পাসপোর্ট না দেখেই বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের পাইলট ফজল মাহমুদকে কাতারে যাওয়ার অনুমতি দেয়ায় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ইমিগ্রেশন পুলিশের সাব ইন্সপেক্টর (এসআই) কামরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
Advertisement
শনিবার (৮ জুন) তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। বিমানবন্দর ইমিগ্রেশনের অতিরিক্ত বিশেষ পুলিশ সুপার মো. ইসমাইল হোসেন বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, বিমানের জেনারেল ডিক্লারেশন (জিডি) দেখেই ইমিগ্রেশন করা হয়। এ সময় পাসপোর্ট প্রুভ হিসেবে দেখা হয়। এখানে দুই জনেরই সমান দায়বদ্ধতা রয়েছে। তাই ইতোমধ্যে ইমিগ্রেশনের দায়িত্বে থাকা এসআই কামরুজ্জামানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে।
অন্যদিকে শনিবার দুপুরে র্যাব সদর দফতরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, ‘আমরা জানতে পেরেছি, পাইলট ভুল করে পাসপোর্ট নেননি।’
Advertisement
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘হয়তো এটা ভুলবশত হয়ে গেছে। তবে এ ধরনের ভুল হওয়া উচিত নয়। পাইলট বিমানবন্দরের সব আনুষ্ঠানিকতা পালন করলে ইমিগ্রেশন অফিসার যখন তাকে জিজ্ঞেস করেন পাসপোর্ট আছে কি না, সে হ্যাঁ বলে চলে গেছেন। ইমিগ্রেশন অফিসারের উচিৎ ছিল পাসপোর্ট চেক করা। শুনেছি পুলিশ প্রধান ওই এসআইকে সাময়িক বরখাস্ত করেছেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমি বলব, এটি প্রধানমন্ত্রীর বিমান, তাই এ ভুল করাটা পাইলটের উচিত হয়নি। ইমিগ্রেশন পুলিশেরও উচিত ছিল পাসপোর্ট দেখা। এমন গাফিলতির কারণেই তাকে বরখাস্ত করা হয়েছে। আমরা তদন্ত করছি। তদন্তের পর বিস্তারিত জানা যাবে।’
শুক্রবার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ এ বিষয়ে চার সদস্যের একটি আন্তঃমন্ত্রণালয় তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। ওই কমিটিতে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ ছাড়াও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এবং বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধি রয়েছেন। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।
পরে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও একটি চার সদস্যের কমিটি গঠন করে। তদন্ত করে সাত দিনের মধ্যে সুরক্ষা সেবা বিভাগের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে কমিটিকে।
Advertisement
উল্লেখ্য, ফিনল্যান্ড সফররত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আনতে গত বুধবার (৫ জুন) রাতে বিমানের একটি ফ্লাইটে কাতারের উদ্দেশে রওনা হন ক্যাপ্টেন ফজল মাহমুদ। কিন্তু পাসপোর্ট না থাকায় দোহা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিমানের স্টাফদের জন্য নির্ধারিত হোটেলে যেতে পারেননি তিনি। এরপর কাতার ইমিগ্রেশন কর্তৃপক্ষ তাকে আটক করেছে বলে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
তবে ফজল মাহমুদ দাবি করেন, তাকে আটক বা গ্রেফতার করা হয়নি। ভুলবশত সঙ্গে পাসপোর্ট না নেয়ায় তিনি বিমানবন্দরের ট্রানজিট হোটেল অরিক্সে ছিলেন। পরে রিজেন্ট এয়ারওয়েজের একটি ফ্লাইটে ঢাকা থেকে বৃহস্পতিবার (৬ জুন) তার পাসপোর্ট পাঠানো হয়। সেই পাসপোর্ট নিয়ে গতকাল সহজভাবে ইমিগ্রেশন পার হয়ে বিমান নির্ধারিত ক্রাউন প্লাজা হোটেলে গিয়ে ওঠেন তিনি।
আরএম/আরএমএম/এএইচ/এমএস