার দুপুর ১টা থেকে বিমানবন্দর ঘুরে এমন চিত্র দেখা যায় রাজশাহী থেকে ঢাকায় ফিরেছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকতা মো. আমির হামজা। এ সময় তার সঙ্গে পরিবারের অন্যান্য সদস্যরাও ছিলেন।

জাগো নিউজকে তিনি বলেন, রোববার থেকে সড়কে অনেক জ্যাম (যানজট) থাকবে। তাছাড়া অফিসও খুলবে। এ কারণে ভোগান্তিহীন যাত্রার জন্য তাড়াতাড়ি ঈদের ছুটি শেষ করে ঢাকা ফিরলাম।

ময়মনসিংহ থেকে আসা সেলিনা আক্তার বলেন, ঈদের ছুটি শেষ করে ফিরলাম। স্বজনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করে ফিরছি। পরিবহনের জ্যাম, টিকিট না পাওয়ার ঝামেলা এড়ানোর জন্য আগেই চলে আসা।

স্টেশন ঘুরে দেখা যায়, দেশের উত্তরাঞ্চলসহ বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন। হয়রানি ও ভোগান্তি এড়াতে কেউ কেউ পরিবারের সদস্যদের ঈদের আগেই বাড়ি পাঠিয়ে দেন। তারা আবারও ঈদের ছুটি শেষে ঢাকায় ফিরছেন। তবে ৯-১০ জুনের দিকে পুরোদমে ফিরবে মানুষ।

বিমানবন্দর রেলস্টেশনের এক কর্মচারী বলেন, এবারের ঈদে ৯ দিন ছুটি ছিল। ইতোমধ্যে কেউ কেউ ফিরলেও অনেকেই বাড়ি রয়ে গেছেন।

‘এবারের ঈদযাত্রায় যাত্রীরা অনেকটা ঝামেলা ছাড়াই পরিবার-স্বজনদের নিয়ে বাড়ি গেছেন। অনেকে আবার বাবা-মা, ভাই-বোনকে আগে পাঠিয়ে দিয়েছেন। ফেরার ক্ষেত্রেও একই পন্থা অবলম্বন করছেন তারা।’

তিনি বলেন, আগামী ৯ তারিখ থেকে লোকজন পুরোদমে ঢাকায় ফিরতে শুরু করবেন। তখন ঈদের ছুটি শেষে ঢাকামুখী মানুষের চাপ থাকবে।

এফএইচ/এমএমজেড/এমএস